মৌলবাদী হিংসার প্রতিবাদে লেখক-শিল্পীদের মানববন্ধন। মঙ্গলবার ঢাকায়। রয়টার্স।
দেশজুড়ে প্রতিবাদ এবং আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগের মধ্যে মৌলবাদী হামলার মোকাবিলায় কঠোরতম মনোভাব নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন হাসিনা। এ দিনের বৈঠকে সাম্প্রতিক হিংসার বিষয়টিই প্রাধান্য পায়। কয়েকটি জায়গায় হামলার সময়ে পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে গয়ংগচ্ছ মনোভাবের অভিযোগ ওঠার পরে এ দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে সাফ নির্দেশ দেন— দোষীদের সবাইকে ধরতে হবে, এবং সেটা যত দ্রুত সম্ভব। বৈঠকের পরে ক্যাবিনেট সচিব বলেন, “অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।”
এ দিন ঢাকায় তাঁর ছোট ভাই শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামি লিগের দফতরে একটি অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তৃতা করেন হাসিনা। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। এখানে সব ধর্মের মানুষ তাঁদের ধর্ম পালন করবেন স্বাধীন ভাবে। আমাদের সংবিধানেও সেই নির্দেশনা দেওয়া আছে। ইসলাম ধর্মেও সেই কথাই বলে।” হাসিনা তাঁর পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিচারণ করে মন্তব্য করেন— “প্রত্যেকটা মানুষ যেন অন্ন-বস্ত্র পায়, উন্নত জীবন পায়, সেটাই তাঁর স্বপ্ন ছিল। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করে সেটা হয় না।”
গত কাল সন্ধ্যায় জরুরি বৈঠকে বসে মঙ্গলবার দেশ জুড়ে ‘সম্প্রীতি সমাবেশ ও শান্তি মিছিল’ কর্মসূচির ঘোষণা করেছিলেন শাসক দল আওয়ামি লিগের নেতৃত্ব। ঢাকায় এ দিন কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের-সহ গুরুত্বপূর্ণ নেতা-নেত্রীরা ছিলেন। কাদের অভিযোগ করেন, সরকার-বিরোধীরা এই মৌলবাদীহামলায় ইন্ধন জোগাচ্ছেন। তিনি বলেন, “এই হিংসা হল পরবর্তী নির্বাচনে তাদের প্রস্তুতি। তারা জানে ভোটের মাধ্যমে এই সরকারকে সরানো যাবে না। তাই হিংসা আর মানুষ খুনের পথ নিয়েছে। তবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এর প্রতিরোধ করছি, করব।” এর পরে শান্তি মিছিলে এ দিন বিপুল জনসামগম নজর কেড়েছে। গোটা দেশেই এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে শাসক দল। একই সঙ্গে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন এ দিন দেশের বিভিন্ন শহরে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন। ঢাকায় যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মানববন্ধন করেন, চট্টগ্রামে হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ দেখান সাংবাদিক, লেখক ও সাস্কৃতিক কর্মীরা।
গত কাল রাষ্ট্রপুঞ্জের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পোর পরে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও বাংলাদেশে হিংসার নিন্দা করে সব মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকারের কাছে। ঢাকায় আমেরিকান দূতাবাসও মৌলবাদী হিংসা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সব মানুষের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা দেওয়ার আর্জি জানিয়েছে। এর পরে বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক একটি বিবৃতিতে বলেছে, ‘সাম্প্রতিক হিংসার পিছনে স্বার্থান্বেষী চক্র যুক্ত। হিংসা মোকাবিলায় সরকার তৎপর।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy