এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র।
শেষ মুহূর্তে কোনও পরিবর্তন না হলে আগামিকাল সন্ধ্যায় কাজ়াখস্তানে আয়োজিত এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে পার্শ্ববৈঠকে বসছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে এ খবর জানা গিয়েছে।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের তৃতীয় দফায় বিদেশনীতিতে এটি নিঃসন্দেহে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক (এখনও পর্যন্ত) হতে চলেছে। প্রসঙ্গত, এই সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। কিন্তু সর্বোচ্চ স্তরে চিনের সঙ্গে এখনই কোনও দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে (কাজ়াখস্তানে উপস্থিত রয়েছেন চিনের প্রেসিডেন্ট) যেতে চাইছে না সাউথ ব্লক। এই বৈঠকে যে পূর্ব লাদাখের জট কেটে চিনা সেনা ভারতের জমি থেকে পিছু হঠবে এমনটা নয়। তাই, ঘরোয়া রাজনীতির জন্য তেমন কিছু নিয়ে ফিরতে পারবেন না মোদী। সম্প্রতি লোকসভায় যে ভাবে উগ্র বিরোধিতা করতে দেখা গেল কংগ্রেস তথা বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’কে, তাতে চিন-নীতি নিয়ে সরকারের ব্যর্থতাকে তুলে আবার আসর গরম করতে পারেন রাহুল গান্ধীরা।
তাই শীর্ষ পর্যায়ের নীচের স্তরে এই বৈঠককে রাখা হল। প্রসঙ্গত প্রায় এক বছর পর মুখোমুখি বৈঠকে বসতে চলেছেন দুই বিদেশমন্ত্রী। এই বছর মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে ওয়াং ই এবং জয়শঙ্করের স্বল্প সময়ের জন্য সাক্ষাৎ হয়েছিল। এ বারের সাক্ষাৎ একটি সাম্প্রতিক সংঘাতের ঠিক পরেই হচ্ছে, তাই আন্তর্জাতিক নজর আরও বেশি করে থাকবে জয়শঙ্কর-ওয়াং বৈঠকের দিকে। ভারতের আতিথ্যে এবং সম্পূর্ণ সমর্থনে আমেরিকার হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের প্রাক্তন তথা ডেমোক্র্যাট নেত্রী স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি-সহ সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল হিমাচল প্রদেশের ধরমশালায় এসে দিন পনেরো আগে বৈঠক করেছেন তিব্বতের ধর্মগুরু দলাই লামার সঙ্গে। আর তারপরই প্রত্যাশিত ভাবে ভূকৌশলগত বাগযুদ্ধ শুরু হয়ে যায় আমেরিকা এব চিনের মধ্যে, যার মাঝে রয়েছে ভারত।
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, মোদী তৃতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার এক পক্ষকালের মধ্যেই চিন বিরোধিতার এই মহামঞ্চ গড়েছেন সচেতন ভাবেই। চিনের একাধিপত্যের বিরুদ্ধে প্রথমেই সরাসরি লড়াইয়ের বার্তা না দিয়ে, পরোক্ষ কৌশল নিয়েছেন তিনি। পূর্ব লাদাখে ভারতের জমি দখল করে বসে আছে বেজিংয়ের লাল ফৌজ। মোদী সরকার তার প্রায় গোটা দ্বিতীয় দফা জুড়ে বহু চেষ্টা করেও সন্তোষজনক ও সামগ্রিক ভাবে চিনা সেনাকে পশ্চাদপসরণ করাতে করাতে পারেনি। ফলে তিব্বতের তাস যদি আমেরিকা খেলে তা ভারতের জন্য সুবিধাজনক।
লোকসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে ইতিবাচক এবং গঠনমূলক দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশই তাদের সীমান্তে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবে। এ-ও বলেছিলেন, ‘‘ভারত-চিনের স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক শুধু দু’দেশের জন্যই নয়, সমগ্র বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’’ জবাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছিল চিনা বিদেশ মন্ত্রক, যদিও বাস্তবের জমিতে প্রতিফলন এখনও মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy