আবু বকর আল বাগদাদি। —ফাইল চিত্র
আইএস জঙ্গি প্রধান আবু বকর আল বাগদাদির মৃত্যুর পর মাত্র কয়েকটা দিন কেটেছে। এর মধ্যেই উঠে আসছে ওই জঙ্গি নেতার বিরুদ্ধে মার্কিন বাহিনীর অভিযানের প্রস্তুতির নানা কাহিনি। সিরিয়ার কুর্দ বাহিনীর এক পরামর্শ দাতা দাবি করেছেন, বাগদাদির পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হতে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আগেই তার অন্তর্বাস চুরি করা হয়েছিল।
গোটা বিশ্বের ত্রাস আবু বকর আল বাগদাদি। আর তার বিরুদ্ধেই গোপন অভিযান। এমন একটা টপ সিক্রেট অভিযান সফল করতে শুধু উপযুক্ত প্রশিক্ষিত বাহিনীই নয়, প্রয়োজন ছিল বাগদাদি সম্পর্কে নানা তথ্য সংগ্রহের জন্য কুশলী গুপ্তচরদেরও। এই সফল অভিযানের পর তেমনই এক জন গুপ্তচরের কথা তুলে ধরেছেন কুর্দদের নেতৃত্বে থাকা সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেসের (এসডিএফ) পরামর্শ দাতা পোলাট ক্যান। তবে সেই গুপ্তচরের পরিচয় প্রকাশ্যে আনেননি তিনি। অভিযানের আগে বাগদাদি সম্পর্কে গুপ্তচররা কী কী তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছিল তার উদাহরণও দিয়েছেন তিনি। আর তাতে প্রমাণ হচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরেই বাগদাদির বিরুদ্ধে অপারেশনের প্রস্তুতি নিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘বাগদাদির খোঁজ পেতে এবং তাকে খুব কাছ থেকে নজরে রাখার জন্য আমরা গত ১৫ মে থেকে সিআইএ-র সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করছিলাম। আল বাগদাদিও ঘন ঘন নিজের আস্তানা বদল করছিল।’
উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার ইডলিবের পাণ্ডববর্জিত এলাকা বারিশা গ্রাম। সেখানেই শেষ বারের মতো ডেরা বেঁধেছিল আইএস জঙ্গি প্রধান। পোলাট ক্যানের দাবি, যেখানে বাগদাদি আস্তানা গাড়ছিল সেখানে তার নিত্য ব্যবহার্য জিনিসও পৌঁছে দিচ্ছিল তার সাঙ্গোপাঙ্গরা। এর পরই বারিশার ‘ব্যোমকেশ’-এর কীর্তি তুলে ধরেছেন ক্যান। টুইটে লিখেছেন, ‘আমাদের গুপ্তচররা যারা বাগদাদির কাছাকাছি পৌঁছতে সক্ষম ছিল, তারা ওর অন্তর্বাস চুরি করে। যাতে করে বাগদাদির পরিচয় সম্পর্কে একশো শতাংশ নিশ্চিত হওয়া যায়।’ মার্কিন অভিযানে কোণঠাসা হয়ে সু়ডঙ্গের ভিতর সুইসাইড ভেস্ট (বোমা বাঁধা পোশাক)-এর মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটায় বাগদাদি। তার দেহাংশের ডিএনএ পরীক্ষা করে পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয় মার্কিন বাহিনী। ক্যানের টুইটের পর প্রকাশ্যে এসেছে, কীভাবে বাগদাদির ডিএনএ-র রেকর্ড আগেই পৌঁছে গিয়েছিল সিআইএ-র হাতে।
আরও পড়ুন: এক ঘণ্টার অপারেশন বাগদাদি শেষ সুড়ঙ্গের প্রান্তে, কী ভাবে চলল মার্কিন সেনার অভিযান
আরও পড়ুন: আশি ঘণ্টার লড়াই শেষ, সব চেষ্টা ব্যর্থ, সুড়ঙ্গেই মৃত্যু দু’বছরের সুজিতের
ইডলিবের বারিশা গ্রামে মার্কিন বাহিনীর অভিযানের সাফল্যের পিছনে যে আসলে এসডিএফ-এর গোয়েন্দাদের হাত রয়েছে তাও স্বীকার করেছেন পোলাট ক্যান। তবে সাম্প্রতিক কালে কুর্দদের উপর তুরস্কের হামলার জেরে অভিযান পিছিয়ে যায বলেও দাবি করেছেন তিনি। ক্যানের কথায় ‘আমাদের গোয়েন্দারা বাগদাদি সম্পর্কে নানা খবরাখবর পাঠাচ্ছিল। কোথায় এয়ারড্রপ হবে সে তথ্যও দিয়েছিল। গোটা অপারেশন সফল করতে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তারা কাজ করেছিল।’ অভিযানে কুর্দদের সাফল্যের কথা আগেই স্বীকার করে নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। বিশ্বের মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গির মৃত্যু সংবাদ ঘোষণার সময়েই সিরিয়ার কুর্দ বাহিনীকে ধন্যবাদ জানান তিনি। বলেন, ‘‘তারা (সিরিয়ার কুর্দ বাহিনী) আমাদের বেশ কিছু সাহায্য করেছে।’’ সেই সঙ্গে তুরস্ক, ইরাক, সিরিয়া ও রাশিয়া সরকারকেও ধন্যবাদ জানান তিনি।
২০১৪ সালে নিজেকে ‘খলিফা’ হিসাবে ঘোষণা করে আবু বকর আল বাগদাদি। সেই সময় থেকেই আইএস জঙ্গি প্রধানকে হন্যে হয়ে খুঁজছিল মার্কিন বাহিনী ও সিআইএ। বাগদাদি সম্পর্কে খোঁজ খবর পেতে গত পাঁচ বছর ধরে বিভিন্ন শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ইনটেলিজেন্স নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছিল সিআইএ। তারই সাফল্য পেয়েছে পেন্টাগন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy