প্রতীকী ছবি।
এখনও পর্যন্ত করোনাভাইরাস গবেষণায় যা উঠেছে তাতে এটা প্রায় নিশ্চিত যে, কো-মর্বিডিটি বা অন্য কোনও অসুস্থতা না থাকলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সম্ভাবনা খুবই কম। কো-মর্বিডিটি থাকলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছেন করোনা আক্রান্তরা। এ বার সেই সঙ্কটজনক রোগীদের চিকিৎসাতেও উল্লেখযোগ্য সাফল্য দাবি করলেন বিজ্ঞানীরা। গবেষণার তথ্য বিশ্লেষণ করে করোনায় গুরুতর অসুস্থদের চিকিৎসায় স্টেরয়েড ব্যবহারের অনুমতি দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।
হু-এর একটি সোশ্যাল মিডিয়া ইভেন্টে জানানো হয়েছে, আশঙ্কাজনক কোভিড আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় কর্টিকোস্টেরয়েড ব্যবহার করে মৃত্যুর ঝুঁকি ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো গিয়েছে বলে সারা বিশ্বের অন্তত সাতটি পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফলাফলে উঠে এসেছে। বুধবার এই তথ্য সামনে আসার পরেই এই ওষুধ ব্যবহারের অনুমতি শুধু নয়, জোর দিয়ে সুপারিশ করছে হু। সংস্থার ক্লিনিক্যাল কেয়ার-এর প্রধান জানেট ডিয়াজ বলেছেন, কোভিড আক্রান্ত আশঙ্কাজনক বা গুরুতর অসুস্থদের চিকিৎসায় তাঁরা দৃঢ় ভাবে স্টেরয়েড ব্যবহারের সুপারিশ করছেন।
এই পরীক্ষামূলক প্রয়োগের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ব্রিটেনের ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্লেষক ও গবেষক জোনাথন স্টার্ন জানিয়েছেন, ব্রিটেন, ব্রাজিল, কানাডা, চিন, ফ্রান্স, স্পেন এবং আমেরিকায় এই পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে। ওষুধ দেওয়া হয়েছে সবচেয়ে বেশি অসুস্থদের। সব দেশেই আশাতীত ফলাফল দেখিয়েছে কোর্টিকোস্টেরয়েড। বয়স, লিঙ্গ বা কত দিন ধরে অসুস্থ সে সবের ভেদাভেদেও ওষুধের কার্যকারিতায় কোনও পার্থক্য হয়নি। আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালে এই পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফলাফল এবং তার বিশ্লেষণ প্রকাশিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: পয়লা নভেম্বরের মধ্যেই টিকা সব রাজ্যে, তৈরি থাকতে নির্দেশ মার্কিন প্রশাসনের
জুন মাসেই করোনায় গুরুতর অসুস্থদের চিকিৎসায় প্রথম ওষুধ হিসেবে সামনে এসেছিল ডেক্সামেথাসোন। এই ওষুধটিও মৃত্যুহার কমাতে সক্ষম বলে দাবি করা হয়েছিল ওই সময়। এত দিন পর্যন্ত গুরুতর আক্রান্তদের আইসিইউ-তে রেখে এই ওষুধই দিচ্ছিলেন চিকিৎসকরা। জোনাথন স্টার্ন বলেন, ‘‘চিকিৎসা ক্ষেত্রে তুলনামূলক ভাবে সস্তা ও সহজলভ্য হিসেবে পরিচিত স্টেরয়েডযুক্ত ওষুধ। আমাদের গবেষকরা নিশ্চিত করেছেন যে এই গোত্রের ওষুধ করোনায় সবচেয়ে গুরুতর আক্রান্তদের উপর প্রয়োগ করলে মৃত্যুর হার কমাতে তা কার্যকরী ভূমিকা নেয়।’’
বিজ্ঞানীদের দাবি, পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফল থেকে তাঁরা নিশ্চিত হয়েছেন যে, করোনায় সবচেয়ে গুরুতর আক্রান্তদের কোর্টিকোস্টেরয়েড প্রয়োগ করলে মৃত্যুহার কমছে ৬৮ শতাংশ। কিন্তু কোর্টিকোস্টেরয়েড ছাড়া অন্য ওষুধে সেই হার থাকছে ৬০ শতাংশ। প্রতি ১০০০ জনে মৃত্যু কমেছে ৮৭ জনের।
আরও পড়ুন: করোনাকালে সর্বোচ্চ পরীক্ষার দিনেই নতুন আক্রান্ত প্রায় ৮৪ হাজার!
ডেক্সামেথাসোন ওষুধের গবেষণা পর্বে সরাসরি যুক্তি ছিলেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ ও মহামারি বিভাগের অধ্যাপক মার্টিন ল্যান্ড্রে। তিনি বলেন, এই ফলাফলের অর্থ, সারা বিশ্বের চিকিৎসকরা এ বার থেকে করোনায় আশঙ্কাজনক রোগীদের চিকিৎসায় নতুন ওষুধের দিকেই ঝুঁকবেন। বিশ্বে প্রথম করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কার করেছে বলে দাবি করেছে রাশিয়া। সেই দাবি ঘিরে প্রশ্ন রয়েছে। সম্পূর্ণ নিরাপদ করোনাভাইরাসের টিকা এ বছরের শেষ দিকে বা পরের বছরের গোড়াতেই চলে আসবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। সমান্তরাল ভাবে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও যে বিজ্ঞানীরা নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তার প্রমাণ এ দিন ফের মিলল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy