কংগ্রেসের ‘বিদ্রোহী’ স্কোয়াডের চার তরুণী। ছবি: এএফপি।
প্রেসিডেন্ট যা ইচ্ছে বলে যান, তাতে বিচলিত বা বিভ্রান্ত হবেন না— ট্রাম্পের বর্ণবিদ্বেষী আক্রমণের মুখে মার্কিন জনতাকে এমন বার্তাই দিয়েছেন কংগ্রেসের ‘বিদ্রোহী’ স্কোয়াডের চার তরুণী। এক সাংবাদিক বৈঠকে আজ আলেকজ়ান্দ্রিয়া ওকাসিয়ো কর্তেজ়, ইলান ওমর, রশিদা তালিব এবং আইয়ানা প্রেসলি স্পষ্ট বলেছেন, ট্রাম্পের কথা নিয়ে মাথা ঘামাবেন না!
প্রেসিডেন্টও অনড়। ওই চার তরুণীকে উদ্দেশ করে ট্রাম্প আজ আবার টুইট করেছেন, ‘‘আমাদের দেশকে যখন এত ঘৃণা, এখান থেকে বিদায় হন।’’ জাতি ও বর্ণবিদ্বেষের অভিযোগ খারিজ করে তাঁর দাবি, ‘‘আমার শরীরের একটা হাড়েও জাতি বা বর্ণবিদ্বেষ নেই।’’
চার নবীন কংগ্রেস সদস্যও বলেছেন, প্রেসিডেন্ট স্বাস্থ্যক্ষেত্র, অস্ত্র-হিংসা এবং বিশেষ করে মেক্সিকো সীমান্তে আটক শরণার্থীদের পরিস্থিতি নিয়ে যে ভাবে কাজ চালাচ্ছেন, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন তাঁরা। আইয়ানা প্রেসলি বলেছেন, ‘‘এই প্রশাসনের দুর্নীতির সংস্কৃতি এবং অনুভূতিহীন শোরগোল শুধু বিভ্রান্ত এবং বিচলিত করতে পারে।’’ তাঁর কথায়, প্রেসিডেন্ট চাইলেও ‘‘কোণঠাসা করে আমাদের মুখ বন্ধ করতে পারবেন না। সাম্য এবং নৈতিক বিশ্ব গড়তে যাঁরা আগ্রহী, তাঁদের মধ্যে যে কেউ থাকতে পারেন আমাদের স্কোয়াডে।’’ আলেকজ়ান্দ্রিয়া দেশের শিশুদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট যা-ই বলুক, এই দেশ তোমার-আমার, আর সকলের।’’
ইলান এবং রশিদা একযোগে ট্রাম্পের ইমপিচমেন্টের দাবি তুলেছেন এ দিনও। ইলান বলেছেন, ‘‘ইতিহাস চোখ মেলে আমাদের দেখছে। সীমান্তে গণ-প্রত্যর্পণ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে নজির আমরা তৈরি করেছি, তা নিন্দনীয়।’’ ইলানের মতে, ট্রাম্পের নির্লজ্জ বর্ণবিদ্বেষী আক্রমণ ‘‘শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদীদের প্রকল্পের মধ্যেই পড়ে।’’ কংগ্রেসের নতুন এই মুখ জোর দিয়ে বলছেন, ‘‘(প্রেসিডেন্ট) আমাদের দেশকে ভাগ করতে চান। তাই ওঁর বিদেশি-ভীতি ও বর্ণবিদ্বেষমূলক চিন্তার ধারাবাহিকতায় কোনও ছেদ নেই।’’
সোমালিয়ার তরুণী ইলানকে গোড়া থেকেই কোণঠাসা করার চেষ্টা করে গিয়েছেন ট্রাম্প। সম্প্রতি টুইটেও কখনও তাঁকে ‘কমিউনিস্ট’ বলে, কখনও ‘আল কায়দার সমর্থক’ আখ্যা দিয়ে প্রকাশ্যে স্পষ্ট করেছেন নিজের অন্দরের ‘ইসলাম-ভীতি’কেই। ইলান আজ সাংবাদিক বৈঠকে বুঝিয়েছেন, আমেরিকায় প্রত্যেক মুসলিমকে কখনও না কখনও এ ধরনের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। তাই তিনি ও সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করে তার গুরুত্ব বাড়িয়ে তুলতে চান না।
তবে হাউসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ট্রাম্পের মন্তব্যের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই নিন্দা প্রস্তাব এনেছেন। ডেমোক্র্যাট সদস্যদের তো বটেই, রিপাবলিকানদের কাছেও প্রস্তাব সমর্থনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে ট্রাম্পের টুইট, ‘‘সব ডেমোক্র্যাটদের চক্রান্ত। রিপাবলিকানরা যেন ফাঁদে পা না দেন। ২০২০-র ভোটে দেখা যাবে, এই কংগ্রেস সদস্যদের অশালীন ভাষা, কার্যকলাপ নিয়ে মানুষ কী বলেন।’’
গত রবিবার মার্কিন কংগ্রেসের চার ‘অ-শ্বেতাঙ্গ’ ডেমোক্র্যাটের নাম না করে টুইটে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘যেখান থেকে এসেছেন, সেখানেই ফিরে যান।’’ তা নিয়ে সমালোচনা শুরু হলেও ট্রাম্প টুইটে বলেছেন, ‘‘আমাদের দেশ সমাজতান্ত্রিক বা কমিউনিস্ট দেশ হবে না। তাই যাঁরা খুশি নন, চলে যেতে পারেন। ’’ তাতে সমালোচনা থামেনি। গত কালই ব্রিটেনের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো নিন্দা করেন ট্রাম্পের মন্তব্যের। নিউজ়িল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডের্নও বলেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে একেবারেই সহমত নন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy