দু’মাস হতে চলল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যুদ্ধের আবহে নেটমাধ্যম থেকে বিভিন্ন খবরের চ্যানেলে বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা এনেছে পুতিন সরকার। কিন্তু যুদ্ধের খবর পেতে কৌতূহলী রাশিয়ার সাধারণ মানুষ। এই অবস্থায় তাঁরা নির্ভর করছেন একটি পরিচিত অ্যাপের উপর। সেখানেই চলছে যুদ্ধ নিয়ে আলাপ-আলোচনা। সাংবাদিকরাও লেখালেখি করছেন সেখানে।খবর পরিবেশন করছেন ওইঅ্যাপে। অ্যাপটির নাম টেলিগ্রাম।
গত দু’মাসে দুবাই ভিত্তিক এই মেসেজিং অ্যাপেরুশ ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে হু-হু করে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পরপরই প্রায় ৪৫ লক্ষ রাশিয়ান নিজেদের স্মার্টফোনে এই অ্যাপটি ডাউনলোড করেছেন। সেন্সর টাওয়ার নামে একটি সংস্থার রিপোর্ট বলছে, ২০১৪ থেকে সব মিলিয়ে রাশিয়ায় প্রায় সাড়ে ১২ কোটি স্মার্টফোনে ডাউনলোড হয়েছে এই অ্যাপ।
রুশ সাংবাদিক ফারিদা রুস্তমোভাই প্রথম টেলিগ্রামে অ্যাপে যুদ্ধের খবরাখবর দিতে শুরু করেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ইউক্রেন আক্রমণের সিদ্ধান্ত, সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে রাশিয়ার বিরোধীপক্ষের বক্তব্য, যুদ্ধ পরিস্থিতি— তাঁর প্রতিবেদনগুলিতে এই বিষয়গুলি তুলে ধরেন ওই সাংবাদিক। ফারিদার প্রথম প্রতিবেদনের পর তাঁর সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা হয়ে যায় ২২ হাজার।
উদাহরণ আরও আছে। গত মাসে ‘ইকো অব মস্কো’ নামে রেডিও স্টেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এর ডেপুটি এডিটর টেলিগ্রামে নিজের অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলেন। দাবি করা হচ্ছে, এতে তাঁর শ্রোতার সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। রাশিয়ার অন্য এক সাংবাদিক জানাচ্ছেন, টেলিগ্রাম অ্যাপই একমাত্র মাধ্যম যেখানে দেশের বাসিন্দারা যুদ্ধ নিয়ে স্বাধীন ভাবে আলোচনা করছেন। বস্তুত, টুইটার, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি অ্যাপ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার পর টেলিগ্রামই হয়ে উঠেছে রাশিয়ার জনপ্রিয়তম অ্যাপগুলির মধ্যে একটি। যদিও এই অ্যাপেও নজরদারির চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এখানেও নাকি নিষেধাজ্ঞা আনার চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশাসন।