Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
Puja

অতিমারিতে ‘বাড়ি’র পুজো এ বার অন্তর্জালে

এ বছর ‘বাড়ির পুজো’র এগারো বছর। ‘প্যান্ডেমিক’-এর সময়ে নিউ ইয়র্কের প্রাদেশিক সরকারের প্রস্তাবিত নিয়ম অনুযায়ী, কোনও আবদ্ধ জায়গায় দশ জনের বেশি মানুষ একত্রিত হওয়া অনুচিত।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

দীপায়ন রুদ্র
পোহাং (দক্ষিণ কোরিয়া) শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২০ ০৬:১১
Share: Save:

২০২০-র দুর্গাপুজো আমার কাছে বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য, কারণ দক্ষিণ কোরিয়াতে বসবাস করেও নিউ ইয়র্কের রুজভেল্ট আইল্যান্ডের পুজোয় আংশগ্রহণ করব এ বছর। রুজভেল্ট আইল্যান্ডকে বলা হয় নিউ ইয়র্কের ‘বেস্ট কেপ্ট সিক্রেট’। শহরের অন্যতম বিশিষ্ট অঞ্চল ম্যানহাটনের অন্তর্ভুক্ত, কুইন্স আর ম্যানহাটনের মূল ভূ-খণ্ডের মাঝে ইস্ট রিভারের উপরে, সযত্নে গোপন করে রাখা স্বপ্নের মতোই ছোট্ট এক ফালি দ্বীপ।

নিউ ইয়র্কের একটি ক্যানসার ইনস্টিটিউটে পোস্ট ডক্টরেট করার সময়ে পাঁচটা বছর আমাদের ঠিকানা ছিল রুজভেল্ট আইল্যান্ডের পোস্ট ডক্টরাল হাউসিং। সেই সময়েই এক রবিবার কিছু বন্ধু মিলে হঠাৎ ঠিক করে ফেলা হয়েছিল, সবাই মিলে দুর্গাপুজো শুরু করব ম্যানহাটনে। কলকাতা থেকে আট হাজার মাইল দূরে ম্যানহাটনের এই একমাত্র সর্বজনীন পুজোর আমরা নাম রেখেছিলাম ‘বাড়ির পুজো’। ‘বাড়ি’ অর্থাৎ ‘বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন অব রুজভেল্ট আইল্যান্ড’।

‘র’ আর ‘ড়’-এর উচ্চারণের পার্থক্যের তোয়াক্কা না করে খুব স্বাভাবিক ভাবেই বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন অব রুজভেল্ট আইল্যান্ড হয়ে উঠেছিল আইল্যান্ডবাসী ভারতীয়দের কাছে দেশ থেকে দূরে এক প্রকৃত বাসস্থানের মতোই। কর্মসূত্রে তার পর ‘বাড়ির পুজো’র প্রাক্তন সংগঠকেরা এ-দিক ও-দিক ছিটকে গিয়েছি, ২০১৩ সালে আমরাও সপরিবার চলে এসেছি দক্ষিণ কোরিয়ায়, কিন্তু এত বছর পরেও ‘বাড়ি’-কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আমাদের বন্ধুত্বগুলোয় যেমন মরচে পড়েনি একটুও, তেমনই ‘বাড়ির পুজো’ও এখনও স্বমহিমায় ম্যানহাটনের একমাত্র সর্বজনীন দুর্গাপুজো হয়ে থেকে গিয়েছে বিগত দশ বছর।

এ বছর ‘বাড়ির পুজো’র এগারো বছর। ‘প্যান্ডেমিক’-এর সময়ে নিউ ইয়র্কের প্রাদেশিক সরকারের প্রস্তাবিত নিয়ম অনুযায়ী, কোনও আবদ্ধ জায়গায় দশ জনের বেশি মানুষ একত্রিত হওয়া অনুচিত। তাই দূরত্ব মেনে ‘বাড়ির পুজো’ এ বারে মূলত উপস্থাপিত হবে অনলাইন। জ়ুম আর ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে, ২৪-শে অক্টোবর আমাদেরই এক প্রিয় বান্ধবীর বাড়িতে।

মূল পুজোয় থাকবেন মোট সাত জন সংগঠক। আমাদের বান্ধবী নিজেই পুরোহিত। প্রবাসে পুজো যেমন হয়, তেমনই একবেলার মধ্যেই পুজোর সব আয়োজন সম্পন্ন হবে। অঞ্জলি, ভোগ, দধিকর্মা, সিঁদুর খেলা, বিসর্জন ও প্রসাদ বিতরণ। পৃষ্ঠপোষকদের অনুরোধ করা হয়েছে, সপরিবার একটি করে সেলফি তুলে পাঠানোর জন্য। পুজোর শেষে সেগুলো একসঙ্গে জুড়ে অভিনব এক গ্রুপফটো বানানো হবে। আর সব শেষে জ়ুমের মাধ্যমে হবে ছোট-বড় সবাই মিলে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

প্রিয় শহর ছেড়ে আসার সাত বছর পরে আবার অংশগ্রহণ করব ‘বাড়ির পুজো’র অনুষ্ঠানে। দক্ষিণ কোরিয়ায় বড় হয়ে ওঠা আমার ছেলেও অবশেষে রাজি হয়েছে একটি কোরিয়ান র্যাপ পরিবেশন করতে। ‘বাড়ির পুজো’র ব্যাপ্তি এ বছর প্রকৃত অর্থেই বিশ্বব্যাপী।

অন্য বিষয়গুলি:

Pandemic Coronavirus Puja Durga Puja Abroad
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy