মোনা লিসা।
দশ বছর প্যারিসে ছিলাম, বহু বার ল্যুভ মিউজ়িয়াম গিয়েছি। কিন্তু প্রথম বার ‘মোনা লিসা’ দেখার স্মৃতি এখনও অমলিন। বহু স্তরের সুরক্ষাবলয় পেরিয়ে, ‘ডেনন উইংয়ের’ মধ্যে দিয়ে ‘মোনা লিসা’র কাছে পৌঁছনোর অনেকগুলি পথ রয়েছে। এবং প্রতিটা পথই অনন্য সব শিল্প নির্দশনে সমৃদ্ধ। ‘দ্য উইঙ্গড ভিক্ট্রি অব স্যামোথ্রেস’ নামের মর্মর মূর্তি বা ফরাসি শিল্পী তেয়োদোর জেরিকো-র ‘দ্য র্যাফ্ট অব দ্য মেডুসা’ পেরিয়ে যখন পৃথিবীর সব থেকে চর্চিত শিল্পকর্মটির সামনে পৌঁছবেন, তখন বুলেটপ্রুফ কাচের আড়ালে থাকা ‘ছোট্ট’ ছবিটিতে রহস্যময়ীর অবিস্মরণীয় হাসি ও কাব্যিক সত্তা আপনাকে ক্ষণিকের জন্য স্তব্ধ করে দেবেই।
ল্যুভ কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, মোনা লিসাকে তার বর্তমান স্থান থেকে সরিয়ে একটি পৃথক, বিশেষভাবে নির্মিত কক্ষে রাখা হবে। কাল এই ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ। বছরে প্রায় ৯০ লক্ষ মানুষ ল্যুভে আসেন। প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থীর সমাগমের কারণে জাদুঘরের অন্য শিল্পকর্মের প্রতি মনোযোগ দেওয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যা এই সিদ্ধান্তের মূল কারণ বলে জানানো হয়েছে। অতিরিক্ত ভিড়ের ফলে জাদুঘরের অভ্যন্তরীণ পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে এবং শিল্পকর্ম সংরক্ষণে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। ল্যুভ কর্তৃপক্ষের মতে, এই স্থানান্তরের ফলে দর্শনার্থীদের অভিজ্ঞতা উন্নত হবে, পাশাপাশি অন্যান্য শিল্পকর্মও তাদের প্রাপ্য গুরুত্ব পাবে।
তবে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কও শুরু হয়েছে। সমালোচকদের মতে, মোনালিসা শুধু একটি চিত্রকর্ম নয়, এটি ল্যুভের প্রতীক এবং একে আলাদা কক্ষে সরানো এই জাদুঘরের ঐতিহ্যের পরিপন্থী। শিল্পবিশ্বের একাংশের মতে, এই পদক্ষেপ শিল্পের গভীর ঐতিহ্যকে গুরুত্ব না দিয়ে আধুনিকীকরণের নামে একটি কৃত্রিম অভিজ্ঞতা তৈরি করার চেষ্টা করছে। মোনা লিসা ইতিহাসের একটি অংশ, যার সাংস্কৃতিক গভীরতা এবং ঐতিহাসিক প্রসঙ্গ কখনওই হারিয়ে যাবে না। তাই অনেক শিল্পকর্মের ‘ভিড়েই’ তার স্থান হওয়া উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy