Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Nepal

মার্কিন নজরদারি এড়িয়ে নেপাল মারফত ব্যবসা চিন-ইরানের!

অভিযোগ, দুবাই থেকে পণ্য কেনার নাম করে আসলে ইরানের সঙ্গে লেনদেন করছিল নেপালের সংস্থাগুলি।

নজরে নেপালের একাধিক ব্যাঙ্ক ও সংস্থা।

নজরে নেপালের একাধিক ব্যাঙ্ক ও সংস্থা।

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৪:৫১
Share: Save:

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে যেতে নেপালকে ব্যবহার করছে ইরান এবং চিনের মতো দেশগুলি। একাধিক নেপালি ব্যাঙ্ক, সংস্থা এবং প্রভাবশালী ব্যক্তি মারফত মোটা টাকার লেনদেন করছে তারা। নেপালের সেন্টার ফর ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (সিআইজে), ইন্টারন্যাশনাল কনসর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট (ইসিআইজে) এবং মার্কিন সংবাদ সংস্থা বাজফিডের যৌথ তদন্তে এমন তথ্যই উঠে এল।

মার্কিন সরকারের আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত নজরদারি সংস্থা ফাইনান্সিয়াল ক্রাইমস এনফোর্সমেন্ট নেটওয়ার্কের গোপন নথির ভিত্তিতেই গোটা তদন্ত প্রক্রিয়াটি এগিয়েছে। তাই তদন্ত রিপোর্টটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফিনসেন ফাইলস’। তাতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে ইরান এবং চিনের মতো দেশের সঙ্গে লেনদেনে নেপালের একাধিক ব্যাঙ্ক ও সংস্থার যোগসাজশ উঠে এসেছে।

২৫ পাতার ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০০৬ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৭-র মার্চ পর্যন্ত নেপালের ন’টি ব্যাঙ্ক, ১০টি সংস্থা এবং বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিকে সীমান্ত বাণিজ্যের নামে সন্দেহজনক রকম মোটা অর্থ লেনদেন করতে দেখা গিয়েছে। সোনা, মূল্যবান পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন, বিটুমেন, টেলিকমিউনিকেশন সরঞ্জামের মতো সামগ্রীর পাচারে ওই সমস্ত সংস্থার সংযোগ ধরা পড়েছে। স্ট্যান্ডার্ড চ্যাটার্ড ব্যাঙ্ক, প্রাইম কমার্শিয়াল ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অব কাঠমাণ্ডু, নেপাল ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক, এভারেস্ট ব্যাঙ্ক, মেগা ব্যাঙ্ক, হিমালয়ান ব্যাঙ্ক, অ্যাপেক্স ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক কাস্কি এবং নেপাল বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের মাধ্যেমে সন্দেহজনক লেনদেনগুলি হয়েছে।

আরও পড়ুন: সর্বজ্ঞ ৫৬ ইঞ্চির সীমাহীন অহং, মোদীকে কৃষি-খোঁচা রাহুলের​

রৌনিয়ার ব্রাদার্স অ্যান্ড কোম্পানি, শুভ সমৃদ্ধি ট্রেডার্স প্রাইভেট লিমিটেড, শাস্তা ট্রেডিং কোম্পানি, সেতিদেবী এক্সপোর্ট ইমপোর্ট প্রাইভেট লিমিটেড, এলডি ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড, ফেল্ট অ্যান্ড ইয়ার্ন প্রাইভেট লিমিটেড, উওম্যানস পেপার ক্র্যাফ্ট, অ্যাকমে মানি ট্রান্সফার সার্ভিস এবং সানি এন্টারপ্রাইসেস-সহ নেপালের মোট ১০টি সংস্থার মাধ্যমে লেনদেনগুলি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই সব ব্যাঙ্ক ও সংস্থা মারফত ১১ বছরে প্রায় ২৯ কোটি ২৭ লক্ষ ডলার লেনদেন হয়েছে।

এর মধ্যে রৌনিয়ার ব্রাদার্স অ্যান্ড কোম্পানি, শুভ সমৃদ্ধি ট্রেডার্স থেকে ঘুরপথে দুবাইয়ের কাইট ইন্টারন্যাশনাল এফএডই-র সঙ্গে লেনদেন হয়। মূলত তৈল সামগ্রী রফতানি ও আমদানি করে কাইন ইন্টারন্যাশনাল। তৈলসামগ্রী বাবদ ওই সংস্থাকে টাকা দেওয়ার জন্য স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাঙ্ক থেকে লেটারস অব ক্রেডিটও (এলসি) সংগ্রহ করে রৌনিয়ার ব্রাদার্স অ্যান্ড কোম্পানি এবং শুভ সমৃদ্ধি ট্রেডার্স। তার মাধ্যমে ২০১০-এর ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৪-র ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, চার বছরে বিভিন্ন দেশে ৭ কোটি ১৪ লক্ষ ডলার পাঠায় বলে দাবি করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। তাদের দাবি, দুবাই থেকে পণ্য কেনার নাম করে আসলে ইরানের সঙ্গে লেনদেন করছিল নেপালের সংস্থাগুলি। তার জন্য ভুয়ো কাগজপত্রও তৈরি করে তারা।

আরও পড়ুন: আজও উত্তপ্ত রাজ্যসভা, বেরোতে নারাজ সাসপেন্ড হওয়া ডেরেক-দোলারা​

বিষয়টি নিয়ে সেন্টার ফর ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টসের তরফে কাইট ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, ওই সংস্থার তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। কেনিয়া, জাম্বিয়া, মোজাম্বিক, নেপাল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও কাইট ইন্টারন্যাশনালের শাখা রয়েছে। নিজেদের ওয়েবসাইটে সম্প্রতি নেপালে উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত নতুন প্রকল্পের ঘোষণা করে তারা। কিন্তু খাতায় কলমে সেই প্রকল্পের কোনও হদিশ মেলেনি বলেও জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Nepal US US Sanctions Iran China
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy