স্কুলের সামনে নিহতদের স্মরণ। বৃহস্পতিবার উভালডেতে। ছবি: রয়টার্স।
‘দাদু, আমার মা-বাবা কোথায়?’
‘তোমার দিদিকে খুঁজতে গিয়েছে।’
‘দিদি কোথায়? কখন ফিরবে?’
পাঁচ বছরের নাতনির এই প্রশ্নের কোনও জবাব দিতে পারেন না লুগো গার্সিয়া। তত ক্ষণে ছেলের ফোনে তিনি জেনে গিয়েছেন, রব এলিমেন্টারি স্কুলে ১৮ বছর বয়সি বন্দুকবাজের গুলিতে নিহতদের তালিকায় রয়েছে তাঁর আট বছরের নাতনি এলি-ও। ছোট নাতনি, খুদে লিসাকে কোন মুখে বলবেন সে কথা? যে দিদি তার খেলার নিত্যসঙ্গী, সে যে আর কখনও ফিরে আসবে না, তা কী করে বুঝে একরত্তি!
টেক্সাসের উভালডের স্কুলে হত্যাকাণ্ডের পরের দিন নিহতদের পরিবারের এমনই সব হৃদয়বিদারক ছবি শহর জুড়ে। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, এ বছরের প্রথম ১৪৫ দিনে আমেরিকায় গুলি চালানোর বিভিন্ন ঘটনায় অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে উভালডের ১৯ শিশুও। সর্বকনিষ্ঠ নিহতের বয়স ৮। বাবা-মা অত্যন্ত গর্বভরে বলতেন, তাঁদের ছেলে অত্যন্ত বুদ্ধিমান, তাই বয়সের তুলনায় দু’ক্লাস উঁচুতে পড়ে!
‘‘এই হত্যার দায় আপনাকেই নিতে হবে’’— বুধবার টেক্সাসের গভর্নরের উদ্দেশে এই তির্যক মন্তব্য ছুড়ে দেন ডেমোক্র্যাট দলের নেতা বিটো ও’রুর্কে। গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট তখন রব স্কুলের ঘটনার পরে জরুরিভিত্তিতে ডাকা প্রশাসনিক বৈঠকে বিবৃতি দিচ্ছিলেন। মুহূর্তে শোরগোল পড়ে যায়। উপস্থিত রিপাবলিকান নেতারা চেঁচাতে থাকেন, ‘‘এ ভাবে একটি মর্মান্তিক ঘটনার গায়ে আপনি রাজনীতির রং লাগাতে পারেন না।’’ তাতে অবশ্য থামানো যায়নি ও’রুর্কে-কে। বৈঠক ভেস্তে দিয়ে গভর্নর-সহ উপস্থিত রিপাবলিকান নেতাদের ক্রমাগত প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করে যান আগামী গভর্নর নির্বাচনের ডেমোক্র্যাট দলের এই প্রার্থী। শেষে নিরাপত্তা রক্ষীদের দিয়ে ও’রুর্কে-কে অডিটোরিয়াম থেকে বার করে দেন গভর্নর অ্যাবট। বাইরে সাংবাদিকদের রুর্কে বলেন, ‘‘কেন আমাদের দেশের এই অবস্থা? বিভিন্ন প্রদেশে,বিভিন্ন শহরে, বছরের পর বছর কি একই কাণ্ড ঘটে চলবে!’’
ডেমোক্র্যাট নেতার মতোই নিহতদের পরিজনের কথাতেও বেদনার সঙ্গে মিশে গিয়েছেক্রোধ। নিহত শিক্ষিকা ইরমাগার্সিয়ার স্বামীর প্রশ্ন, ‘‘আর কত দিন পরে, আরও কত কচি প্রাণ গেলে, দেশে অস্ত্র আইন পাল্টাবে? আদৌ পাল্টাবে কি? কখনও?’’
বন্দুক হাতে আততায়ীকে দেখে ৯১১ নম্বরে ফোন করেছিল আমেরি জো গার্জা। ওই নম্বরটি ইমার্জেন্সি সার্ভিসের। তার পরেই আমেরিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় সালভাদর র্যামোস। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে বছর দশেকের শিশুকন্যা।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy