ছবি: রয়টার্স।
মরক্কোয় তখন বেশ রাত। রাতের খাওয়া শেষ করে অনেেকই শুয়ে পড়েছেন বিছানায়। কেউ বা গভীর ঘুমে। স্থানীয় সময় রাত ১১টা ১১ নাগাদ হঠাৎ কেঁপে উঠল পায়ের তলার মাটি। ম্যারাকেশের বাসিন্দা আবদেলহক এল আমরানি (৩৩) বললেন, ‘‘সে প্রচণ্ড কাঁপুনি। দাঁড়িয়ে থাকা যাচ্ছে না। সব কিছু দুলছে। ভূমিকম্প হচ্ছে বুঝতে পেরে ছুটে বাইরে চলে এলাম। দেখলাম আশপাশের সব বাড়ি দুলছে!’’
ফ্রান্সের নাগরিক মিশেল বিজ়েট ম্যারাকেশে তিনটি বাড়ির মালিক। ভূমিকম্পের পরের দিনেও আতঙ্ক কাটেনি তাঁর। বললেন, ‘‘মনে হচ্ছিল খাট-বিছানা যেন উড়ে যাচ্ছে। গায়ে পোশাক চাপানোরও সময় পাইনি। যা পরে ছিলাম, সেই অবস্থায় ছুটে বেরিয়ে গেলাম রাস্তায়। আমার বাড়িগুলোর কী অবস্থা দেখতে ছুটলাম। এ এক ভয়ঙ্কর বিপর্যয়।’’
মরক্কোয় থাকেন ব্রিটিশ সাংবাদিক মার্টিন জে। কাল রাতে খাওয়া-দাওয়া সেরে সবে শুতে গিয়েছিলেন। স্ত্রীর চিৎকারে ঘোর ভাঙে তাঁর। মার্টিন বললেন, ‘‘ওর (স্ত্রী) চিৎকারে প্রথম টের পেলাম কিছু একটা ঘটছে। তার পর দেখলাম, সব কিছু কাঁপছে। খাট-বিছানা, মেঝে, চার দেওয়ালও। বাইরে বেরিয়ে এলাম।’’ মার্টিন জানিয়েছেন, সকলেই আশ্রয়ের খোঁজে খোলা জায়গার দিকে দৌড়চ্ছে। কম্পন থেমে গেলেও প্রশাসনের তরফে ঘরে ফিরতে তখনই নিষেধ করা হয়েছে। দু’ঘণ্টার ভিতরে পরবর্তী কম্পনের আশঙ্কা রয়েছে বলে। মরক্কোর সব শহরের ছবিটা তখন প্রায় এক। বাড়ি হোক বা বহুতল, সকলেই ঘরের বাইরে। ঠান্ডার মধ্যে কাতারে কাতারে লোক রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে।
ভূমিকম্পের সময়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন ম্যারাকেশের আর এক বাসিন্দা ফয়সাল বাদৌর। জানালেন, চারপাশের সব কিছু কাঁপতে দেখে গাড়ি থামিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। চারপাশে সকলে আতঙ্কে চিৎকার করছে। সহ্য করা যায় না।
মরক্কোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, ম্যারাকেশ, আল হাউজ়, উরজ়াজ়েত, আজ়িলাল, তারুদান্ত এলাকা সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সে সব এলকায় বহু মানুষ এখনও আটকে রয়েছেন ভগ্নস্তূপের তলায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইউনেস্কো ঘোষিত প্রাচীন
শহর মদিনাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy