Advertisement
E-Paper

Taliban: কথা আর কাজের মধ্যে ফারাক বিস্তর, যে কোনও মুহূর্তে শুরু হতে পারে তালিবানি তাণ্ডব

দু’দশক আগের তালিবান শাসনের থেকে এ বারের নয়া জমানা যে ‘আলাদা’ হতে চলেছে, তা বোঝানোর চেষ্টা তালিব নেতৃত্বের তরফে কম নেই।

সুরক্ষিত থাক তাঁদের অধিকার। এই দাবি নিয়ে কাবুলের পথে মেয়েরা। বুধবার।

সুরক্ষিত থাক তাঁদের অধিকার। এই দাবি নিয়ে কাবুলের পথে মেয়েরা। বুধবার। ছবি রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২১ ০৬:৩৮
Share
Save

প্রতিশ্রুতি অঢেল। কিন্তু অভিযোগ, কথা আর কাজ মিলছে না। ফলে প্রশ্ন, তবে কি আন্তর্জাতিক আঙিনায় ভাবমূর্তি মেরামতের লক্ষ্যে এ সবই নিছক ‘কথার কথা’? আফগানিস্তানে তালিবানি শাসন ফিরতেই মেয়েদের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে সারা বিশ্ব। আফগান মুলুকে নতুন শাসকদের আশ্বাসেও তা যাচ্ছে না। বরং ক্রমশ আরও দানা বাঁধছে তালিবানি তাণ্ডব শুরুর ইঙ্গিতে।

ক্ষমতা পুনর্দখলের পরে মঙ্গলবার রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে নিজেদের নীতির কথা ঘোষণা করেছে তালিবান। তারা বলেছে, সবাইকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। সকলে যেন নিজের কাজে যোগ দেন। বলেছে, বোরখাই পরতে হবে, এমন নয়। মেয়েদের হিজাব পরলেও চলবে। অথচ মঙ্গলবারই বোরখা না পরার ‘অপরাধে’ হত্যা করা হয়েছে তখড় প্রদেশের এক মহিলাকে। তারও আগে আটক করা হয়েছে, বল্‌খ প্রদেশের প্রাক্তন মহিলা গভর্নর সালিমা মাজ়ারিকে। সালিমা তালিবানের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিলেন। তাঁকে ‘ক্ষমা’ করে ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা কিন্তু শোনা যায়নি।

দু’দশক আগের তালিবান শাসনের থেকে এ বারের নয়া জমানা যে ‘আলাদা’ হতে চলেছে, তা বোঝানোর চেষ্টা তালিব নেতৃত্বের তরফে কম নেই। চিন যে ভাবে তালিবান শাসন ‘অহিংস পথে’ চলবে বলে আশা ব্যক্ত করেছে, রাশিয়া যে ভাবে কাবুলের পরিস্থিতি ‘স্থিতিশীল’ বলে দাবি করেছে, তালিবান নেতৃত্ব আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় তার ‘সত্যতা’ তুলে ধরতে চায়। অতএব তারা বারবার বলে চলেছে, মহিলাদের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। তাঁরা কাজকর্ম চালিয়ে যেতে পারবেন। কাউকে খুন করা হবে না। মহিলারা চাইলে প্রশাসনে, সরকারেও যোগ দিতে পারেন! তবে সবই করতে হবে, শরিয়ত মেনে। ইসলামি অনুশাসনের পরিধির মধ্যেই মহিলাদের অধিকার মান্যতা পাবে।

মুখে বলার পাশাপাশি দৃষ্টান্ত হাজির করার চেষ্টাও রয়েছে মজুত। যেমন, দেশের অন্যতম প্রধান টিভি চ্যানেল টোলো নিউজ়ে ফিরে এসেছেন মহিলা সঞ্চালক। তাঁকে তালিব নেতার সাক্ষাৎকার নিতে দেখা গিয়েছে। কাবুলের রাস্তায় মহিলাদের নিজেদের অধিকারের দাবিতে সরব হওয়ার ভিডিয়ো ভাইরাল। কিন্তু ভিডিয়োয় এ-ও দেখা যাচ্ছে, হাতে লেখা পোস্টার নিয়ে দাঁড়ানো ওই চার মহিলাকে আশপাশ থেকে ঘিরে রয়েছে সশস্ত্র তালিবান। সুতরাং পশ্চিমি দুনিয়ার সামনে নিজেদের ‘উদার মুখ’ তুলে ধরার স্বার্থে তালিবানের তরফেই এমন ভিডিয়ো প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে কি না, সে প্রশ্নও উঠে যাচ্ছে।

ঘুরে বেড়াচ্ছে আর এক ভিডিয়ো। তিন তালিবান নেতার সঙ্গে এক মহিলা সাংবাদিকের প্রশ্নোত্তরের। জিজ্ঞাসা ছিল, গণতান্ত্রিক সরকার মানবেন, যেখানে মেয়েরা ভোটে দাঁড়াতে পারেন? প্রশ্ন শুনে শাসক-জঙ্গি হেসে কুটিপাটি। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের নাছোড় প্রশ্নের মুখে আর এক তালিব স্বীকার করে ফেলছে, হিজাব যথেষ্ট নয়, মুখ ঢাকতে হবে মেয়েদের। প্রশ্নগুলো আরও ধারালো হয়ে যাচ্ছে কাবুলের চৌহদ্দির বাইরের ঘটনাবলিতে নজর রাখলেই। জলালাবাদে তারা ফের মারমুখী। তখড় প্রদেশের এক মহিলাকে যে ভাবে বোরখা না পরার জন্য খুন হতে হয়েছে, প্রাক্তন গভর্নর সালিমার খবর জানানোর ব্যাপারে যে ভাবে নীরব তালিবান, তাতে ভরসা পাচ্ছেন না বেশির ভাগ মানুষ। শেষ মুহূর্ত অবধি লড়ে গিয়েছিলেন সালিমা। গত বছর ১০০ তালিব জঙ্গিকে আত্মসমর্পণ করিয়েছিলেন। ধরা পড়ার পরে তাঁর কী হল, জানা যায়নি।

কাবুল বিমানবন্দরে হুড়োহুড়ি দেখলে যে ভাবে মারধর চালানো হচ্ছে, তা থেকে বাদ যাচ্ছেন না মহিলা-শিশুরা। ক’দিন আগেই চটিতে পা দেখা যাচ্ছিল বলে মার খেলেন যে মহিলা, ফরিয়াব প্রদেশে চার সন্তানের জননীকে যে ভাবে পিটিয়ে মারা হল গত মাসে, বলখ প্রদেশে এ মাসের গোড়ায় পোশাক ‘ভাল নয়’ বলে খুন হলেন যে যুবতী— সেই সব ঘটনাও চোখের সামনে রয়েছে। অনেকেরই তাই আশঙ্কা, তালিবান মুখে যা-ই বলুক, কিছু দিন গেলে তারা স্বমূর্তি ধরবে আগের মতোই। ইতিমধ্যেই যার ইঙ্গিত মিলতে শুরু করেছে বলে স্থানীয়দের অনেকের দাবি।

Afghanistan taliban Women Rights Kabul

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}