ব্যাগটি ইঁদুরের গায়ে নিওপ্রিন ভেস্টের মাধ্যমে লাগানো থাকবে। ছবি: সংগৃহীত
ভূমিকম্পের পর তৎপরতার সঙ্গে উদ্ধারকাজ চালানো কিছুটা মুশকিল হয়ে পড়ে। কোনও বহুতল ভেঙে পড়লে তার ধ্বংসস্তূপের তলায় আটকে থাকেন বহু মানুষ। সঠিক সময়ে উদ্ধার করা না হলে প্রাণও হারান অনেকে। এই সমস্যার সমাধান নিয়ে এসেছে বেলজিয়ামের একটি সংস্থা ‘আপোপো’। কী ভাবে ধ্বংসস্তূপের তলা থেকে তাড়াতাড়ি আটকদের উদ্ধার করা যায়, তার সমাধান করতে ইঁদুরদের বেছে নিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভূমিকম্পের পর যে পরিস্থিতি তৈরি হয়, তার কৃত্রিম আবহ তৈরি করে ইঁদুরদের প্রশিক্ষণও দিচ্ছেন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞরা। এর সঙ্গে হাত মিলিয়েছে প্রযুক্তিও। এইন্ডহোভেন ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির এক ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ইঁদুরদের জন্য একটি পিঠের ব্যাগ তৈরি করছেন। সেই ব্যাগে লাগানো থাকবে একটি ভিডিয়ো ক্যামেরা, মাইক্রোফোন এবং লোকেশন ট্রান্সমিটার। প্রাথমিক ভাবে এই ব্যাগটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘র্যাট প্যাক’। ওই ইঞ্জিনিয়ার জানান, এই ব্যাগটির প্রোটোটাইপ নিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে সফলও হয়েছেন তিনি। ধ্বংসস্তূপের তলায় যদি কেউ আটকে থাকে, তবে, ক্যামেরা এবং মাইক্রোফোনের মাধ্যমে সরাসরি অন্য প্রান্ত থেকে দেখা যাবে। কোন জায়গায় ব্যক্তিটি আটকে রয়েছেন, তার সঠিক জায়গাও অন্য প্রান্তে থাকা ল্যাপটপে ধরা পড়বে।
প্রাথমিক ভাবে সফল হলেও এখনও অনেক কাজ বাকি বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। আকার এবং ওজন আরও কম করতে হবে বলে তাঁদের মত। ব্যাগটি যত হালকা হবে, পিঠে সেই ব্যাগ নিয়ে ইঁদুরের চলাফেরা করতে তত সুবিধা হবে। ব্যাগটি ইঁদুরের গায়ে নিওপ্রিন ভেস্টের মাধ্যমে লাগানো থাকবে বলে জানান তিনি। সাধারণত, স্কুবা ডাইভ করার সময় এই নিওপ্রিন দিয়েই স্কুবা স্যুট তৈরি করা হয়।
মাটি খোঁড়ার সময় যন্ত্রের যেমন আওয়াজ হয়, সেই ধরনের কিছু আওয়াজ চালিয়ে ইঁদুরদের এই আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর পর আলাদা আলাদা স্তর তৈরি করে ইঁদুরদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাতে তাদের বহুতলে ওঠানামা করতে সুবিধা হয়। এই প্রশিক্ষণমূলক গবেষণার নেতৃত্বে রয়েছেন ডনা কিন। ডনা জানিয়েছেন, ইঁদুররা সব রকমের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে। স্বভাবে কৌতূহলীও তারা। ভূমিকম্পের পর ধ্বংসাবশেষের ভিতর পর্যন্ত প্রবেশ করতেও সক্ষম তারা। তাই উদ্ধারকাজের জন্য ইঁদুরই উপযুক্ত।
ডনা বলেন, ‘‘সপ্তাহে ৫ দিন টানা ১৫ মিনিট ধরে ইঁদুরগুলিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণের পর কখনও তাদের খাঁচার ভিতর আলাদা রাখা হয়। আবার কখনও সমলিঙ্গের ইঁদুরের সঙ্গে একই খাঁচায় রাখা হয়।’’ তিনি জানান, গবেষণাটি এখনও চলছে। একটি ইঁদুরের প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ করতে ৯ মাস থেকে ১ বছর সময় লাগে। তিনি আশাবাদী, আগামী এক বছরের মধ্যেই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি শেষ করা সম্ভব হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy