Advertisement
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
namibia

ভয়ঙ্কর ‘স্কেলিটন কোস্ট’-এ সামুদ্রিক প্রাণীর এবং জাহাজের কঙ্কালের ফাঁকে ঘোরে ক্ষুধার্ত সিংহ

পর্তুগিজ নাবিকরা একে বলত ‘নরকের দ্বার’। স্থানীয় বুশম্যান উপজাতির মানুষ মনে করে, ঈশ্বর কুপিত হয়ে এই অংশ সৃষ্টি করেছিলেন।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২০ ১২:১৬
Share: Save:
০১ ১৪
আদিগন্ত বিস্তৃত সাদা বালিতে তিমি-সহ বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর কঙ্কাল বা দেহাবশেষ। পাহাড়ের মতো জমে আছে জাহাজের ধ্বংসাবেশষ। তার ফাঁকে ফাঁকে ঘুরে বেড়ায় ক্ষুধার্ত সিংহ আর হায়নার দল। নামিবিয়ার উপকূলের দীর্ঘ এই অংশের নাম ‘স্কেলিটন কোস্ট’।  (ছবি: শাটারস্টক)

আদিগন্ত বিস্তৃত সাদা বালিতে তিমি-সহ বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর কঙ্কাল বা দেহাবশেষ। পাহাড়ের মতো জমে আছে জাহাজের ধ্বংসাবেশষ। তার ফাঁকে ফাঁকে ঘুরে বেড়ায় ক্ষুধার্ত সিংহ আর হায়নার দল। নামিবিয়ার উপকূলের দীর্ঘ এই অংশের নাম ‘স্কেলিটন কোস্ট’। (ছবি: শাটারস্টক)

০২ ১৪
আফ্রিকার দক্ষিণ প্রান্তের এই দেশের নামকরণ হয়েছে উপকূলীয় মরুভূমি ‘নামিব’ থেকে। অতলান্তিক মহাসাগরের উপকূলে এই কোস্টাল ডেজার্ট প্রায় ২০০০ কিমি অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত।

আফ্রিকার দক্ষিণ প্রান্তের এই দেশের নামকরণ হয়েছে উপকূলীয় মরুভূমি ‘নামিব’ থেকে। অতলান্তিক মহাসাগরের উপকূলে এই কোস্টাল ডেজার্ট প্রায় ২০০০ কিমি অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত।

০৩ ১৪
নামিবিয়া, অ্যাঙ্গোলা এবং দক্ষিণ আফ্রিকা— এই তিন দেশে রয়েছে নামিব মরুর অংশ। তার মধ্যে নামিবিয়ার অংশেই পড়েছে ওই স্কেলিটন কোস্ট।

নামিবিয়া, অ্যাঙ্গোলা এবং দক্ষিণ আফ্রিকা— এই তিন দেশে রয়েছে নামিব মরুর অংশ। তার মধ্যে নামিবিয়ার অংশেই পড়েছে ওই স্কেলিটন কোস্ট।

০৪ ১৪
নামিবিয়ার ১৫৭০ কিমি উপকূল অংশের মধ্যে পুরনো শহর হল সোয়াকোপমান্ড। অতীতের জার্মান এই উপনিবেশ থেকে শুরু করে অ্যাঙ্গোলার সীমান্ত পর্যন্ত অঞ্চলের সীমানা প্রায় ৫০০ কিমি লম্বা। কার্যত পাণ্ডববর্জিত এই এলাকায় শাসন করে বন্য জীবজন্তুরা। একেই বলা হয় কঙ্কাল-উপকূল।

নামিবিয়ার ১৫৭০ কিমি উপকূল অংশের মধ্যে পুরনো শহর হল সোয়াকোপমান্ড। অতীতের জার্মান এই উপনিবেশ থেকে শুরু করে অ্যাঙ্গোলার সীমান্ত পর্যন্ত অঞ্চলের সীমানা প্রায় ৫০০ কিমি লম্বা। কার্যত পাণ্ডববর্জিত এই এলাকায় শাসন করে বন্য জীবজন্তুরা। একেই বলা হয় কঙ্কাল-উপকূল।

০৫ ১৪
নামিবিয়ার অতলান্তিক-উপকূলের উত্তর অংশ বা কঙ্কাল-উপকূল প্রাচীন কাল থেকেই মানুষের আতঙ্ক ও দুঃস্বপ্নের কারণ। অতীতের পর্তুগিজ নাবিকরা একে বলত ‘নরকের দ্বার’। স্থানীয় বুশম্যান উপজাতির মানুষ মনে করে, ঈশ্বর কুপিত হয়ে এই অংশ সৃষ্টি করেছিলেন।

নামিবিয়ার অতলান্তিক-উপকূলের উত্তর অংশ বা কঙ্কাল-উপকূল প্রাচীন কাল থেকেই মানুষের আতঙ্ক ও দুঃস্বপ্নের কারণ। অতীতের পর্তুগিজ নাবিকরা একে বলত ‘নরকের দ্বার’। স্থানীয় বুশম্যান উপজাতির মানুষ মনে করে, ঈশ্বর কুপিত হয়ে এই অংশ সৃষ্টি করেছিলেন।

০৬ ১৪
ভৌগোলিক কারণে প্রকৃতি এখানে নির্দয়। শীতল বেঙ্গুয়েলা স্রোতের জেরে সারা বছরই এই ভূখণ্ডকে ঘিরে থাকে ঘন সামুদ্রিক কুয়াশা। বার্ষিক সর্বোচ্চ মাত্র ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত নিয়ে এই শুষ্ক অংশে মানুষের জীবনধারণ কার্যত অসম্ভব।

ভৌগোলিক কারণে প্রকৃতি এখানে নির্দয়। শীতল বেঙ্গুয়েলা স্রোতের জেরে সারা বছরই এই ভূখণ্ডকে ঘিরে থাকে ঘন সামুদ্রিক কুয়াশা। বার্ষিক সর্বোচ্চ মাত্র ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত নিয়ে এই শুষ্ক অংশে মানুষের জীবনধারণ কার্যত অসম্ভব।

০৭ ১৪
‘কঙ্কাল উপকূল’-এর কঙ্কাল শব্দটি এসেছে জাহাজ এবং প্রাণী, দু’টির দেহাবশেষ থেকেই। অতীতে এখানে সমুদ্রতটে স্তূপের মতো জমে থাকত তিমি এবং সিলের কঙ্কাল।

‘কঙ্কাল উপকূল’-এর কঙ্কাল শব্দটি এসেছে জাহাজ এবং প্রাণী, দু’টির দেহাবশেষ থেকেই। অতীতে এখানে সমুদ্রতটে স্তূপের মতো জমে থাকত তিমি এবং সিলের কঙ্কাল।

০৮ ১৪
গভীর সমুদ্রে জাহাজে তিমি ও সিল শিকারে পরে চামড়া ছাড়িয়ে নেওয়ার পর দেহাবশেষ ভাসিয়ে দেওয়া হত সমুদ্রে। স্রোতে ভাসতে ভাসতে সেই সব কঙ্কাল এসে জমত উপকূলের এই অংশে।

গভীর সমুদ্রে জাহাজে তিমি ও সিল শিকারে পরে চামড়া ছাড়িয়ে নেওয়ার পর দেহাবশেষ ভাসিয়ে দেওয়া হত সমুদ্রে। স্রোতে ভাসতে ভাসতে সেই সব কঙ্কাল এসে জমত উপকূলের এই অংশে।

০৯ ১৪
এখন শিকারে অনেক ক্ষেত্রেই নিষেধাজ্ঞা আরোপ হওয়ায় সামুদ্রিক প্রাণীর কঙ্কালের সংখ্যা কমে গিয়েছে আগের তুলনায়। তবে জাহাজের ধ্বংসাবশেষ পড়ে রয়েছে আগের মতোই।

এখন শিকারে অনেক ক্ষেত্রেই নিষেধাজ্ঞা আরোপ হওয়ায় সামুদ্রিক প্রাণীর কঙ্কালের সংখ্যা কমে গিয়েছে আগের তুলনায়। তবে জাহাজের ধ্বংসাবশেষ পড়ে রয়েছে আগের মতোই।

১০ ১৪
হাজারের বেশি বিভিন্ন আয়তনের জলযানের কঙ্কাল পড়ে রয়েছে উপকূলের এই অংশে। তার মধ্যে আছে ‘এডুয়ার্ড বোহলেন’, ‘বেঙ্গুয়েলা ঈগল’, ‘ওটাভি’, ‘ডুনেডিন স্টার’-এর মতো বিখ্যাত জাহাজ-ও।

হাজারের বেশি বিভিন্ন আয়তনের জলযানের কঙ্কাল পড়ে রয়েছে উপকূলের এই অংশে। তার মধ্যে আছে ‘এডুয়ার্ড বোহলেন’, ‘বেঙ্গুয়েলা ঈগল’, ‘ওটাভি’, ‘ডুনেডিন স্টার’-এর মতো বিখ্যাত জাহাজ-ও।

১১ ১৪
কঙ্কাল উপকূলের অংশে সমুদ্র উত্তাল। সব সময় ঢেউ আছড়ে পড়ে তটে। অতীতে সমুদ্রের এই অংশে ঘন ঘন জাহাজ দুর্ঘটনা হত। তার চিহ্ন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে স্কেলিটন কোস্ট জুড়ে। এখন অবশ্য বালিয়াড়িতে ভরা পাথুরে এই উপকূল অংশে সার্ফিং খুব জনপ্রিয়।

কঙ্কাল উপকূলের অংশে সমুদ্র উত্তাল। সব সময় ঢেউ আছড়ে পড়ে তটে। অতীতে সমুদ্রের এই অংশে ঘন ঘন জাহাজ দুর্ঘটনা হত। তার চিহ্ন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে স্কেলিটন কোস্ট জুড়ে। এখন অবশ্য বালিয়াড়িতে ভরা পাথুরে এই উপকূল অংশে সার্ফিং খুব জনপ্রিয়।

১২ ১৪
প্রাচীন কাল থেকে মৃত্যুলীলার সাক্ষী থাকলেও এই অংশের নাম ‘স্কেলিটন কোস্ট’ হয়েছে ১৯৪৪ সালে। সে বছর ডুনেডিন স্টার জাহাজডুবি নিয়ে বই লেখেন জন হেনরি মার্শ। তিনি-ই এই অতলান্তিক উপকূলের নামকরণ করেন কঙ্কাল উপকূল।

প্রাচীন কাল থেকে মৃত্যুলীলার সাক্ষী থাকলেও এই অংশের নাম ‘স্কেলিটন কোস্ট’ হয়েছে ১৯৪৪ সালে। সে বছর ডুনেডিন স্টার জাহাজডুবি নিয়ে বই লেখেন জন হেনরি মার্শ। তিনি-ই এই অতলান্তিক উপকূলের নামকরণ করেন কঙ্কাল উপকূল।

১৩ ১৪
পরে এটাই হয়ে যায় এই অংশের সরকারি নাম। মানচিত্রেও ব্যবহার করা হয় এই নামটিই। স্থানীয় প্রতিকূল পরিবেশে যে সব বন্যপ্রাণ টিকে থাকতে পেরেছে, তাদের নিয়ে ‘ন্যাশনাল জিয়োগ্রাফিক’ তৈরি করেছে তথ্যচিত্রও।

পরে এটাই হয়ে যায় এই অংশের সরকারি নাম। মানচিত্রেও ব্যবহার করা হয় এই নামটিই। স্থানীয় প্রতিকূল পরিবেশে যে সব বন্যপ্রাণ টিকে থাকতে পেরেছে, তাদের নিয়ে ‘ন্যাশনাল জিয়োগ্রাফিক’ তৈরি করেছে তথ্যচিত্রও।

১৪ ১৪
উগাব নদী থেকে কুনিনি নদী অবধি ১৬ হাজার বর্গ কিমি এলাকা জুড়ে তৈরি হয়েছে স্কেলিটন কোস্ট ন্যাশনাল পার্ক। বেবুন, জিরাফ, সিংহ, গন্ডার, হরিণ-সহ অসংখ্য বন্যপ্রাণের বৈচিত্রে ভরা এই জাতীয় উদ্যান।

উগাব নদী থেকে কুনিনি নদী অবধি ১৬ হাজার বর্গ কিমি এলাকা জুড়ে তৈরি হয়েছে স্কেলিটন কোস্ট ন্যাশনাল পার্ক। বেবুন, জিরাফ, সিংহ, গন্ডার, হরিণ-সহ অসংখ্য বন্যপ্রাণের বৈচিত্রে ভরা এই জাতীয় উদ্যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy