Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

সন্ত্রাসই ওদের নীতি, পাকিস্তানকে বেনজির আক্রমণে প্রধানমন্ত্রী

সন্ত্রাস কোনও কোনও দেশের রাষ্ট্রীয় নীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জি-২০ শীর্ষ বৈঠকের মঞ্চ থেকে পাকিস্তানকে আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-র সঙ্গে বৈঠকের আগে নরেন্দ্র মোদী। সোমবার হ্যাংঝাউয়ে । ছবি: পিটিআই

জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-র সঙ্গে বৈঠকের আগে নরেন্দ্র মোদী। সোমবার হ্যাংঝাউয়ে । ছবি: পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:২৮
Share: Save:

সন্ত্রাস কোনও কোনও দেশের রাষ্ট্রীয় নীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জি-২০ শীর্ষ বৈঠকের মঞ্চ থেকে পাকিস্তানকে আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

সরাসরি পাকিস্তানের নাম করেননি মোদী। তিনি বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার একটি দেশ সন্ত্রাস ছড়ানোয় পুরোপুরি মদত দেয়। সেই দেশ যে ভারতের পড়শি পাকিস্তান, সেটা বুঝতে অসুবিধা হয়নি কারও।

কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাক টানাপড়েন এখন তুঙ্গে। চলতি মাসেই রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার অধিবেশনে কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তান ঝড় তুলতে চাইবে বলে মনে করছে দিল্লি। বস্তুত, রাষ্ট্রপুঞ্জে সওয়াল করার জন্য ইতিমধ্যেই একটি বিশেষ প্রতিনিধি দল তৈরি করেছে ইসলামাবাদ। ফলে পাল্টা প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারতও। জি-২০ রাষ্ট্রগোষ্ঠীর মতো গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চে সন্ত্রাস প্রশ্নে পরোক্ষে পাকিস্তানকে বেঁধা সেই কৌশলেরই অঙ্গ, জানাচ্ছেন বিদেশ মন্ত্রকের কর্তারা।

জি-২০ বৈঠকের শেষ পর্বে আজ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘কিছু দেশ তাদের রাষ্ট্রযন্ত্রকে সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার কাজে ব্যবহার করাটাই নীতি করে ফেলেছে। দক্ষিণ এশিয়ার একটি দেশ সন্ত্রাসের এজেন্টদের ছড়িয়ে দিচ্ছে।’’ জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির কাছে তাঁর আর্জি, ‘‘বিশ্বের উচিত ঐক্যবদ্ধ ভাবে এই নাশকতার মোকাবিলা করা। সন্ত্রাসে মদত দিলে পুরস্কার নয়, বরং একঘরে করুন।’’

কিন্তু জি-২০ গোষ্ঠীতে তো পাকিস্তান নেই। তা হলে প্রধানমন্ত্রীর এই আক্রমণ মাঠে মারা গেল না কি? ভারতীয় কূটনীতিকদের দাবি, মোটেই না। কারণ, দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় পাকিস্তানকে এর আগেও বহু বার সতর্ক করা হয়েছে। সম্প্রতি সার্ক সম্মেলন উপলক্ষে ইসলামাবাদ গিয়েও তাদের কড়া কথা শুনিয়ে এসেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। এ বার শক্তিধর দেশগুলির সামনে পাকিস্তানের আসল ছবিটা তুলে ধরাই মুখ্য উদ্দেশ্য।

কূটনৈতিক মহলের একাংশের মতে, মোদীর লক্ষ্য আসলে চিন। এ বার জি-২০ সম্মেলনের আয়োজক দেশই পাকিস্তানের বড় ভরসা। সম্প্রতি ৪৬০০ কোটি ডলারের বেজিং-ইসলামাবাদ অর্থনৈতিক করিডরের ঘোষণা দিল্লির রক্তচাপ বাড়িয়েছে। এমনকী, রাষ্ট্রপুঞ্জে জইশ-ই-মহম্মদ নেতা মৌলানা মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ করার চেষ্টাও বেজিংয়ের বাধাতেই আটকে রয়েছে‌। তাই ‘সন্ত্রাসের মদতদাতাদের পুরস্কৃত করে লাভ নেই’ বলে চিনা কর্তাদেরই বার্তা দিতে চেয়েছেন মোদী।

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের মতে, এশিয়ায় চিনের আগ্রাসী মনোভাবের বিরুদ্ধে এককাট্টা হচ্ছে বিভিন্ন দেশ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নানা রাষ্ট্রকে নিয়ে চিন-বিরোধী অক্ষ তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে‌ দিল্লিও। এতে মদত রয়েছে আমেরিকার।

তবে কূটনীতিকদের মতে, কৌশলগত বা আর্থিক ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে চিনা মদতের তা-ও একটা ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। কিন্তু জইশের মতো জঙ্গি সংগঠনের নেতাকে নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বেজিং যে অবস্থান নিয়েছে, তা বিস্ময়কর। কারণ এখন আমেরিকা-সহ প্রায় গোটা বিশ্বই সন্ত্রাস প্রশ্নে পাকিস্তানের আচরণ নিয়ে সন্দিহান। এক কূটনীতিকের কথায়, ‘‘চিন নিজেও সন্ত্রাসের শিকার। উইগুর জঙ্গি গোষ্ঠী-সহ চিনের বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী সংগঠনকে নিকেশ করতে চায় বেজিং। কিন্তু ভারতের বিরোধিতা করতে গিয়ে পরোক্ষে পাকিস্তানি জঙ্গিদের সুবিধে করে দিচ্ছে তারা। এটা আগুন নিয়ে খেলার সামিল।’’

গত কাল চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর সঙ্গে বৈঠক করেছেন মোদী। সরকারি সূত্রে খবর, তখনও সন্ত্রাসের পাক মদতের বিষয়টি তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রপুঞ্জে জইশ নেতা মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে চিনের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

modi Terrorism G20
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy