(বাঁ দিকে) জো বাইডেন ও কমলা হ্যারিস (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
ঘরে-বাইরে চাপের মুখে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড় থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বছর একাশির ‘বৃদ্ধ’ জো বাইডেন। তাঁর যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে ডেমোক্র্যাট শিবির থেকে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের নাম প্রস্তাব করেছেন বাইডেন। তবে বাইডেনের ভারতীয় বংশোদ্ভূত ডেপুটি ছাড়াও ডেমোক্র্যাট দল থেকে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন আরও বেশ কয়েক জন। বাইডেন সরে দাঁড়ানোয় সেই শূন্যস্থানে কাকে বসানো হবে, তা নিয়ে বিস্তর চর্চা, গুঞ্জন শুরু হয়েছে আমেরিকায়।
কূটনীতিবিদদের অনেকেই মনে করছেন, প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়ার দৌড়ে বাকিদের তুলনায় এগিয়ে রয়েছেন কমলা। প্রথমত, বাইডেন নিজে তাঁর নাম প্রস্তাব করেছেন। দ্বিতীয়ত, কমলার রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও আইনি অভিজ্ঞতা। কমলা ছিলেন ক্যালিফর্নিয়ার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ও প্রথম মহিলা অ্যাটর্নি জেনারেল। ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলাই হলেন আমেরিকার প্রথম সেনেটর, যাঁর অতীত জড়িয়ে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায়। সর্বোপরি তিনি হলেন আমেরিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ও প্রথম মহিলা ভাইস প্রেসিডেন্ট। কড়া আইনজীবী হিসেবেও তাঁর বেশ পরিচিতি রয়েছে। নির্বাচনী প্রচারে অভিবাসন ও অপরাধ সংক্রান্ত ইস্যুতে যা কমলাকে এগিয়ে রাখতে পারে বলেই মনে করছেন অনেকে।
তবে ডেমোক্র্যাট শিবিরে কমলার সমালোচকও রয়েছেন অনেকে। বিশেষ করে প্রগতিশীল ডেমোক্র্যাটরা। তাঁদের মতে, আইনজীবী থাকাকালীন বেশ কিছু ক্ষেত্রে হ্যারিস ছোটখাটো অপরাধের ক্ষেত্রেও যাতে অপরাধীরা কড়া সাজা পায়, তা নিশ্চিত করেছিলেন। যা প্রগতিশীল ডেমোক্র্যাটদের একাংশ পছন্দ করছেন না।
জো বাইডেন সরে দাঁড়িয়েছেন বলেো তাঁর ডেপুটি কমলাকেই যে বেছে নিতে হবে, এমন কোনও নিয়মও নেই। ফলে বিকল্প কিছু নাম ঘিরেও চর্চা শুরু হয়েছে। সেই বিকল্পের তালিকায় উঠে আসছে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসমের নাম। বছর ছাপ্পান্নর ডেমোক্র্যাট নেতার সান ফ্রান্সিসকোর মেয়র হিসেবে দায়িত্ব সামলানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে। বাইডেন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়ার পর যখন ঘরে-বাইরে চাপের মুখে, তখন থেকেই দলের একাংশ চাইছিল হোয়াইট হাউসের দৌড়ে তাঁকে এগিয়ে দিতে। কিন্তু নিউসম শুরু থেকেই বাইডেনকে সমর্থন করে এসেছেন। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর জানিয়েছিলেন, যত দিন না বাইডেন সরে দাঁড়াচ্ছেন, তত দিন তাঁর পরিবর্ত হিসেবে চর্চার প্রশ্নই ওঠে না।
তবে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা যে তাঁর একেবারেই নেই, এ কথা তিনি কখনও বলেননি। কাজেকর্মেও তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। বিগত কয়েক মাসে একাধিক বিদেশ সফর করেছেন। এখনও পর্যন্ত রাজনীতিতে তাঁর কী কী সাফল্য, সেই নিয়ে বিস্তর বিজ্ঞাপন করেছেন। পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটিতে লাখ লাখ ডলার ঢেলেছেন। চর্চা চলছিল, হয়তো ২০২৮ সালে তাঁকে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী করা হতে পারে। কিন্তু এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ২০২৪ সালেও কি প্রেসিডেন্টের দৌড়ে দেখা যেতে পারে নিউসমকে? তা নিয়েও নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে।
এর পাশাপাশি মিশিগানের গভর্নর গ্রেচেন হুইটমারকে নিয়েও চর্চা চলছে। বছর বাহান্নর ডেমোক্র্যাট নেত্রী। নির্বাচনে তিনি দলকে ভাল সাফল্য দিতে পারেন বলে মানছেন ডেমোক্র্যাটদের একাংশ। মিশিগান প্রদেশ মূলত শ্রমিক অধ্যুষিত একটি অঞ্চল। যেখানে কৃষ্ণাঙ্গ ও আরব-আমেরিকান জনজাতির বাস। গত নির্বাচনে এই দুই শ্রেণির ভোটারেরাই বেগ দিয়েছিলেন বাইডেনকে। সে ক্ষেত্রে গ্রেচেন যে ভাবে মিশিগানে সফল, তাতে বিকল্প হিসেবে চর্চায় উঠে আসছে তাঁর নামও।
চর্চায় আছেন পেনসেনভানিয়ার বছর একান্নর গভর্নর জোশ স্যাপিরোও। অতীতে দু’বার প্রদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন তিনি। ক্যাথলিক ধর্মগুরুদের বিরুদ্ধে শিশুদের উপর যৌন নির্যাচনের অভিযোগে সরব হয়েছিলেন তিনি। এ ছাড়া আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার স্ত্রী মিশেল ওবামা, কেন্টকির গভর্নর অ্যান্ডি বেশার, ম্যারিল্যান্ডের গভর্নর ওয়েস মুরের নাম নিয়েও গুঞ্জন চলছে ডেমোক্র্যাট দলের অন্দরমহলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy