Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Kamala Harris

‘মার্কিন নাগরিক হিসেবেই গর্বিত’

আমেরিকার রাজনীতিতে ৫৫ বছর বয়সি কমলার স্পষ্টবক্তা হিসেবে খ্যাতি রয়েছে।

জো বাইডেনের সঙ্গে কমলা হ্যারিস। ফাইল চিত্র

জো বাইডেনের সঙ্গে কমলা হ্যারিস। ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২০ ০৭:৩৫
Share: Save:

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে গত ডিসেম্বরে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। সেই খবর পাওয়ার পরে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টুইট ছিল, ‘আপনাকে মিস করব’। পাল্টা টুইটে জবাব দিতে সময় নেননি ট্রাম্পের ওই কট্টর সমলোচক। লিখেছিলেন, ‘‘মিস্টার প্রেসিডেন্ট চিন্তা করবেন না। বিচারে আপনার সঙ্গে দেখা হবে।’’ তখন আমেরিকা তোলপাড় প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু হবে কিনা, তা নিয়ে। যাঁকে ‘মিস’ করার কথা ট্রাম্প বলেছিলেন তিনি ক্যালিফর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট সেনেটর ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিস।

আমেরিকার রাজনীতিতে ৫৫ বছর বয়সি কমলার স্পষ্টবক্তা হিসেবে খ্যাতি রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে এক হাত নিয়ে তিনি যেমন বলতে পারেন, ‘‘আমেরিকার মানুষের স্বপ্ন ও মূল্যবোধ ধ্বংস হতে চলেছে।’’ তেমনই ডেমোক্র্যাটদের এক বিতর্ক সভায় বর্তমানে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেনকে বর্ণবিদ্বেষ প্রসঙ্গে আক্রমণ করতে ছাড়েন না কমলা। কারণ তিনি এমনই! তাই হয়তো তিনি জোরের সঙ্গে বলতে পারেন, ‘‘আমি যা আমি তাই। আমি তাতেই স্বচ্ছন্দ।’’

আত্মজীবনী ‘দ্য ট্রুথস উই হোল্ড’-এ কমলা লিখেছিলেন, তাঁর জীবনে তাঁর মা একদা চেন্নাইবাসী শ্যামলা গোপালন বড় অনুপ্রেরণা। কমলা-জননী ছিলেন নাগরিক অধিকার রক্ষা আন্দোলনের কর্মী। গত শতকের ষাট-সত্তর দশক থেকেই শ্যামলা আফ্রো-মার্কিন সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত হতে শুরু করেন। বিয়ে করেন জামাইকার নাগরিক ডোনাল্ড হ্যারিসকে। কৃষ্ণাঙ্গ স্বামীর সঙ্গে প্রতিবাদ-আন্দোলনেও পা মিলিয়েছিলেন তিনি। পরবর্তী সময় বিবাহ বিচ্ছেদের পরে দুই মেয়ে মায়া ও কমলাকে নিয়ে আন্দোলনের স্লোগানে গলা মিলিয়েছেন। মেয়েদের ভারতের বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন শ্যামলা। ভারতীয় খাবার রান্না করে খাইয়েছেন, দেশীয় গয়নায় সাজিয়েছেন। শ্যামলার বাবা ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। কমলার মধ্যে দাদুর প্রভাব যথেষ্টই। ডেমোক্র্যাটদের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছিলেন, ‘‘মা জানতেন, তাঁর মেয়েদের আমেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবেই দেখা হবে। মা ঠিক করেছিলেন, মেয়েদের আত্মবিশ্বাসী গর্বিত কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক হিসেবেই বড় করে তুলবেন।’’ ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গেও পরিচয় ছিল কমলার, তবে মূল ভিত্তি ছিল আফ্রো-মার্কিন জীবনটাই।

ওকল্যান্ড শহরে জন্ম কমলার। ক্যালিফর্নিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি আইন নিয়ে পাশ করার পরে অ্যালামিডা কাউন্টি ডিস্ট্রিক্ট অফিসে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০০৩ সালে তিনি সান ফ্রান্সিসকোর অ্যাটর্নি হন। ২০১১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কমলা দু’দফায় ক্যানিফর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। তিনিই ক্যালিফর্নিয়ার প্রথম মহিলা ও কৃষ্ণাঙ্গ অ্যাটর্নি জেনারেল। সেখান থেকেই তিনি সেনেটর নির্বাচিত হন। ক্যালিফর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে একটি ঐতিহাসিক মামলা জিতেছিলেন কমলা। বড় বড় ব্যাঙ্কগুলি সেখানে প্রচুর বাড়ি বাজেয়াপ্ত করছিল। সেই প্রদেশের বাসিন্দাদের পক্ষ নেন তিনি। ব্যাঙ্কগুলির পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে জেতেন। বাসিন্দাদের পক্ষে ২ হাজার কোটি মার্কিন ডলার সেটেলমেন্ট করে নজির গড়েছিলেন।

বারাক ওবামার মতো কমলাকে শুনতে হয়েছে, ‘আপনি কালো, কিন্তু কৃষ্ণাঙ্গদের মতো কালো নন। আপনি মার্কিন নন, তাই ভোটে লড়ার অধিকার নেই।’’ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, ভোটে ফায়দা তুলতে তিনি নিজেকে আফ্রো-আমেরিকান প্রমাণের চেষ্টা চালাচ্ছেন। এ সব প্রচারে অবশ্য তেমন গুরুত্ব দেন না কমলা। আত্মপরিচয় নিয়ে প্রশ্ন করলে তাঁর স্পষ্ট জবাব, ‘‘আমি গর্বিত মার্কিন নাগরিক।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Kamala Harris Joe Biden USA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy