ছবি: রয়টার্স
সরকারে আফগান মহিলাদের অংশগ্রহণ করতে আহ্বান জানাল তালিবান। তালিবানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এখন বিরোধীদের ক্ষমা করার রাস্তাতেই হাঁটবে তারা। তাই অকারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হওয়ার কোনও মানে হয় না। শান্তি বজায় রাখার বার্তাও দেওয়া হয়েছে মঙ্গলবার। পাশাপাশি, মহিলাদেরও সরকারে অংশগ্রহণের জন্য নতুন করে আহ্বান জানানো হয়েছে তালিবানের তরফ থেকে।
সংবাদমাধ্যমকে তালিবান সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রধান এমানুল্লাহ সামাগনি বলেছেন, ‘‘নয়া তালিবানি শাসনে মহিলাদের উপর অত্যাচার চলুক, আমরা চাই না। সব কিছু পরিচালিত হয় শরিয়তের আইন অনুসারে। তার মধ্যে থেকে যদি মহিলারা প্রশাসন ও সরকারে অংশ নিতে চান তাঁদের স্বাগত। আমরা সমস্ত বৃত্তের প্রতিনিধিকে প্রশাসনে চাইছি।’’ এর পাশপাশি তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, পুরোপুরি শরিয়তের আইন মেনে এই দেশ চলবে। তবে নিয়মের খসড়া এখনও তৈরি হয়নি। মহিলাদের কী মেনে চলতে হবে, তা নিয়েও স্পষ্ট কোনও নিয়ম তৈরি হয়নি।
রবিবার তালিবান আফগানিস্তান দখল নেওয়ার পর থেকে মহিলাদের পরিস্থিতি নিয়ে বারবার উদ্বেগের কথা উঠে এসেছে। নোবেল জয়ী মালালা ইসুফজাই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নারী স্বাধীনতা নিয়ে। আফগান প্রশাসনিক পদে থাকা বা মহিলা খ্যাতনামী ছাড়াও উদ্বেগে কেটেছে সাধারণ মানুষেরও। মহিলাদের মনে হয়েছে, আবার ফিরবে সেই অত্যাচারের দিন। যদিও কোনও ভয়ের কারণ দেখছে না তালিবান। তারা বলেছেন, পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে। নারীর অধিকার সুরক্ষিত হবে।
কিন্তু সত্যিই কি নতুন এক তালিবানি শাসন দেখতে চলেছে আফগানিস্তান? শেষ কয়েকদিন ধরে, একের পর এক প্রদেশ দখল করে যখন তালিবান ক্রমে কাবুলের দিকে এগিয়ে আসছিল, তখনকার ঘটনা বা ক্ষমতা দখলের পরের একাধিক ঘটনা কিন্তু খুব একটা আশাপ্রদ নয়। খবর এসেছিল, জঙ্গিরা মহিলাদের জোর করে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। সে অভিযোগ অস্বীকার করেছিল জঙ্গি গোষ্ঠী। ক্ষমতা দখলের পর এমন খবরও পাওয়া গিয়েছিল যে ব্যাঙ্কের মহিলা কর্মীদের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে জঙ্গিরা। বলেছে, বাড়ির পুরুষ কর্মী থাকলে তাকে কাজে পাঠাতে। প্রশাসনিক পদে থাকা আফগান মহিলারাও বলছেন, প্রতি মুহূর্ত আতঙ্কে কাটছে তাঁদের। তার মধ্যেই তালিবানদের ঘোষণা পরিবর্তিত ‘তালিবানি’ শাসনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে তা বাস্তবে কতটা কার্যকর হবে, তা দেখা যাবে ভবিষ্যতেই। কারণ, মহিলাদের সরকার ও প্রশাসনে অংশ নিতে বলার পাশাপাশিও শরিয়ত আইনের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। সেই আইন মেনে কতটা মহিলাদের অংশগ্রহণ সম্ভব, তা নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy