ইউক্রেনের বাহিনীতে ছেলের যোগ দেওয়ার খবরে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন রবির বাড়ির লোকেরা। যোগাযোগ হলে ছেলেকে বার বার বুঝিয়ে নিরস্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।
ইউক্রেনের হয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে হাতে বন্দুক তুলে নিয়েছেন রবিচন্দ্রন।
দেশের হয়ে সেবা করাই তাঁর স্বপ্ন ছিল। আর সেই স্বপ্ন নিয়েই ভারতীয় সেনায় যোগ দিতে গিয়েছিলেন তামিলনাড়ুর কোয়েম্বত্তূরের যুবক সৈনিকেশ রবিচন্দ্রন। কিন্তু প্রত্যাখ্যাত হন বলে দাবি তাঁর। এর পরই ২০১৮-তে ইউক্রেনের খারকিভে পাড়ি দেন রবি।
খারকিভে ন্যাশনাল অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা শুরু করেন। এ বছরের জুলাইয়ে সেই কোর্স শেষ হওয়ার কথা। ইউক্রেনে অ্যারোস্পেস নিয়ে পড়তে গেলেও সেনা হওয়ার সুপ্ত বাসনা থেকেই গিয়েছিল রবির মনে। আর সেই সুযোগটাও এসে গেল ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে।
নিজের দেশের হয়ে শত্রুপক্ষের বিরুদ্ধে বন্দুক তুলে নিতে পারেননি ঠিকই, কিন্তু যখন তিনি দেখলেন ইউক্রেনে আধাসেনায় লোক নিচ্ছে, বিশেষ করে এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে, রবি আর নিজেকে গুটিয়ে রাখতে পারেননি। জর্জিয়ান ন্যাশনাল লিজিয়ঁ-র আধাসেনার ইউনিটে নাম লেখান।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হতেই রবির বাড়ির লোকেরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। ছেলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। এক বার যোগাযোগ হলেও তা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফের ভারতীয় দূতাবাসের সহযোগিতায় রবির সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁর বাড়ির লোকেরা। কিন্তু রবি তাঁদের সকলকে চমকে দিয়ে জানিয়ে দেন, বাড়িতে ফেরা সম্ভব নয়। তিনি ইউক্রেনের সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছেন। এখন রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়ছেন। রবির বাড়িতে এসে গোয়েন্দারাও সে খবর দিয়ে গিয়েছেন।
ইউক্রেনের বাহিনীতে ছেলের যোগ দেওয়ার খবরে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন রবির বাড়ির লোকেরা। যোগাযোগ হলে ছেলেকে বার বার বুঝিয়ে নিরস্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।
রবির এক বন্ধু জানিয়েছেন, দ্বাদশ পাশ করার পর ভারতীয় সেনায় যোগ দিতে গিয়েছিলেন রবি। কিন্তু তাঁর কম উচ্চতার জন্য বাতিল হয়ে যান। দু’বারই একই ঘটনা ঘটে তাঁর সঙ্গে। এর পরই আমেরিকার বাহিনীতে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নেন। চেন্নাইয়ে আমেরিকার দূতাবাসে গিয়ে খোঁজখবর নেন, তিনি কি সে দেশের বাহিনীতে যোগ দেওয়ার যোগ্য। কিন্তু সেই আশাও নিভে যাওয়ায় অ্যারোস্পেস নিয়ে পড়াশোনার জন্য ইউক্রনে পাড়ি দেন ২০১৮-তে। খারকিভে বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে থেকেই পড়াশোনা করছেন।
২০২১-এর জুলাইয়ে শেষ বার বাড়িতে এসেছিলেন রবি। মাস দেড়েক বাড়িতে কাটিয়ে ফের খারকিভে ফিরে যান। রবির এক বন্ধু জানান, মাসখানেক আগে বাড়িতে ফোন করেছিলেন রবি। তখন জানিয়েছিলেন যে, একটি ভিডিয়ো গেম তৈরির সংস্থায় পার্টটাইম কাজ করছেন। তাঁর কথায়, “কিন্তু ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার চার দিনের মধ্যেই রবির সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেনি পরিবার। তার পরই সংবাদমাধ্যমে খবর পাই যে রবি ইউক্রেনের বাহিনীতে যোগ দিয়েছে। এই ঘটনায় আমরা সকলেই স্তম্ভিত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy