সংগৃহীত ছবি
কানাডার একটি পরিত্যক্ত স্কুল থেকে উদ্ধার হল ২১৫টি জন শিশুর দেহাবশেষ। ব্রিটিশ কলম্বিয়ার কামলুপস ইন্ডিয়ান রেসিডেন্সিয়াল নামের ওই স্কুলটি ১৯৭৮ সালে বন্ধ হয়ে যায়। শুক্রবার কানাডার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশ হওয়ার পর দেশের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এই ঘটনাটিকে গভীর হৃদয়বিদারক বলে উল্লেখ করেছেন। জানা গেছে, দেহাবশেষগুলি রাডার বিশেষজ্ঞের সাহায্যে উদ্ধার করা হয়েছে। আরও জানা যাচ্ছে, মৃত শিশুদের মধ্যে অনেকেরই বয়স ৩ বছরের কম।
কানাডার কামলুপস এলাকাটিতে আদি আমেরিকানদের বিভিন্ন গোষ্ঠীর বাসিন্দাদের বাস। যে শিশুদের দেহাবশেষ উদ্ধার হয়েছে তারা সবাই সেখানকার টিকেমলুপস টে সেকওয়েপেমেক গোষ্ঠীভুক্ত ছিল বলে জানা গেছে। ওই গোষ্ঠীর বর্তমান প্রধান রোসান্নে ক্যাসিমির। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সম্প্রদায় এই ঘটনাটি সম্পর্কে জানত। আমরা কেবল তা যাচাই করতে সক্ষম হয়েছি। মৃতদের মধ্যে ৩ বছর বয়সি শিশুদেরও মৃতদেহ পাওয়া গেছে। আর এই ঘটনাটির কোথাও রেকর্ড নেই।’’
অষ্টাদশ শতকের শেষ থেকে উনবিংশ শতকের শুরুর দিকে কানাডায় দলে দলে ইউরোপীয়রা আসতে থাকে। তখন স্থানীয় গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে তাঁদের সঙ্ঘাত হয়েছিল। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে, আদি আমেরিকানদের খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত ও ‘সভ্য’ করে তুলতে উনিশ শতকের মাঝামাঝি থেকে কানাডা জুড়ে বিভিন্ন আবাসিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করা শুরু হয়। এক সময় কানাডায় ১৩৯টি এ রকম আবাসিক স্কুল ছিল। ক্যাথলিক খ্রিস্টান মিশনারিরা এই স্কুলগুলি চালাতেন।
অভিযোগ, প্রায় দে়ড় লক্ষাধিক শিশুকে জোর করে ভর্তি করা হয়েছিল আবাসিক স্কুলগুলিতে। শিশুদের ব্যাপক ভাবে শারীরিক ও যৌন নির্যাতন করা হত বলেও ২০১৫ সালের একটি তদন্তে উঠে আসে। তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়, ১৮৪০ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত অটওয়ার পক্ষে খ্রিস্টান গির্জা দ্বারা পরিচালিত স্কুলগুলিতে শিশুদের উপর ভয়াবহ শারীরিক নির্যাতন, ধর্ষণ, অপুষ্টি ও অন্যান্য অত্যাচারের রেকর্ড রয়েছে। আবাসিক স্কুলে পড়ার সময় কমপক্ষে ৪ হাজার ১০০ জন শিশু মারা গিয়েছিল। কামলুপস-র যে স্কুলটি থেকে এই দেহাবশেষগুলি উদ্ধার করা হয়েছে, সেটি ছিল ১৩৯টি আবাসিক স্কুলের মধ্যে সবচেয়ে বড়। তবে সেই স্কুলে এত সংখ্যক শিশুর মৃত্যুর বিষয়টি কোথাও নথিভুক্ত করা হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy