প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজের বক্তৃতায় গত কাল যে বিষয়গুলির উল্লেখ করেছিলেন, আজ ব্রিকস সম্মেলনে তার পুনরাবৃত্তি করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বিদেশমন্ত্রীর বক্তব্যে যুদ্ধবিরোধী স্বর যেমন রয়েছে, তেমনই নির্দিষ্ট ভাবে রয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের দাবি। বকলমে যা ভারতের স্থায়ী সদস্যপদের দাবি।
জয়শঙ্কর কাজ়ানে বলেছেন, বিশ্বায়নের সুফল বড়ই অবিন্যস্ত। কোভিড এবং বিভিন্ন সংঘাতের ফলে ‘গ্লোবাল সাউথ’ দেশগুলির উপরে চাপ পড়েছে, যা স্বাস্থ্য, খাদ্য, জ্বালানির নিরাপত্তার মতো ক্ষেত্রগুলিতে বিশেষ ভাবে প্রকট। জয়শঙ্করের কথায়, ‘‘আন্তর্জাতিক কাঠামোকে আমরা কী ভাবে আরও জোরদার করতে পারি? প্রথমত, স্বাধীন মঞ্চগুলিকে প্রসারিত করে। এখানেই গ্লোবাল সাউথের ক্ষেত্রে ‘ব্রিকস’ নিজের অবদান রাখতে পারে। দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং মেকানিজ়মের সংস্কার করে, বিশেষত রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী ও অস্থায়ী সদস্যপদ এবং বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাঙ্কগুলির ক্ষেত্রে— রাষ্ট্রপুঞ্জের মতোই যাদের কার্যপদ্ধতি এখন অচল। তৃতীয়ত, উৎপাদনের আরও বেশি ঘাঁটি তৈরির মাধ্যমে অর্থনীতির গণতন্ত্রীকরণ করে। চতুর্থত, ঔপনিবেশিক ছায়া থেকে বেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিকাঠামোগত ত্রুটিগুলি সংশোধন করে। সীমান্ত এবং সার্বভৌমত্বকে অক্ষুণ্ণ রেখেই আরও বেশি যোগাযোগের বিকল্প বিশ্বের প্রয়োজন। এবং পঞ্চমত, নতুন উদ্যোগ ও অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়ে।’’
ইউক্রেন এবং পশ্চিম এশিয়ায় চলা যুদ্ধের প্রসঙ্গ তুলে বিদেশমন্ত্রী বলেন, সময়টা যে যুদ্ধের নয়, প্রধানমন্ত্রী মোদী তা ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন। সংঘাত মেটানোর পথ আলোচনা এবং কূটনীতি। বিদেশমন্ত্রীর কথায়, ‘‘এক বার সমঝোতায় পৌঁছনো গেলে তাকে অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলা উচিত। আন্তর্জাতিক আইন মানা উচিত। সঙ্গে দরকার সন্ত্রাসবাদের প্রতি শূন্য সহনশীলতা।’’ দিল্লি-বেজিং সাম্প্রতিক রসায়নের আবহে এই
বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)