Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Sheikh Hasina

বৌদের ভারতীয় শাড়ি পোড়ান দেখি, বিএনপিকে হাসিনা

বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে কোনও সিদ্ধান্ত না হলেও কয়েক দিন আগে তাদের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি নয়া পল্টনে দলের দফতরের বাইরে নিজের কাশ্মীরি শালটি মাটিতে আছড়ে ফেলে ভারতীয় পণ্য বয়কটকে সমর্থন জানান।

শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৪ ০৭:৫৬
Share: Save:

বাংলাদেশে ভোটের পরে ক্ষমতায় আসা নতুন সরকারকে বিপাকে ফেলতে পণ্যের বাজার অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত হচ্ছে বলে মনে করছে শাসক দল আওয়ামী লীগ। এই দলের নেতৃত্বের অভিযোগ, এই উদ্দেশ্যেই কিছু শক্তি ‘ভারতীয় পণ্য বয়কট’-এর ডাক দিয়েছেন এবং তাকে সমর্থন জানিয়েছে বিরোধী দল বিএনপি। তবে এই হাঁক-ডাকে মানুষ একেবারেই সাড়া দেননি। কিন্তু বিএনপি-র পাল্টা জবাব, এই ডাক দেওয়ার আগে থেকেই তো নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষের জীবনে বিপর্যয় নেমে এসেছে। নিজেদের ব্যর্থতা এখন তারা বিরোধীদের ঘাড়ে চাপাতে চাইছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদের কথায়, “দূর দূর দেশ থেকে আমদানি করার চেয়ে কম খরচে ভারত থেকে বাংলাদেশে বহু পণ্য কিনে আনা যায়। বিএনপির ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাকের মূল উদ্দেশ্য দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করে তোলা ও দ্রব্যমূল্য বাড়ানো, যাতে জনগণের ভোগান্তি হয়।” বিদেশমন্ত্রী মাহমুদ বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা ভারত থেকে আসা পেঁয়াজ খাবেন, আপনাদের নেত্রী ভারত থেকে আসা শাড়ি পরিধান করবেন, আপনাদের মাঠের নেত্রীরাও ভারতীয় শাড়ি পরবেন, ভারত থেকে আসা মাংস দিয়ে ইফতার করবেন, সেহরি খাবেন, ভারতে চিকিৎসা নিতে যাবেন, আবার ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দেবেন— এগুলো হিপোক্রেসি ছাড়া কী?”

বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে কোনও সিদ্ধান্ত না হলেও কয়েক দিন আগে তাদের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি নয়া পল্টনে দলের দফতরের বাইরে নিজের কাশ্মীরি শালটি মাটিতে আছড়ে ফেলে ভারতীয় পণ্য বয়কটকে সমর্থন জানান। কর্মীরা সেই শালটি পুড়িয়েও দেন। ভারতীয় কূটনীতিকদের একাংশ আবার এই ঘটনার একটি সদর্থক দিক খুঁজে বার করেছেন। তাঁদের কথায়— আদতে পাকিস্তানের বিদেশনীতির সমর্থক বিএনপি দলটির সিনিয়র নেতা রিজভি কাশ্মীরি শাল বর্জন করে মেনে নিলেন যে কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাঁদের কথায়, সরকারে থাকার সময়ে বিএনপি কখনও যা স্বীকার করেনি, বর্জনে তা মেনে নিল।

এই সব চাপানউতরের মধ্যেই বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একাত্তরে স্বাধীনতার বিরোধিতা করা শক্তিই এখন ভারতীয় পণ্য বর্জনের পক্ষে সওয়াল করছে। হাসিনা বলেন, “বিএনপির নেতারা যদি বাসায় গিয়ে বৌদের ভারতীয় শাড়িগুলো পোড়ান, বিশ্বাস করব আপনারা সত্যি ভারতীয় পণ্য বর্জন করলেন। ভারতীয় মশলা ছাড়া রান্না তারা খেতে পারবে কি না, এ উত্তরও তাদের দিতে হবে।” স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দলের একটি আলোচনা সভায় হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশে আমরা দেখি— অতি বাম, অতি ডান। স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক ধারাটা তারা কেউ পছন্দ করে না। তারাই এই সব বর্জন টর্জন করছে।”

প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের উত্তর দিতে গিয়ে রিজভি প্রকাশ্য সভায় জানান, তাঁর মামার বাড়ি ভারতে (পশ্চিমবঙ্গে)। বহু দিন আগে তিনি সেখানে গেলে মামা তাঁর স্ত্রীকে একটি শাড়ি দিয়েছিলেন। এখন তিনি স্ত্রীর কাছে জানতে চান, “সেই শাড়িটা কোথায়?” স্ত্রী তাঁকে জানিয়েছেন, শাড়িটি পুরনো হয়ে যাওয়ায় কাঁথা বানিয়েছিলেন। সেই কাঁথাও কবে ব্যবহার করে ছিঁড়ে গিয়েছে! আর কোনও ভারতীয় শাড়ি তাঁর স্ত্রীর নেই।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর রায় আবার এ দিন বলেন, “বাংলাদেশে ভারতের রফতানি করা আসল পণ্য তো আওয়ামী লীগ। ওইটাকে বর্জন করলেই দেশ
মুক্তি পাবে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy