Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Quantum Computer

আলো ব্যবহার করে কোয়ান্টাম কম্পিউটার! ফোটোনিক চিপ তৈরি করে চমক বাঙালি বিজ্ঞানীর

বিশ্বের তাবড়-তাবড় দেশ এই দৌড়ে শামিল। এক বাঙালি বিজ্ঞানী— রক্তিম হালদার— এই দৌড়ে আছেন। তাঁর সহযোগী দুই বিজ্ঞানী মাইকেল ক্যুজ এব‌ং হাতাম মাহ্‌মুদ্‌ল্যু। ওঁরা তৈরি করেছেন ফোটোনিক চিপ।

An image of Quantum Computer

তিন বিজ্ঞানী। মাইকেল ক্যুজ ও হাতাম মাহ্‌মুদ্‌ল্যুয়ের সঙ্গে রক্তিম হালদার। — ফাইল চিত্র।

পথিক গুহ
শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:৩১
Share: Save:

চলেছে একটা দৌড়। কোয়ান্টাম কম্পিউটারের জন্য। এমন কম্পিউটার যা কাজের দিক দিয়ে হবে অনেক, অ-নে-ক, ক্ষমতাবান। তবে ই-ব্যাঙ্কিং, ই-কমার্সের বারোটা বাজবে। এই কম্পিউটার চাইলে হ্যাক করা কোনও সমস্যা নয়, পাসওয়ার্ড জানা কোনও সমস্যা নয়।

বিশ্বের তাবড়-তাবড় দেশ এই দৌড়ে শামিল। এক বাঙালি বিজ্ঞানী— রক্তিম হালদার— এই দৌড়ে আছেন। তাঁর সহযোগী দুই বিজ্ঞানী মাইকেল ক্যুজ এব‌ং হাতাম মাহ্‌মুদ্‌ল্যু। ওঁরা তৈরি করেছেন ফোটোনিক চিপ।

মানে, ওঁরা ব্যবহার করছেন আলোর কণা ফোটন। আরও বড় কথা, এই চিপ ব্যবহার করলে পারিপার্শ্বিকতার প্রতিবন্ধকতা নিমেষে উধাও। পারিপার্শ্বিক প্রতিবন্ধকতা কোয়ান্টাম কম্পিউটারের একটা বড় উপদ্রব। যে কারণে গুগল যে কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি করেছে সেটা মাইনাস ২৭৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে নিয়ে যেতে হয়। এই চিপে সেটার দরকার নেই।

১৯৩৫ সালে অস্ট্রিয়ার বিজ্ঞানী আরউইন শ্রয়েডিঙ্গার কোয়ান্টাম মেকানিক্স কত অদ্ভুতুড়ে সেটা প্রমাণ করতে গিয়েছিলেন। তিনি কল্পনায় এক পরীক্ষা করেছিলেন।একটা বেড়াল, একটা তেজস্ক্রিয় রাসায়নিক, পটাশিয়াম সায়ানাইডের শিশি, হাতুড়ি, এক ডালাবন্ধ বাক্সের মধ্যে রাখা হল। যে মুহূর্তে রাসায়নিক তেজস্ক্রিয় হল, সে মুহূর্তে ঘা পড়বে হাতুড়িতে, ছড়াবে পটাশিয়াম সায়ানাইড গ্যাস, মরবে বেড়াল। যেহেতু তেজস্ক্রিয় রাসায়নিক কখন ভাঙবে বা না-ভাঙবে, তা সম্পূর্ণ সম্ভাবনার ব্যাপার, সে হেতু এক ঘণ্টা ডালাবন্ধ বাক্সের মধ্যে রাসায়নিক ভাঙতেও পারে, না-ভাঙতেও পারে। তার মানে, বেড়ালটা মরতেও পারে, না-ও মরতে পারে।

এক ঘণ্টা বাক্সের ডালা বন্ধ রইল। এর মধ্যে কী অবস্থা? বেচারা বেড়াল মরতেও পারে, না-মরতেও পারে।তার মানে, মরা এবং বাঁচা বেড়াল একটা থেকে দু’টো হয়ে গেল। এক ঘণ্টা বাদে বাক্সের ডালা খুললে আমরা কী দেখব? দুটো বেড়াল নয়, একটাই বেড়াল। দুটোর বদলে একটা বেড়াল কোয়ান্টাম মেকানিক্সের অনুসারী। কোয়ান্টাম মেকানিক্স বলছে, দেখা মানে রেকর্ডেড ফেনোমেনন। এই জন্যই অ্যালবার্ট আইনস্টাইন জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আকাশে না দেখলেচাঁদটা নেই?

কোয়ান্টাম কম্পিউটার একটা বেড়াল থেকে দুটো বেড়াল(মড়া এবং বাঁচা) হয়ে যাওয়ার ব্যাপার। এই জন্যই কোয়ান্টাম কম্পিউটার এত শক্তিশালী। সাধারণ কম্পিউটার যখন এক পা এগোয়, তখন কোয়ান্টাম কম্পিউটার এগোয় দুই পা। রক্তিম, মাইকেল ও হাতাম যে চিপ তৈরি করেছেন, তা কাজ করতে পারবে ‘কোয়ান্টাম এনট্যাঙ্গলমেন্ট’ মেনে। এই বিষয়ে কাজ করে তিন বিজ্ঞানী গত বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।

‘এনট্যাঙ্গলমেন্ট’ হল কোয়ান্টামের আর এক অদ্ভুতুড়ে ব্যাপার। এতটাই অবিশ্বাস্য যে আইনস্টাইন পর্যন্ত একে বলেছিলেন, ‘দূর থেকে ভুতুড়ে’ প্রভাব। এটা এমনও এক প্রভাব যে, দূরবর্তী দুটো কণার মধ্যে কাজ করে। আলোর কণা ফোটন নিয়ে কাজ করায় এটায় সুবিধা হয়েছে।

এই চিপ তত ঠান্ডা করতে হয় না। ক্ষুদ্র এবং হালকা বলে সহজেই বয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। এই চিপ ভবিষ্যতে নতুন দিশা দেখাবে— এই আশা তিন বিজ্ঞানীর।

অন্য বিষয়গুলি:

Quantum Computer Scientists
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy