Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Corona

গেটস-চুক্তিতেই সস্তা টিকা বিক্রি করতে বাধ্য সিরাম

সূত্রের মতে, ভারত-সহ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিকে কম খরচে করোনার প্রতিষেধক জোগানোর নির্দিষ্ট বরাত দিয়ে সিরাম ইনস্টিটিউটকে ১৫ কোটি ডলার দিয়ে সাহায্য করেছে বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:৪৪
Share: Save:

শুধু ভারতের মানুষ নয়, এ দেশে তৈরি কোভিডের টিকা রোগমুক্তিতে সাহায্য করবে সারা বিশ্বকেই। বিভিন্ন মঞ্চে এ কথা বার বার বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিদেশ মন্ত্রকও গত তিন দিন ধরে প্রতিবেশী দেশগুলিতে কোভিড প্রতিষেধক পাঠানো শুরু করেছে প্রথম দফার ‘সৌজন্য উপহার’ হিসেবে। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কিছুটা কোণঠাসা থাকা মোদী সরকার, আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে টিকা-কূটনীতির সাহায্য নিচ্ছে। তবে বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, সস্তায় ওই টিকা পাঠানোর রহস্য লুকিয়ে রয়েছে ধনকুবের বিল গেটস-এর ফাউন্ডেশনের সঙ্গে হওয়া সিরামের চুক্তিতে।

সূত্রের মতে, ভারত-সহ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিকে কম খরচে করোনার প্রতিষেধক জোগানোর নির্দিষ্ট বরাত দিয়ে সিরাম ইনস্টিটিউটকে ১৫ কোটি ডলার দিয়ে সাহায্য করেছে বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। এই চুক্তির ফলে নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলিতে তিন ডলার বা ২০০-২৫০ টাকার মধ্যে তাদের সংস্থায় উৎপাদিত প্রতিষেধক বিক্রি করতে বাধ্য থাকবে সিরাম। এর ফলে অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা সংস্থা ও নোভাভ্যাক্স সংস্থার প্রতিষেধকের দাম পড়বে ৩ ডলার। যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২২৫ টাকার কাছাকাছি।

সংস্থা জানিয়েছে, এই ১৫ কোটি মার্কিন ডলার বহুদেশীয় সংস্থা ‘গাভি’-কে দেবে বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। ‘গাভি’-র কাছ থেকে সেই অর্থ পাবে সিরাম ইনস্টিটিউট। ‘গাভি’ হল প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপে তৈরি সংস্থা, যারা বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলিতে প্রতিষেধক সহজলভ্য করে তুলতে অর্থ ও অন্য সাহায্য করে থাকে। চুক্তি অনুযায়ী প্রায় ১০ কোটি প্রতিষেধক তৈরি করবে সিরাম। যার অর্ধেক তারা ভারতে ব্যবহার করতে পারবে। বাকি অর্ধেক অল্প দামে নিম্ন আয়ের দেশগুলিতে বিক্রি করতে বাধ্য থাকবে সিরাম সংস্থা। উল্লেখ্য, শুধু ভারত নয়, গোটা বিশ্বের মধ্যেই প্রতি বছর সবচেয়ে বেশি প্রতিষেধক তৈরি করে সিরাম ইনস্টিটিউট। এই সংস্থা প্রতি বছর গড়ে ১৩০ কোটি প্রতিষেধকের ডোজ় তৈরি করে। সে কারণেই বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন সিরাম ইনস্টিটিউট-কেই বরাত দিয়েছে।

অথচ, আজও সাংবাদিক বৈঠকে বিস্তারিত ভাবে জানানো হয়েছে, কোন দেশকে কত ডোজ় উপহার দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু অভিযোগ, বিদেশি রাষ্ট্রগুলিতে প্রতিষেধক পাঠানোর যে আসলে আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতাও রয়েছে, যা কৌশলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। পাশাপাশি বাণিজ্যিক দিকটিও রয়েছে।

এ দিকে বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, গত কাল বাংলাদেশকে ২০ লক্ষ এবং নেপালকে ১০ লক্ষ ডোজ় প্রতিষেধক উপহার দেওয়ার পরে আজ মায়ানমার, মরিশাস এবং সেশেলস-কে পাঠানো হয়েছে যথাক্রমে ১৫ লক্ষ, ১ লক্ষ এবং ৫০ হাজার ডোজ়। এর পরে শ্রীলঙ্কা এবং আফগানিস্তানেও সাহায্য হিসেবে পাঠানো হবে প্রতিষেধক। অনুরাগের কথায়, ‘‘চুক্তি অনুযায়ী বাণিজ্যিক ভাবে এর পরে সৌদি আরব, বাংলাদেশ, মায়ানমারে প্রতিষেধক যাবে। ইতিমধ্যেই ব্রাজিল এবং মরক্কোতে বাণিজ্যিক রফতানি করা হয়ে গিয়েছে।’’

দেশের দরিদ্র মানুষকে কী ভাবে প্রতিষেধক দেওয়া হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। এমতাবস্থায় ‘বিশ্ব মানবতার’ জন্য তা পাঠানোয় স্বর তুলছেন বিরোধীরা। আজ এই প্রসঙ্গে অনুরাগ বলেছেন, ‘‘ঘরোয়া চাহিদা এবং ধাপে ধাপে প্রতিষেধক দেওয়ার পরিকল্পনাকে মাথায় রেখে তবেই অংশীদার দেশগুলিতে রফতানির নীতি নেওয়া হবে আগামী কয়েক সপ্তাহে। এটা নিশ্চিত করা হবে যাতে দেশের মানুষের জন্য যথেষ্ট প্রতিষেধক মজুত থাকে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Corona COVID-19 Vaccine Serum
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy