বাসমা বিন্ট সৌদ। ছবি বিবিসি।
যেখানে পোশাক থেকে শুরু করে গাড়ি চালানোর অধিকার, সব ক্ষেত্রেই গণ্ডি টেনে দিয়েছে প্রশাসন, সেই দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে মানবাধিকার এবং বিশেষত নারীদের এক্তিয়ার নিয়ে কথা বলতেন তিনি!
ফলে আজ না-হোক কাল যে তাঁকে রাজপরিবারের রোষের মুখে পড়তে হবেই, তা অনুমান করেছিলেন অনেকেই। হয়েছেও তেমনটাই। রাজকন্যা হওয়া সত্ত্বেও রাজকুমারী বাসমা বিন্ট সৌদ বিন আব্দুলাজ়িজ় আল-সৌদের ঠাঁই হয় রাজনৈতিক বন্দিদের সঙ্গে। কারাগারে। গ্রেফতারির সময় সঙ্গে থাকায় মায়ের সঙ্গে বন্দি হতে হয় তাঁর মেয়ে সুহুদ আল-শারিফকেও। তবে বছর তিনেকের সেই বন্দি দশা কাটিয়ে সম্প্রতি মুক্তি পেলেন এই দু’জনেই। এর নেপথ্যে নাকি রয়েছেন সৌদির যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে চিকিৎসার জন্য সুইৎজ়ারল্যান্ডে যাওয়ার পথে হঠাৎ উধাও হয়ে যান রাজকুমারী বাসমা। আদতে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁকে। কোনও অভিযোগ ছাড়াই! এপ্রিলে প্রথম পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন বাসমা। জানাতে পারেন যে সুইৎজ়ারল্যান্ডের বিমান ধরার আগেই তাঁকে ধরে নিয়ে আসা হয়েছে।
২০২০ সালে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেছিলেন বাসমা। লিখেছিলেন, বছরখানেকের বেশি সময় ধরে তাঁকে রিয়াধের আল-হা’ইর জেলে বন্দি করে রাখা হয়েছে। তিনি অসুস্থ এ কথা জানিয়ে তিনি সৌদির বর্তমান যুবরাজ তথা তাঁর খুড়তুতো ভাই মহম্মদ সলমনের কাছে আবেদন জানান যে তাঁকে যেন মুক্ত করার ব্যবস্থা করা হয়। সঙ্গে তাঁর চিকিৎসারও ব্যবস্থা করা হয়।
সৌদির দ্বিতীয় শাসক রাজা সৌদের কনিষ্ঠ কন্যা এই রাজকুমারী বাসমা। তবে রাজপরিবারের অন্দরে ‘নারীদের প্রতি চলা অবিচারের’ বিপক্ষে বার বার সুর চড়াতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। যা কি না রাজপরিবারের কাছে অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল বলে জানাচ্ছেন রাজপরিবারের পরিচিতেরা। যে কারণে প্রাথমিক ভাবে কোনও কারণ না-দর্শিয়েই বাসমা এবং তাঁর কন্যাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে দাবি তাঁদের। পরে অবশ্য বলা হয় যে, পাসপোর্ট নিয়ে কারচুপির দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে বাসমাদের। যা কি না একেবারেই মিথ্যে বলে জানিয়েছেন তাঁর আত্মীয়েরা।
বাসমার মুক্তি পাওয়ার কথা জানিয়ে টুইট করেছে একাধিক মানবাধিকার সংগঠন। রাজকুমারীর আইনজীবী হেনরি এসট্রামান্টের কথায়, ‘‘বাসমা এবং তাঁর মেয়ে সুহুদ জেদ্দায় তাঁদের বাড়িতে ফিরে গিয়েছেন গত ৬ জানুয়ারি।’’
যদিও বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন বা রাজপরিবারের মুখে কুলুপ। আগেও অবশ্য বাসমাকে নিয়ে কখনও কোনও বাক্য ব্যয় করতে দেখা যায়নি এই দুই পক্ষকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy