ছবি: রয়টার্স।
ট্রায়াল শেষ হওয়ার আগেই গত মাসে নিজেদের সম্ভাব্য প্রতিষেধকটিকে ছাড়পত্র দিয়ে দেয় রাশিয়া। অথচ গোটা পৃথিবীর কাছে তারা গোপন রাখে ভ্যাকসিনের ‘ফর্মুলা’। রুশ-রহস্যে ধন্দে অনেকেই। এ অবস্থায় শুক্রবার একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হল বিজ্ঞান পত্রিকা ‘দ্য ল্যানসেট’-এ। তাতে জানানো হয়েছে, রুশ ভ্যাকসিন ‘স্পুটনিক ভি’র ট্রায়ালে যাঁরা অংশ নিয়েছিলেন, কোনও ‘জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া’ ছাড়াই তাঁদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত কম সংখ্যক লোকের উপরে পরীক্ষা হয়েছে। ফলে এই ট্রায়াল থেকে ভ্যাকসিন কতটা নিরাপদ, কতটাই বা কার্যকর, তা বলা মুশকিল।
ল্যানসেটের গবেষণাপত্রে জানানো হয়েছে, দু’টি ছোট হিউম্যান ট্রায়াল করেছেন মস্কোর বিজ্ঞানীরা। প্রতিটিতে অংশ নিয়েছিলেন ৩৮ জন সুস্থ ব্যক্তি। অর্থাৎ মোট ৭৬ জন। তাঁদের বয়স ছিল ১৮ থেকে ৬০-এর মধ্যে। প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ় দেওয়া হয়। ২১ দিন পরে বুস্টার-সহ দ্বিতীয় ডোজ় প্রয়োগ করা হয় (বুস্টার হল, যা ভ্যাকসিনের ক্ষমতা ত্বরান্বিত করে)। ৪২ দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল অংশগ্রহণকারীদের। গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, তিন সপ্তাহের মধ্যেই সকলের দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।
ট্রায়ালের আর একটি বিশেষত্ব, এতে অংশগ্রহণকারীরা সকলেই জানতেন, তাঁদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ কি না, এতে ‘র্যানডোমাইজ়ড ট্রায়াল’ হয়নি। যেখানে অংশগ্রহণকারীদের দু’টো দলে ভাগ করে এক দলকে সম্ভাব্য ভ্যাকসিন, অন্য দলটিকে কোনও সাধারণ টিকা দেওয়া হয়। কাকে কী দেওয়া হয়েছে, তা জানানো হয় না। এ ক্ষেত্রে ‘ওপেন লেবেল’ ট্রায়াল হয়েছিল।
বিশ্বে করোনা
মৃত - ৮,৭৬,৩৪৫
আক্রান্ত - ২,৬৬,৭১,৩৩৯
সুস্থ - ১,৮৭,৮৭,৯৫৩
গবেষকদের বক্তব্য, দীর্ঘমেয়াদি ফল ও নিরাপদ কতটা, তা জানতে র্যানডোমাইজ়ড ট্রায়াল জরুরি। ল্যানসেটের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, মোট ৭৬ জন অংশগ্রহণকারী ১৮০ দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালে ৪০ হাজার লোকের অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু ফেজ়-থ্রি ট্রায়ালের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার আগে ভ্যাকসিন বাজারে আনার বিরোধী প্রায় সকল বিজ্ঞানী। জন্স হপকিন্সের এক বিজ্ঞানীর কথায়, ‘‘ভ্যাকসিনটি মন্দ নয়, এ নিয়ে উৎসাহ বাড়ছে, কিন্তু ভীষণই ছোট পরীক্ষা।’’ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-ও প্রতিষেধক তৈরির নির্দিষ্ট গাইডলাইন মেনে চলার আর্জি জানিয়েছে রাশিয়াকে।
যদিও সেপ্টেম্বরেই বাণিজ্যিক ভাবে ভ্যাকিসন তৈরিতে উৎসাহী রাশিয়া। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও নভেম্বরে ভোটের আগে ভ্যাকসিন তৈরি করে ফেলতে চান। চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীদের ক্ষোভ, রাজনীতির টাইমটেবিলে গবেষণা চলবে নাকি! হু-এর মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস আজ স্পষ্টই বলেছেন, ‘‘যে সব সম্ভাব্য প্রতিষেধকের এখনও পর্যন্ত ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়েছে, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সেগুলি কতটা কার্যকর, কোনও সংস্থাই তার স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়নি। তা ছাড়া, ভ্যাকসিন কতটা নিরাপদ, তা জানতে তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল দীর্ঘ সময় নিয়ে করা উচিত।’’ এ থেকেই হু-র অনুমান, প্রতিষেধক আসতে ২০২১-এর মাঝামাঝি হয়ে যাবে। তার আগে, সম্ভাবনা কম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy