দক্ষিণ কোরিয়ার প্রাক্তন মন্ত্রী কিম ইয় হিউন। —ফাইল চিত্র।
গোটা দেশে সামরিক আইন (মার্শাল ’ল) জারির সুপারিশ করেছিলেন তিনিই। তাঁর সুপারিশে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল আচমকাই এই আইন জারির ঘোষণা করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। দক্ষিণ কোরিয়ার সেই প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয় হিউন এ বার নিজের অফিসে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন। তবে পুলিশের তৎপরতায় তাঁর প্রাণ বাঁচে। কিন্তু তার পরই গ্রেফতার হন কিম!
সংবাদ সংস্থা এপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সামরিক আইন ঘোষণার ফলে সৃষ্টি হওয়া বিদ্রোহের কারণে ইওল-সহ মোট ন’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে বিরোধী শিবির। সেই তালিকায় ছিলেন সে দেশের প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল। তবে গ্রেফতারির আগেই নিজের অফিসে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন কিম। দক্ষিণ কোরিয়ার আইনমন্ত্রী পার্ক সুং জে পার্লামেন্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে আত্মহত্যার চেষ্টা করেও গ্রেফতারি এড়াতে পারেননি কিম। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার অপব্যবহার করার প্ররোচনা দেওয়া। আদালত সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের খুবই ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত কিম। অভিযোগ, সামরিক আইন জারির ঘোষণার পর ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। সেই বিক্ষোভ দমনে সেখানে নিজের ক্ষমতাবলে সেনা পাঠিয়েছিলেন তিনিই। সামরিক আইন জারির সুপারিশ করার জন্য দেশে যে অস্থির অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল, তার জন্য মঙ্গলবার ক্ষমা চেয়েছেন কিম। তিনি জানান, সামরিক আইন জারির ঘোষণা এবং তার পর দেশে সৃষ্টি হওয়া অশান্তির দায় বর্তায় তাঁর উপরই। শুধু কিম নয়, সামরিক আইন জারির ঘোষণা করা ‘ভুল’ ছিল বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইওল।
গত ৩ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় ইওল জানান, তিনি সারা দেশে সামরিক আইন বলবৎ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কেন এমন সিদ্ধান্ত নিতে হল তাঁকে, তার ব্যাখ্যাও করেছিলেন ইওল। তিনি জানান, উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং উনের মদতে ক্ষমতা দখলের ছক কষছেন বিরোধীরা। তাঁর ব্যাখ্যা, দেশকে কমিউনিস্ট আগ্রাসন থেকে সুরক্ষা দিতে এবং রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি নির্মূল করতে দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করছেন। এই আইন বাস্তবায়িত করতে দায়িত্ব দেওয়া হয় সে দেশের সেনাপ্রধান জেনারেল পার্ক আন-সু-কে। সামরিক আইন জারির মধ্যে দিয়ে দেশে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে চেয়েছিলেন ইওল।
প্রেসিডেন্টের ভাষণের পরই দক্ষিণ কোরিয়ার দিকে দিকে শুরু হয় বিক্ষোভ। বিরোধীরা তো বটেই, শাসকদলের অনেকেই সামরিক আইনের বিরুদ্ধে পথে নামেন। সে দেশের পার্লামেন্টের বিরোধী সদস্যেরা ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভবনে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। হাজার হাজার মানুষের জমায়েতে অশান্ত হয়ে ওঠে অ্যাসেম্বলি চত্বর। শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের খণ্ডযুদ্ধ। পরে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ দিকে গড়ায় যে, বাধ্য হয়েই সামরিক আইন প্রত্যাহার করেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy