Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Ukraine

Russia-Ukraine War: ইউক্রেনে ধ্বংস হচ্ছে ঝাঁকে ঝাঁকে রুশ ট্যাঙ্ক, নিরাপত্তা পর্যালোচনা শুরু করল ভারত

ভ্লাদিমির পুতিনের দীর্ঘমেয়াদি সামরিক ও কূটনৈতিক রণকৌশলের বিষয়টি ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের অনেকে।

ইউক্রেন যুদ্ধে ধ্বংস হওয়া রুশ ট্যাঙ্ক।

ইউক্রেন যুদ্ধে ধ্বংস হওয়া রুশ ট্যাঙ্ক। ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২২ ১৬:০১
Share: Save:

ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত কৌশলগত পর্যালোচনা শুরু করল ভারত। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের পর ভারতীয় সেনার কয়েক জন অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিককে ওই পর্যালোচনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। লেফটেন্যান্ট জেনারেল স্তরের এই অফিসারদের প্রত্যেকেই আধুনিক স্থলযুদ্ধের বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত। এঁদের মধ্যে রয়েছেন শ্রীনগরের ১৫ নম্বর কোরের প্রাক্তন কমান্ডার তথা জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য সুব্রত সাহা।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দীর্ঘমেয়াদি সামরিক ও কূটনৈতিক রণকৌশলের বিষয়টি ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের অনেকেই। বিশেষত, গত এক সপ্তাহে ডনবাস (ইউক্রেনের ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলকে একত্রে এই নামে ডাকা হয়) অঞ্চল ঘিরে রুশ সামরিক তৎপরতার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সেনা অভিযানের আগের দিন পুতিন ওই দুই অঞ্চলকে ‘স্বাধীন রাষ্ট্র’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। কিন্তু এখনও সেখানে রুশ কর্তৃত্ব নিরঙ্কুশ হয়নি। গত এক সপ্তাহ ধরে ওই এলাকায় হামলার অভিঘাত বাড়িয়েছে রুশ সেনা।

ইউক্রেনে সাত সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিক হামলা চালিয়ে প্রত্যাশিত সাফল্য পায়নি মস্কো। কিন্তু ইতিমধ্যেই শান্তি আলোচনায় নেটো জোটে যোগদান না করার বিষয়ে ভলোদিমির জেলেনস্কির সরকার নিমরাজি হয়েছে বলে পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমের খবর। এই ঘটনাকে পুতিনের সাফল্য বলেই মনে করছে নয়াদিল্লি।

তবে ইউক্রেন যুদ্ধ ভারতের কাছে এনেছে আশঙ্কার বার্তাও। সেখানে প্রতি দিন বাড়ছে রুশ বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতির তালিকা। এখনও পর্যন্ত যুদ্ধে প্রায় এক ডজন রুশ উচ্চ পদস্থ সেনাকর্তা নিহত হয়েছেন। রুশ আর্মাড ডিভিশনগুলির প্রায় ৫০০ ট্যাঙ্ক ধ্বংস হয়েছে। ঘায়েল হয়েছে বহু ইনফ্র্যান্ট্রি কমব্যাট ভেহিকল্‌ (সাঁজোয়া গাড়ি)-ও।

আর সেখানেই আশঙ্কা নয়াদিল্লি। ভারতীয় সেনার ৮০ শতাংশের বেশি ট্যাঙ্কই রাশিয়া থেকে আনা বা মস্কোর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তৈরি। পরিসংখ্যান বলছে রুশ টি-৯০ এবং তার ভারতীয় সংস্করণ ‘ভীষ্ম’ মিলিয়ে ২,০৭৮টি ট্যাঙ্ক রয়েছে সেনার। একই ভাবে রুশ টি-৭২ এবং তার ভারতীয় সংস্করণ ‘অজেয় মার্ক-২’-এর মিলিত সংখ্যা ২,৪১০। এ ছাড়া ভারতীয় সেনার মেকানাইজড্‌ ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটেলিয়নগুলির ব্যবহৃত রুশ বিএমপি-২ ‘ইনফ্র্যান্ট্রি কমব্যাট ভেহিকল্‌’-এর সংখ্যা ২,৫০০-র ও বেশি। ফলে সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ট্যাঙ্ক এবং সাঁজোয়া গাড়ি ব্যবহারের পদ্ধতি নিয়ে নতুন করে ভাবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন সেনাকর্তাদের একাংশ।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) সুব্রত বলে, ‘‘প্রাথমিক মূল্যায়নে আমাদের মনে হয়েছে, যুদ্ধের প্রথম পর্যায়ে পুতিনের পরিকল্পনা অনুযায়ী রুশ সেনার অগ্রগতির ধারা বজায় ছিল। কিন্তু পরবর্তী পর্যায়ে রুশ বাহিনীর মনোবল এবং অস্ত্র ও রসদ সরবরাহে ঘাটতি ধরা পড়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে আমরা যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ভারতীয় সেনার করণীয় সম্পর্কে ধারণা পেতে চাইছি।’’

বৈঠকে যোগ দেওয়া আর এক সেনা আধিকারিক বলেন, ‘‘যুদ্ধে প্রমাণ হয়েছে, রুশ ট্যাঙ্ক আমেরিকার জ্যাভলিন বা তুর্কির বায়রক্টার টিবি-২ ড্রোনের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ। রুশ বিমান হামলা প্রতিরোধে ইউক্রেন সেনার স্ট্রিংগার ক্ষেপণাস্ত্রও যথেষ্ঠ কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। তা ছাড়া, রুশ বিমানবাহিনী রাতের হামলার ক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।’’ প্রসঙ্গত, সুখোই-৩০, মিগ-২৯-সহ ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান-বহরের বড় অংশও রাশিয়া থেকে আমদানি করা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE