দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল। —ফাইল চিত্র।
আচমকাই দেশ জুড়ে সামরিক আইন (মার্শাল ’ল) জারি করার কথা ঘোষণা করায় বিপদ বাড়ল দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের। এ বার দেশের বিচার মন্ত্রকের নির্দেশে দেশ ছাড়তে পারবেন না তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে পুলিশি তদন্তও! বিরোধীদের অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত করছে পুলিশ। অভিযোগ, সামরিক আইন ঘোষণার ফলে দেশে বিক্ষোভের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। অশান্তি এড়াতে সিওল প্রদেশে সেনাও নামাতে হয়েছিল।
গত মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় ইওল জানান, তিনি সারা দেশে সামরিক আইন বলবৎ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কেন এমন সিদ্ধান্ত নিতে হল তাঁকে, তার ব্যাখ্যাও করেছিলেন ইওল। তিনি জানান, উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং উনের মদতে ক্ষমতা দখলের ছক কষছে বিরোধীরা। তাঁর ব্যাখ্যা, দেশকে কমিউনিস্ট আগ্রাসন থেকে সুরক্ষা দিতে এবং রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি নির্মূল করতে দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করছেন। এই আইন বাস্তবায়িত করতে দায়িত্ব দেওয়া হয় সে দেশের সেনাপ্রধান জেনারেল পার্ক আন-সু-কে। সামরিক আইন জারির মধ্যে দিয়ে দেশে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে চেয়েছিলেন ইওল।
প্রেসিডেন্টের ভাষণের পরই দক্ষিণ কোরিয়ার দিকে দিকে শুরু হয় বিক্ষোভ। বিরোধীরা তো বটেই, শাসকদলের অনেকেই সামরিক আইনের বিরুদ্ধে পথে নামেন। সে দেশের পার্লামেন্টের বিরোধী সদস্যেরা ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভবনে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। হাজার হাজার মানুষের জমায়েতে অশান্ত হয়ে ওঠে অ্যাসেম্বলি ভবন চত্বর। শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের খণ্ডযুদ্ধ। পরে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ দিকে গড়ায় বাধ্য হয়েই সামরিক আইন প্রত্যাহার করেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট।
সামরিক আইন প্রত্যাহার করলেও বিপদ কাটছে না ইওলের। বিরোধী শিবির তাঁর বরখাস্তের (ইমপিচমেন্ট) দাবি তোলে। তবে শনিবার দক্ষিণ কোরিয়ার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বেলিতে বিরোধীদের আনা বরখাস্ত প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়। ভোটাভুটিতে অংশ নেননি শাসক দল পিপ্লস পাওয়ার পার্টির পার্লামেন্ট সদস্যেরা। তবে তাতেও পিছু হটছেন না বিরোধীরা। চলতি সপ্তাহে আবারও প্রেসিডেন্টকে বরখাস্তের প্রস্তাব পার্লামেন্টে উত্থাপন করতে পারেন তাঁরা।
সেই আবহে এ বার ইওলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করল সে দেশের পুলিশ। সোমবার স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইওলের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখে তাঁকে দেশ না ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ইওলের সামরিক আইন জারির ঘোষণাকে ‘অসাংবিধানিক, অবৈধ’ বলে অভিহিত করেছে। সামরিক আইন ঘোষণার ফলে সৃষ্টি হওয়া বিদ্রোহের কারণে ইওল-সহ মোট ন’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরও করেছে বিরোধী শিবির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy