পথ দুর্ঘটনায় লাগাম পরাতে সড়ক দুর্ঘটনা আইনের বিধি প্রণয়ন। — ফাইল ছবি।
বাংলাদেশে সড়ক পরিবহণ আইন তৈরি হয়েছিল আগেই। সম্প্রতি তার বিধি প্রণয়নও (রুল ফ্রেমিং) শেষ হল। এই আইনে এখন থেকে বাংলাদেশের মধ্যে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে আর্থিক সহায়তা স্বরূপ ৫ লক্ষ বাংলাদেশি টাকা দেওয়া হবে। দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে গেলেও যদি স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সম্ভাবনা না থাকে, তাহলে আর্থিক সহায়তা পাওয়া যাবে ৩ লক্ষ টাকা। আহত কিন্তু স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে, এমন ক্ষেত্রে আর্থিক সাহায্যের পরিমাণ ১ লক্ষ টাকা। কিন্তু নয়া বিধি নিয়েই শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। বাংলাদেশের সংবাদপত্র ‘প্রথম আলো’য় প্রকাশিত হয়েছে এমনই খবর।
বাংলাদেশে সড়ক পরিবহণ আইনটি তৈরি হয় ২০১৮ সালে। চার বছর বাদে হল তার বিধি প্রণয়ন। বিধি প্রণয়নের অভাবে এত দিন ক্ষতিপূরণ-সহ বেশ কিছু বিষয়ের বাস্তব কার্যকারিতা ছিল না। এ বার সেই সমস্যার সুরাহা বলে মনে করা হচ্ছে। শুধু দুর্ঘটনায় মৃত বা আহতই নয়, নয়া বিধিতে পুরো পরিবহণ ব্যবস্থাটিকেই বাঁধা হয়েছে নতুন শৃঙ্খলে। আর্থিক দাবিদাওয়ার নিষ্পত্তি করবে ১২ সদস্যের একটি ট্রাস্টি বোর্ড। তার মাথায় থাকবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান। বিধি অনুযায়ী, আর্থিক সহায়তা পাওয়ার জন্য দুর্ঘটনা ঘটার সর্বোচ্চ ৩০ দিনের মধ্যে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করতে হবে। তার ১০ দিনের মধ্যে বোর্ড অনুসন্ধান কমিটি গঠন করবেন। সেই কমিটি ১০ দিনের মধ্যে আবেদনকারীর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হিসাব করে বোর্ডের কাছে রিপোর্ট জমা দেবে।
তবে নয়া বিধি নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। আর্থিক সহায়তার পরিমাণ এবং আইনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ওই প্রতিবেদনে ‘রোড সেফটি ফাউন্ডেশন’-এর নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণের বিষয়টি বিধির সবচেয়ে দুর্বল দিক। সেখানে দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবারের জন্য ৫ লক্ষ ধরা হয়েছে, তা বাস্তববর্জিত। যে প্রক্রিয়ায় এই ৫ লক্ষ টাকা আদায়ের কথা বলা আছে, তা-ও জটিল।’’ পাশাপাশি ট্রাস্টি বোর্ডের কোনও শাখা হবে কি না, বিধিতে তা স্পষ্ট নয়। তাই এক জেলার বাসিন্দা অন্য জেলায় দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে, তার ক্ষতিপূরণের বিষয়ের সুরাহা জটিল হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন সাইদুর।
বিআরটিএর চেয়ারম্যান নুর মহম্মদ মজুমদার। তিনি মনে করেন, নতুন বিধিমালা সাধারণ মানুষকে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্তত একটি পথের সন্ধান দিয়েছে। ‘প্রথম আলো’-কে তিনি বলেন, ‘‘এত দিন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কোনও অধিকার ছিল না। এই বিধি প্রণয়ন করে তা নিশ্চিত করা হয়েছে। জীবনের মূল্য অর্থ দিয়ে পূরণ করা যায় না। তবে যেখানে আগে কোনও ব্যবস্থা ছিল না, এখন তা হল। এটা একটি অর্জন। এখন এর সফল বাস্তবায়নে মানুষ সহায়তা পাবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy