বাশার আল-আসাদ। রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, রবিবার সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছেড়েছেন তিনি। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসে সচল রয়েছে ভারতীয় দূতাবাস। সে দেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন দূতাবাসের কর্মীরা। তাঁদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও করছে দামাস্কাসের ভারতীয় দূতাবাস। সোমবার বিদেশ মন্ত্রক থেকে এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। সিরিয়ার সাম্প্রতিক পরিস্থিতির উপরেও নজর রাখছে বিদেশ মন্ত্রক। পশ্চিম এশিয়ার ওই দেশের একতা, সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতার পক্ষেও সওয়াল করেছে দিল্লি।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধে ধ্বস্ত সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসে রবিবার প্রবেশ করেন বিদ্রোহীরা। পতন হয় বাশার আল-আসাদের শাসনের। রাজধানী দামাস্কাসের দখল নেয় সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী। তখনই রাজধানী শহর ছাড়েন বাশার। রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমের দাবি, পরিবার নিয়ে তিনি মস্কোয় পৌঁছেছেন।
বাশার দামাস্কাস ছাড়ার পর বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং তাদের সমর্থকদের উচ্ছ্বাস দেখা যায় সিরিয়ায়। দামাস্কাসের কিছু অঞ্চলে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিও তৈরি হয় বলে অভিযোগ। বিদ্রোহীরা প্রবেশ করেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট প্যালেসে। বাশারের পরিবারের সদস্যদের ছবি-সহ ফ্রেম ভাঙচুর করা হয়। এর আগে শ্রীলঙ্কা বা বাংলাদেশেও সরকারের পতনের সময়ে এই ধরনের পরিস্থিতি দেখা গিয়েছে। এমনকি ‘আল জাজ়িরা’ জানিয়েছে, দামাস্কাসে ইতালির রাষ্ট্রদূতের বাসভবন থেকে তিনটি গাড়ি চুরি হয়ে গিয়েছে। এক দল সশস্ত্র মানুষ ইতালির রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে প্রবেশ করেছিলেন বলে দাবি সে দেশের বিদেশমন্ত্রী অ্যান্টনিও তাজানির। ইরানের দূতাবাসেও হামলার অভিযোগ উঠেছে।
সিরিয়ার এই উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সে দেশে বসবাসকারী ভারতীয়েরা কী অবস্থায় রয়েছেন, তা নিয়ে উদ্বেগ দানা বাঁধতে শুরু করে। পরে কেন্দ্রীয় আধিকারিক সূত্রকে উদ্ধৃত করে পিটিআই জানায়, সিরিয়ায় ভারতীয়েরা নিরাপদেই রয়েছেন। দূতাবাস থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। পিটিআই জানিয়েছে, সরকারি হিসাবে সিরিয়ায় প্রায় ৯০ জন ভারতীয় রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৪ জন রাষ্ট্রপুঞ্জের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। এই আবহে সোমবার দুপুরে বিবৃতি দিল বিদেশ মন্ত্রক। জানানো হল, সে দেশে থাকা ভারতীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যোগাযোগ করছে দূতাবাস।
সিরিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীর অভ্যুত্থানে বাশারের পতনের পর সে দেশে মানবাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার ডাক দিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, সিরিয়ায় গত কয়েক দশক ধরে মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। বাশারের পতন সেখানে মানবাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার ‘ঐতিহাসিক সুযোগ’ বলে মনে করছে অ্যামনেস্টি। সংস্থার মহাসচিব অ্যাগনেস কালামার্ডের মতে, এই সময়ে ন্যায়বিচার সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিশোধ নয়। কেউ আত্মসমর্পণ করতে চাইছেন বুঝতে পারলে, তাঁর উপর যাতে হামলা না-করা হয়, সেই অনুরোধও জানিয়েছে অ্যামনেস্টি।
সিরিয়ায় পরিস্থিতি তপ্ত হতে পারে বলে আঁচ করে আগে থেকেই সেখানে বসবাসকারী ভারতীয়দের সতর্ক করে বিদেশ মন্ত্রক। গত সপ্তাহেই ওই অ্যাডভাইজ়রিতে সিরিয়ায় বসবাসকারী ভারতীয়দের বলা হয়, তাঁরা যেন প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে না বেরোন এবং সাবধানে চলাফেরা করেন। প্রত্যেককে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়। সেই সঙ্গে সুযোগ থাকলে সিরিয়া ছাড়ার বার্তাও দেয় বিদেশ মন্ত্রক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy