ফাইল চিত্র।
একটি কালো পাথরের ফলক, তাতে খোদাই করা বহু নাম— আফগানিস্তানের গজ়নি প্রদেশের গভর্নরের বাসভবনের চত্বরে সেই ফলককে ঘিরে ভিড় জমিয়েছেন তালিব যোদ্ধারা। পাথরে খোদাই করা রয়েছে, আমেরিকার শাসনকালে ওই প্রদেশের দায়িত্বে যে যে সেনাকর্তারা ছিলেন, তাঁদের নাম। সঙ্গে সেনা আধিকারিকদের পদমর্যাদাও লেখা রয়েছে ওই পাথরে। সেই ফলকটিকেই জনসাধারণের প্রদর্শনের বন্দোবস্ত করেছে তালিবান। আমেরিকান সেনার মহিমা প্রচারের জন্য নয়, বরং ২০ বছরের দীর্ঘ লড়াইয়ের পরে আমেরিকান সেনা উৎখাতের প্রতীক তুলে ধরতেই এই প্রদর্শনের আয়োজন।
তালিবানের গজ়নির সাংস্কৃতিক শাখার প্রধান মোল্লা হাবিবুল্লা মুজাহিদ জানিয়েছেন, তাঁরা চান ওই পাথরের ফলকটি প্রদর্শনের মাধ্যমে আফগানবাসী, বিশ্ব এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানুক স্বঘোষিত পরাক্রমশালী আমেরিকান বাহিনীকে পরাজিত করেছেন তাঁরা।
দক্ষিণ কাবুলের ১৫০ কিলোমিটার দূরত্বে গজ়নি শহর তালিবান দখল করেছিল গত বছরের ১২ অগস্ট। ঠিক তিন দিন পরেই কাবুল দখলের সঙ্গে সঙ্গেই গোটা দেশে তালিবানের নিরঙ্কুশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
৩৫০০ বছরের নানা ঐতিহাসিক ঘটনায় সমৃদ্ধ এই গজ়নি। তবে প্রাচীন ইতিহাস নয়, মসনদ দখলের পরে নিজেদের বিজয়গাথার ইতিহাসকে সযত্নে তুলে ধরতেই আগ্রহী তালিবান নেতৃত্ব।
বর্তমানে চরম আর্থিক সঙ্কটের মুখে গোটা আফগানিস্তান। রাষ্ট্রপুঞ্জের হিসাব অনুযায়ী দেশের অর্ধেক মানুষই খাদ্যের অভাবে ধুঁকছেন। এই পরিস্থিতিতে সরকার বিরোধী মনোভাব যাতে মাথা চাড়া না দেয়, সেই কারণেই নিজেদের মহিমা প্রচারে তালিবানের এই কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে। শহরের বাইরে রাস্তার উপরেও তালিবানের এমনই বিজয়-ফলক তুলে ধরা হয়েছে। কোথাও কোথাও আমেরিকান সেনার ব্যবহৃত পরিত্যক্ত গাড়িও প্রদর্শন করা হচ্ছে। যদিও অস্ত্রশস্ত্র সব সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু গাড়ি নয়, গত দু’দশকে আমেরিকান সেনার ব্যবহৃত এমন বহু দ্রব্যই গোটা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এর আগে সোভিয়েত ইউনিয়নকেও রুখে দিয়েছিল তালিবান। সেই সময়ে সোভিয়েতের ফেলে যাওয়া ট্যাঙ্কে চড়ে এখন খেলা করে শিশুরা। তারও আগে ব্রিটিশদের হাত থেকে মুক্তির ইতিহাসও তুলে ধরতে মরিয়া তালিবান।
১৮ বছরের তালিব যোদ্ধা ওজ়েইর-এর কথায়, ‘‘বিজয়ের চিহ্ন হিসাবে এগুলো দেখলে গর্ব অনুভব করি। তিন তিনটি বিদেশি শক্তিকে পর্যুদস্ত করে স্বাধীনতা পেয়েছি আমরা। আমরা দেখাতে চাই, আমেরিকাকেও পরাজিত করার শক্তি রাখে আফগানরা।’’
অগস্টে তালিবান দেশের দখল নেওয়ার পরে বহু অস্ত্র, গাড়ি, পোশাক ফেলে গিয়েছে আমেরিকান সেনা। সবটা অবশ্য এখনও প্রদর্শনের ব্যবস্থা করে উঠতে পারেনি তালিবান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy