ইজ়রায়েলি হামলায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছে সিরিয়ার নৌবহর। মঙ্গলবার রাতে এ কথা জানিয়েছে ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। ছবি: এএফপি।
সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের পতনের পর থেকে একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইজ়রায়েল। বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ইজ়রায়েলি সেনার দাবি, গত ৪৮ ঘণ্টায় সিরিয়ার উপর সাড়ে তিনশোরও বেশি হামলা চালিয়েছে তারা। এমনকি সিরিয়ার নৌবহরেও হামলা হয়েছে। ইজ়রায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, সিরিয়ার আল-বায়েদা এবং লাতাকিয়া বন্দরে হামলা করেছে তারা। তাতে সিরিয়ার অন্তত ১৫টি জাহাজ ধ্বংস হয়েছে।
বাশারের পতনের পর থেকে সিরিয়ায় একের পর এক হামলায় আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইজ়রায়েলের উদ্দেশ্য নিয়ে। কারও কারও মতে, ইজ়রায়েল আবার গোলান মালভূমিতে ‘দখল’ পাওয়ার চেষ্টা করছে। যদিও ইজ়রায়েলের দাবি, তারা নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্যই হামলা চালাচ্ছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদেও এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে নেতানিয়াহুর প্রশাসন। তাদের বক্তব্য, এই হামলা ‘সীমিত এবং সাময়িক’।
গত রবিবার সিরিয়ার বিদ্রোহীরা রাজধানী শহর দামাস্কাসের দখল নেয়। ওই তপ্ত পরিস্থিতির মাঝে সিরিয়া ছাড়েন বাশার। একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, তিনি রাশিয়ায় সাময়িক আশ্রয় নিয়েছেন। বাশারের দামাস্কাস ত্যাগের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সিরিয়ার উপর হামলা শুরু করে ইজ়রায়েল। বেশির ভাগ হামলা হয়েছে সিরিয়ার সামরিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলিতে। তালিকায় রয়েছে একটি গবেষণা কেন্দ্রও। সেখানে সিরিয়া বিভিন্ন রাসায়নিক অস্ত্র নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে বলে সন্দেহ করা হয়। যদিও তার কোনও প্রমাণ মেলেনি। যদিও ইজ়রায়েলের দাবি, ওই অস্ত্র যাতে সিরিয়ার চরমপন্থীদের হাতে না পৌঁছে যায়, সেই কারণে হামলা চালিয়েছে তারা।
বাশারের পতনের পর সিরিয়াকে সামরিক ভাবে কার্যত ‘পঙ্গু’ করে দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছে রাশিয়া। বাছাই করে সামরিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল এবং অস্ত্রভান্ডারগুলিতে হামলা সে দিকেই ইঙ্গিত করছে। ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজ়রায়েল কাট্জ় জানিয়েছেন, যে সব অঞ্চল ইজ়রায়েলের ক্ষতি করতে পারে, শুধু সেই অঞ্চলগুলিতেই হামলা চালানো হচ্ছে। সিরিয়ার নৌবহর ধ্বংস করাকেও একটি ‘বড়’ সাফল্য হিসাবে মনে করছেন তিনি।
ইজ়রায়েলের দাবি, তারা নিজেদের নিরাপত্তার জন্য এই হামলাগুলি চালাচ্ছে। তবে এর নেপথ্যে গোলান মালভূমির উপর ‘কব্জা’ পাওয়ার চেষ্টাও থাকতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর সিরিয়ার গোলান মালভূমি ইজ়রায়েলের দখলে চলে গিয়েছিল। পরে তা ফিরিয়ে দিলেও, একটি অংশ নিজেদের দখলে রেখে দেয় ইজ়রায়েল। যদিও আমেরিকা ছাড়া দুনিয়ার অধিকাংশ দেশই আংশিক দখলে থাকা গোলান মালভূমিকে ইজ়রায়েলের অংশ বলে মান্যতা দেয়নি। এরই মধ্যে দু’দিন আগে নেতানিয়াহু গোলান মালভূমিকে ইজ়রায়েলের অংশ বলে দাবি করেছেন। বাশারের পতন হতেই আবার ইজ়রায়েল সিরিয়ার উপর হামলা শুরু করায় তাই নেতানিয়াহু প্রশাসনের অভিপ্রায় নিয়ে সংশয় জেগেছে অনেকের মনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy