Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

রাইসিনা সংলাপে থাকবে তেহরানও

মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানের সামরিক কমান্ডার কাসেম সোলেমানির হত্যার পর এই প্রথম সে দেশের কোনও মন্ত্রী দেশের বাইরে পা রাখছেন।

ইরানের বিদেশমন্ত্রী জাভেদ জারিফ। ছবি: রয়টার্স

ইরানের বিদেশমন্ত্রী জাভেদ জারিফ। ছবি: রয়টার্স

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:২৩
Share: Save:

নতুন বছরে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘রাইসিনা সংলাপ’ এ বার বাড়তি এবং পৃথক কূটনৈতিক গুরুত্ব পেতে চলেছে। মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানের সামরিক কমান্ডার কাসেম সোলেমানির হত্যার পর এই প্রথম সে দেশের কোনও মন্ত্রী দেশের বাইরে পা রাখছেন। ইরানের বিদেশমন্ত্রী জাভেদ জারিফ সম্মেলনের অন্যতম বক্তা। স্বাভাবিক ভাবেই তিনি ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে যা বলবেন— তার উপর শুধু ভারত কিংবা ইরানই নয়, নজর থাকবে গোটা বিশ্বের।

১৩-১৪ জানুয়ারি, রাইসিনা সংলাপে অন্য আমন্ত্রিতদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়র আলম। ঢাকা সূত্র অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত তাঁর দিল্লি সফর চূড়ান্ত হয়নি। যদিও দেড় দু’মাস আগেই সাউথ ব্লকের পক্ষ থেকে চিঠি গিয়েছিল। ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রশ্নে গোটা বিষয়টি এই মুহূর্তে যথেষ্ট স্পর্শকাতর। নয়া নাগরিকত্ব বিল সংসদে পাশ হওয়ার পর ঢাকা যে ক্ষুব্ধ, তা গোপন না রেখে পর পর তিনটি মন্ত্রী এবং প্রতিনিধি পর্যায়ের ভারত সফরের কর্মসূচি বাতিল করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত বিলটি পাশ করানোর সময় বারবার বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানকে একই বন্ধনীতে রেখে বক্তৃতা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তা নিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক এবং সামাজিক পরিসরে যথেষ্ট ভারত বিরোধিতা তৈরি হয়েছে। তিন বার বাংলাদেশের মন্ত্রীদের ভারত সফর বাতিল করে সেই ক্ষোভকে কিছুটা হলেও প্রশমিত করতে পেরেছেন হাসিনা— এমনটাই দাবি করছে ঢাকার সূত্রটি।

এর পর বছরের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ফোন করে হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মার্চ মাসে শুরু হওয়া বঙ্গবন্ধু উৎসবের সাফল্য কামনা করেছেন। ওই সময়ে তাঁর ঢাকা যাওয়ার আমন্ত্রণও রয়েছে। সূত্রের খবর, হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে, গত এক দশকে সবচেয়ে বিশ্বস্ত প্রতিবেশী বাংলাদেশের ক্ষোভে কিছুটা জল ঢালতে এখন সক্রিয় হয়েছে নয়াদিল্লি। এই পরিস্থিতিতে শাহরিয়রকে নয়াদিল্লিতে পাঠিয়ে হাসিনা ভারতের প্রতি নরম বার্তা দিতে চাইবেন কি না —সেদিকেই তাকিয়ে কূটনৈতিক শিবির।

অন্য দিকে ইরান এবং আমেরিকার মধ্যে তৈরি হওয়া যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ভারত আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে, দু’পক্ষের মধ্যে ভারসাম্যের নীতি খোঁজার। দু’পক্ষের সঙ্গে কথাও চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে সাউথ ব্লকের পক্ষ থেকে। তবে ইরানের বিদেশমন্ত্রীর রাইসিনা সংলাপে আসার বিষয়টি দীর্ঘ দিন আগেই স্থির ছিল। এখন পরিস্থিতি জটিল হওয়ায় দিল্লিতে দাঁড়িয়ে জাভেদ জারিফ যদি আমেরিকাকে আক্রমণ করেন, তা প্রবল অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে ভারতের কাছে— এমনটাই মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক। তবে মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে যে ভারত ও ইরানের সম্পর্কে অন্য অনেক দিক রয়েছে। সেগুলি নিয়েই আলোচনা হওয়া দরকার। পশ্চিম এশিয়ায় ভারতের বাণিজ্যিক স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে ইরানের চাবাহার বন্দরকে ঘিরে। গত মাসেই ইরান সফরে গিয়ে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এ বিষয়ে বিশদে আলোচনা করেছেন। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করা নিয়েও কথা এগোনো যেতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Raisina Dialogue Iran M Javad Zarif
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy