প্রতীকী ছবি।
ভারতীয় জঙ্গিদের নির্মূল করতে এক সময় নাগাড়ে সেনা অভিযান চালাচ্ছিল মায়ানমার সেনা। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন মণিপুর লাগোয়া মায়ানমারের গ্রামগুলিতে পুরোপুরি সামরিক শাসন কায়েমে, সেই মেইতেই জঙ্গিদেরই নিজেদের উর্দি পরিয়ে জনতার বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে সে দেশের সেনাবাহিনী!
এ দিকে সেনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো গ্রামবাসীদের হাতে অস্ত্রের অভাব। তবে এই গ্রামগুলি কুকি জঙ্গিদের আশ্রয়স্থল। তাই আশ্রয়দাতাদের পাশে দাঁড়িয়ে, মায়ানমারের গ্রামবাসীদের হয়ে সেনার বিরুদ্ধে লড়তে নেমেছে মণিপুরেরই কুকি জঙ্গিরা।
মণিপুরে মেইতেই বনাম কুকিদের রেষারেষির ইতিহাস অনেক দিনের। অবশ্য রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম বেশ কিছু দিন হল বন্ধ। কিন্তু পড়শি দেশে সামরিক অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে কুকি বনাম মেইতেই লড়াই।
মায়ানমারে থাকা সাতটি মেইতেই সংগঠনের সদস্যসংখ্যা সাতশোর বেশি। সংগঠনগুলি তোলাবাজি চালায় মণিপুরে, কিন্তু থাকে মায়ানমারে। সে দেশে গণতান্ত্রিক সরকার আসার পরে ভারতীয় জঙ্গি ঘাঁটিগুলি ভেঙে দিতে চলছিল সামরিক অভিযান। এখন সেখানে শিবির চালাতে জুন্টাকে মাসে প্রচুর ডলার দিতে হচ্ছে। তাদের থেকে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি মায়ানমার সেনা সব সংগঠনকে নির্দেশ দিয়েছে, সেনার জন্য লড়তে প্রতিটি সংগঠনকে ৩০ জন সদস্য পাঠাতে হবে। তারা সেনার উর্দিতে লড়বে। সেনার চাপে মেইতেই সংগঠনের কয়েক জন জঙ্গি ভারতে পালিয়ে এসেছে। তাদের থেকেই এই পরিস্থিতির কথা জেনেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ২৪ মে সাতটি সংগঠনের ১৪ জন শীর্ষ নেতার সঙ্গে সামরিক কর্তাদের বৈঠকও হয়।
এ দিকে সীমান্তের দু’পারে থাকা কুকি জঙ্গিদের সব ক’টি সংগঠনই ভারতে সংঘর্ষবিরতিতে রয়েছে। তারা মায়ানমারে গণতন্ত্র ফেরানোর পক্ষে। কুকিরা মায়ানমার সরকারের কাছে জোমি গোষ্ঠীভুক্ত কুকি, ওয়া, পালাউং, লাহু ও পোয়া জনজাতিদের নিয়ে নাথালিট ও চিন্দউইন নদীর মধ্যবর্তী এলাকা জুড়ে পৃথক রাজ্য দাবি করেছে। আপাতত প্রতিরোধ বাহিনীর পাশে দাঁড়িয়ে সেনার বিরুদ্ধে লড়ছে তারা।
মণিপুর সীমান্তের ও-পারে, মায়ানমারের কাবাও উপত্যকার তামু পাবলিক ডিফেন্স ফোর্স ও কুকি জঙ্গি সংগঠনের দাবি, গত ১২ মে তামু শহরে মায়ানমার মিলিটারি কাউন্সিসের সঙ্গে তামু ডিফেন্স ফোর্সের লড়াইয়ে ১৫ জন সেনার মৃত্যু হয়েছিল। সেনাদের দেহ তল্লাশি করে পাওয়া পরিচয়পত্র অনুযায়ী তাদের মধ্যে চার জন কাথে বা মণিপুরি মেইতেই। খবর আসে আসাম রাইফেলস ও সেনাবাহিনীর কাছে। সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই চার মেইতেই আদতে মণিপুরি মেইতেই জঙ্গি দলের সদস্য। যদিও তাদের পরনে ছিল মায়ানমার সেনার পোশাক। সম্ভবত তামুতে ভারতীয় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালালে মায়ানমার সেনার প্রাণহানি হতে পারে আশঙ্কা করেই মিলিটারি কাউন্সিল এক জনজাতির ভারতীয় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অন্য জনজাতির ভারতীয় জঙ্গিদের লড়তে নামিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy