স্ত্রী অঞ্জলির সঙ্গে সুন্দর পিচাই। ফাইল চিত্র
গুগলে চাকরি শুরু ২০০৪-এ। তার পরে ডাক এসেছে বিভিন্ন সংস্থা থেকেই। অঞ্জলি বলেছিলেন, ‘‘গুগলেই থেকে যাও।’’ স্ত্রীর কথাটা মনে ধরেছিল। আজ তিনি গুগল-মইয়ের শেষ ধাপটি পেরিয়ে, তারও উপরে। গুগল ও তার পরিবারের বাকি সব সংস্থার মালিক যে সংস্থাটি, সেই অ্যালফাবেটের সিইও হলেন তিনি। একই সঙ্গে থাকছেন গুগলেরও সিইও।
সুন্দর পিচাই। খড়্গপুর আইআইটিতে মেটালার্জি নিয়ে ভর্তি হয়ে প্রথম বছরেই আলাপ অঞ্জলি হরিয়ানির সঙ্গে। তার পরে বিয়ে। এক ছেলে, এক মেয়ে, কাব্য ও কিরণ। তৃপ্তির হাসি নিয়ে অঞ্জলি এখন বলতেই পারেন, আমি কিন্তু বলেছিলাম...!
ছিলেন গুগলের প্রোডাক্ট চিফ। ২০১৫-সালের অক্টোবরে তৈরি হয় গুগল পরিবারের মালিক সংস্থা অ্যালফাবেট। তার সিইও হওয়ার আগে ১০ অগস্ট গুগলের সিইও-র পদ থেকে সরে দাঁড়ান এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ। সুন্দর হন গুগলের সিইও। এ বার অ্যালফাবেটের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন গুগলের আর এক প্রতিষ্ঠাতা সের্গে ব্রিন। ওই পদটি আর থাকছে না। আর এর সিইও পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন পেজ। সংস্থা পরিচলনার ভার তুলে দিলেন সুন্দরের হাতে। পেজ ও ব্রিন চিঠিতে তাঁকে জানিয়েছেন, অ্যালফাবেট মোটামুটি দাঁড়িয়ে গিয়েছে। তাঁরা আর সংস্থা পরিচালনার কাজকর্মে জড়িয়ে থাকতে চান না। গুগলের দুই স্রষ্টা এখন তাঁদের পছন্দের কাজেই মন দিতে চান। অ্যালফাবেটের সংস্থাগুলির পারস্পরিক বিন্যাস ও কাঠামো নতুন করে সাজিয়ে সহজ-সরল করে তুলবেন, সুন্দরের কাছে এটাই আশা করছেন পেজ ও ব্রিন।
সিইও পদ থেকে সরে গেলেও সংস্থা পরিচালনার ক্ষেত্রে ২৬.১ শতাংশ ভোটাধিকার থাকছে পেজের। সের্গের থাকছে ২৫.২৫ শতাংশ ভোটাধিকার। অ্যালফাবেটে সুন্দরের মতদানের অধিকার হবে ১ শতাংশের কম। টুইট করে সুন্দর জানিয়েছেন, তিনি উত্তেজিত। প্রযুক্তি দিয়ে বিশাল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা তাঁর বরাবরের স্বপ্ন। দায়িত্বের নতুন পাহাড়ে সেই কাজটিই করে দেখাতে হবে তাঁকে।
সুন্দরকে ঘিরে প্রচুর কৌতূহল মানুষের। কী ভাবে তিনি গুগলের সিইও হয়েছিলেন? কী ভাবে এমন উত্থানের পরে উত্থান? বেতন কত? তিনি কি পড়াশোনার ক্ষেত্রে সংরক্ষণের সুযোগ পেয়েছেন? তিনি কি ব্রাহ্মণ? সুন্দরেরই ভাবনায় গড়া গুগল ক্রোম নিরন্তর উত্তর জুগিয়ে চলেছে এ সব প্রশ্নের। জানাচ্ছে পড়াশোনা বা চাকরি, কোথাও সংরক্ষণের সুযোগ পাননি। ঘনিষ্ঠরা বলছেন সফল মানুষটির সাদামাঠা জীবনের কথা। নিজেও বলেছেন সে কথা। মাদুরাইয়ে মধ্যবিত্ত পরিবারের সাধারণ বাড়িতে বেড়ে ওঠার কথা। শুনিয়েছেন সে সময়ে খরা নিয়ে তাঁর দুশ্চিন্তার কথা। মেঝেয় বিছানা পেতে বালিশের পাশে জলের বোতল নিয়ে শোওয়ার গল্প। যে দিন ফ্রিজ এল বাড়িতে, সে ছিল এক বিশাল ঘটনা।
সব পরীক্ষায় প্রথম সারিতে থাকলেও, খড়্গপুর আইআইটি এক বার ‘গ্রেড সি’ দিয়েছিল তাঁকে। দক্ষিণি তামিল ব্রাহ্মণ পরিবারের ছেলেটি তখন হিন্দি নিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলেন। দাবা খেলতে ভালবাসেন। তবে পড়ার নেশা ছোটবেলা থেকেই। যা পান পড়ে ফেলেন। নতুন নতুন ফোন ব্যবহারের নেশাটা হয়েছে পরে। এখনও অনেকগুলি ফোন ব্যবহার করেন। এক-এক কাজে এক-একটা। বিনীত ভাবে বলে থাকেন, খুব সকালে ওঠা হয় না। ৬টা-৭টা বেজে যায়। সকাল শুরু হয় চা, ওমলেট আর টোস্ট দিয়ে। মিষ্টি তেমন পছন্দ নয় বলে পায়েসেও সম্বর মিশিয়ে খেয়ে নেন। জিমে যান সন্ধেয়। তবে নিয়মিত নয়। তবে হাঁটেন বিস্তর। অনেক বৈঠকই সারেন দ্রুত পায়ে হাঁটতে হাঁটতে। হাঁটার জন্য ৪৭ বছরের তরুণটির সামনে এখন অ্যালফাবেটের নতুন দিগন্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy