মা’কে নিয়ে দেশ ছাড়ার সুযোগ এসেছিল ভ্যালেরিয়ার কাছে। কিন্তু দেশের মানুষগুলোকে এমন অসহায় অবস্থার মধ্যে ফেলে যেতে পারেননি। বার বার ফিরিয়ে দিয়েছেন দেশান্তরী হয়ে শান্তিতে বাঁচার প্রস্তাব। সেই ভ্যালেরিয়াই মরিয়া হয়ে ওষুধের খোঁজ করছিলেন, মায়ের জন্য। ওষুধের বদলে মিলল গোলা।
গ্রাফিক— সনৎ সিংহ।
দনেৎস্কে রুশ বাহিনীর লাগাতার বোমাবর্ষণের মধ্যেও কাজ করেছেন। অকুতোভয়ে। গোলার আঘাতে জখম ব্যক্তিদের বিরামহীন ভাবে চিকিৎসা বিলিয়েছেন। দনেৎস্কে হামলা থেমে যাওয়ার পর মা’কে নিয়ে চলে এসেছেন কিভের শহরতলিতে। সেখানেও কাজে নেমে পড়তে দেরি করেননি। এ হেন ভ্যালেরিয়া মাকসেটস্কার ছিন্নভিন্ন শরীর ছড়িয়ে পড়ে রয়েছে কিভের রাস্তায়।
পেশায় চিকিৎসাকর্মী বছর ৩১-এর ভ্যালেরিয়া আদতে দনেৎস্কের বাসিন্দা। কিন্তু সেখানে রাশিয়ার সহায়তায় বিদ্রোহী বাহিনীর কব্জা সম্পূর্ণ হওয়ার পর মাকে নিয়ে পালিয়ে আসেন কিভের শহরতলিতে। দনেৎস্কে আহতদের চিকিৎসা করতেন। কিভের শহরতলিতে পৌঁছেও সেই কাজ ছাড়তে পারেননি ভ্যালেরিয়া। যোগ দেন ‘ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট (ইউএসএআইডি)’-এ। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে সেই সংস্থার হয়েই আহতদের চিকিৎসা চালাচ্ছিলেন। মাকে নিয়ে দেশ ছাড়ার সুযোগ এসেছিল ভ্যালেরিয়ার কাছে। কিন্তু দেশের মানুষগুলোকে অসহায় অবস্থার মধ্যে ফেলে যেতে পারেননি। বার বার ফিরিয়ে দিয়েছেন দেশান্তরী হয়ে শান্তিতে বাঁচার প্রস্তাব। সেই ভ্যালেরিয়াই কার্যত মরিয়া হয়ে ওষুধের খোঁজ করছিলেন, মায়ের জন্য। কিন্তু ওষুধের বদলে মিলল গোলা। মুহূর্তে ছিন্নভিন্ন হয়ে ভ্যালেরিয়ার দেহ ছড়িয়ে পড়ল কিভের রাস্তায়। গোলার অভিঘাতে মৃত্যু হয়েছে অদূরেই গাড়িতে বসে থাকা ভ্যালেরিয়ার অসুস্থ মায়েরও।
I'm enormously sad to share the death of Valeriia "Lera" Maksetska—proud Ukrainian, beloved @USAID implementing partner & brilliant, compassionate leader on building social cohesion & fighting disinformation.
— Samantha Power (@PowerUSAID) March 9, 2022
She was killed by the Russian military just shy of her 32nd birthday. pic.twitter.com/ZoMJJN2CJW
সূত্রের খবর, রুশ বাহিনীর ট্যাঙ্কের ছোড়া গোলাতেই মৃত্যু হয়েছে ভ্যালেরিয়ার। আর মাত্র ক’দিন পরই ছিল যাঁর ৩২তম জন্মদিন। ভ্যালেরিয়ার মৃত্যুর খবর দিয়েছেন ইউএসএআইডি-র সামান্থা পাওয়ার।
২০১৪-য় রাশিয়ার ক্রাইমিয়া আগ্রাসনের সময়ও আহতদের চিকিৎসায় মাঠে নেমেছিলেন ভ্যালেরিয়া। সামান্থা শোকবার্তায় জানিয়েছেন, ‘রুশ আগ্রাসন শুরুর সময়ই ইউক্রেন ছাড়তে পারতেন। কিন্তু ভ্যালেরিয়া মনে করতেন, তিনি যে কাজে আছেন, তা যুদ্ধের সময়ই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই দেশ ছেড়ে যাওয়ার প্রশ্নই নেই। মায়ের ওষুধের খোঁজ করতে হন্নে হয়ে ঘুরছিলেন, কিন্তু রাশিয়ার গোলা তাঁকেও ছাড়ল না।’
২৪ ফেব্রুয়ারি মস্কো থেকে ইউক্রেনে হামলা ঘোষণা করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার পর থেকে ২৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ প্রাণের দায়ে ইউক্রেন ছেড়েছেন। মৃত্যু হয়েছে শিশু, মহিলা-সহ শতাধিক মানুষের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy