রাজকুমার হ্যারি এবং তাঁর স্ত্রী মেগান। ফাইল চিত্র।
রাজকুমার হ্যারির উপস্থিতি নিয়ে কারও আপত্তি নেই, কিন্তু রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথ যখন মৃত্যুশয্যায়, তখন তাঁকে যেন হ্যারির স্ত্রী মেগান দেখতে না আসেন! একটি ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডে দাবি করা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, চার্লস তাঁর ছোট ছেলেকে এই কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন। সে দিনই স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্রাসাদে প্রয়াত হন রানি।
ঠাকুমা গুরুতর অসুস্থ, এই খবর হ্যারিকে জানিয়েছিলেন স্বয়ং চার্লস। রাজপরিবারের সঙ্গে সচেতন ভাবে দূরত্ব বাড়িয়ে সপরিবার হ্যারি এখন থাকেন আমেরিকায়। কিন্তু দিন কয়েক আগে ব্যক্তিগত কিছু অনুষ্ঠানে অংশ নিতে লন্ডনে আসেন তিনি। ছিলেন তাঁর নির্ধারিত রাজপরিবারের বাসভবন ফ্রগমোর কাসলে। হ্যারির ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার ইংল্যান্ড সফরকালে ঠাকুমার সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা ছিল না তাঁর। তবে বাবার ফোনে সব পরিকল্পনা পাল্টে যায়। চার্লস হ্যারিকে জানান, ঠাকুমাকে শেষ দেখা দেখতে হলে তিনি যেন অবিলম্বে বালমোরাল চলে আসেন। কিন্তু সঙ্গে যাতে মেগান না আসেন, সে বিষয়ে হ্যারিকে সতর্ক করে দেন তাঁর বাবা। ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডটিতে লেখা হয়েছে, ‘‘চার্লস হ্যারিকে বলেন, এই রকম দুঃখের সময়ে বালমোরাল প্রাসাদে মেগানকে আনা যথাযথ হবে না। কারণ হিসেবে চার্লস জানান, উইলিয়াম-পত্নী কেটও আসবেন না। একেবারে পরিবারের কাছের লোকজনকে ডাকা হয়েছে। বারবার করে বলে দেন, মেগান যেন না আসেন।’’
বৃহস্পতিবার বালমোরাল প্রাসাদে সবার শেষে পৌঁছন হ্যারি। তত ক্ষণে মারা গিয়েছেন রানি। রাতটা সেখানেই কাটান তিনি। আর শুক্রবার সবার আগে বেরিয়ে আসেন প্রাসাদ থেকে। এক সময়ে বড় ছেলের ঘরের ছোট নাতি হ্যারি ঠাকুমার খুবই আদরের ছিলেন। প্রকাশ্যে, দু’জনকে নানা মজার কাজকর্ম, হাসি, কৌতুক করতে দেখা গিয়েছে। যেমন ২০১৬ সালে একসঙ্গে একটি মজার ভিডিয়ো করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু শেষ কয়েক বছরে আর সেই ভাব-ভালবাসা নেই। অনুমান, রাজপরিবারের বিলাসবহুল, অভিজাত জীবনযাপন থেকে দূরে সন্তানদের বড় করতে চেয়েছেন হ্যারি-মেগান। বিবাহবিচ্ছিন্না, হ্যারির থেকে বেশ কয়েক বছরের বড়, অশ্বেতাঙ্গ হলিউড অভিনেত্রী মেগানকে রাজপরিবারের বধূ হিসেবে মানতেও আপত্তি করেছিলেন পরিবারের অনেকে।
হ্যারির সঙ্গে রাজপরিবার দূরত্বের ইঙ্গিত ফের মেলে সে দিন যখন লন্ডন থেকে স্কটল্যান্ডের অ্যাবারডিনমুখী রয়্যাল এয়ার ফোর্সের বিমানে তাঁর জায়গা হয়নি। ওই বিমানে স্কটল্যান্ডে পৌঁছন চার্লসের বড় ছেলে উইলিয়াম, রাজকুমার অ্যান্ড্রু, রাজকুমার এডওয়ার্ড ও তাঁর স্ত্রী সোফি। কিন্তু হ্যারিকে ওই বিমানে ওঠার অনুমতি দেওয়া হয়নি। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘোষণা করা হয়েছিল, স্ত্রী মেগানকে নিয়ে স্কটল্যান্ডে যাচ্ছেন হ্যারি। কিন্তু পরে জানানো হয়, হ্যারি একাই যাচ্ছেন। এই সব টালবাহানার পরে সন্ধে ৭টা ৫২ নাগাদ হ্যারি পৌঁছন বালমোরালে। সবার শেষ। তার প্রায় দেড় ঘণ্টা আগে বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে রানির মৃত্যুসংবাদ ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছিল। পরের দিন সকাল ৮টা ২০তেই ফেরার বিমান ধরতে অ্যাবারডিন বিমানবন্দরে পৌঁছে যান হ্যারি। চলে আসেন লন্ডনে।
হ্যারির একটি ভিডিয়ো ছড়িয়েছে ইন্টারনেটে। তাতে দেখা গিয়েছে, বিমানবন্দরের এক কর্মীর কাঁধে হাত রেখে রাখছেন তিনি। জানা গিয়েছে, ওই মহিলা এগিয়ে এসে রানির মৃত্যুর খবরে সমবেদনা জানান হ্যারিকে। তাঁর এই সহজ, সরল ব্যবহারের জন্যই তিনি ব্রিটেনবাসীর খুবই প্রিয়।
রাজপরিবার হ্যারিকে এ ভাবে দূরে সরিয়ে দেওয়ায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন ব্রিটেনের অনেকেই। ফিরতি বিমানের এক সহযাত্রী বলেছেন, ‘‘এ রকম সময়ে রাজবাড়ির কেউ ওঁর পাশে নেই। আমার আশা, রানির মৃত্যুর পরে অন্তত এই ভাঙন জুড়বে।’’
হ্যারি ও উইলিয়াম, দুই ভাই এখন উইনসরে রয়েছেন। শনিবার সন্ধেবেলা দু’জনকে সস্ত্রীক উইনসর প্রাসাদের সামনে দেখা যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy