আন্দোলনরত আমেরিকার পড়ুয়াদের সমর্থন জানিয়ে ইজ়রায়েল-বিরোধী আন্দোলনে নেমেছেন ইরাকি পড়ুয়ারাও। রবিবার। ছবি: রয়টার্স।
পণবন্দিদের মুক্তির বিনিময়েও হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ থামাতে রাজি নয় ইজ়রায়েল। তারা বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, হামাস-সহ গাজ়াকে ধূলিসাৎ না করা পর্যন্ত এই লড়াইয়ের শেষ নেই। ঘরেবাইরে বিক্ষোভ-আন্দোলনের মুখেও নিজেদের অবস্থানে অনড় বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার। রাগে ফুঁসছে তাঁর দেশের মানুষ। তেল আভিভের ডেমোক্র্যাসি স্কোয়ারের সামনে আজ জড়ো হন হাজার হাজার মানুষ। তাদের দাবি, হামাসের ডেরা থেকে ইজ়রায়েলি বন্দিদের মুক্তি চাই। সরকার বদল চাই।
গত এক সপ্তাহ ধরে নেতানিয়াহু-বিরোধী আন্দোলন চলছে আমেরিকাতেও। কলোম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্যালিফর্নিয়া ইউনিভার্সিটি, বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে আমেরিকা জুড়ে। হাজারো নিষেধাজ্ঞা, সেনার চোখরাঙানি উপেক্ষা করে আজও পথে নামেন হাজার হাজার পড়ুয়া। তাদের দাবি, প্যালেস্টাইনের মুক্তি চাই। আজ ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্যালেস্টাইনি-সমর্থকদের সঙ্গে হাতাহাতি বেধে যায় পুলিশের। ক্যাম্পাসে তাবু খাটিয়ে ধর্না দিচ্ছিলেন পড়ুয়ারা। তাদের উঠে যেতে বলে পুলিশ। কথা শোনেননি পড়ুয়ারা। ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। মাঝ-এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত আমেরিকায় দু’হাজারেরও বেশি প্যালেস্টাইনপন্থী বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ দিনও ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়েছে। অনেক ছাত্রছাত্রীর দাবি, লঙ্কার গুঁড়োও ছড়িয়েছে পুলিশ। এই ঘটনা প্রথম নয়। পড়ুয়াদের অনেকে তাই বিশেষ মুখোশ পরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ নিয়ে দায় এড়িয়ে গিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, গ্রেফতার হওয়া ২৫ জনের মধ্যে কত জন তাঁদের পড়ুয়া, সে বিষয়েও তাঁরা নিশ্চিত নন।
তেল আভিভের চিত্র ভিন্ন। ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইজ়রায়েলে হামাসের হামলার পরে ‘চেঞ্জ জেনারেশন’ নামে একটি সংস্থা তৈরি হয়েছে এ দেশে। তাদের নেতৃত্বে আজ পথে নেমেছিলেন বিক্ষোভকারীরা। দাবি, হামাসের ডেরা থেকে ইজ়রায়েলি বন্দিদের মুক্ত করে
আনতে হবে এবং নেতানিয়াহুকে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করতে হবে। পুলিশ তেল আভিভের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বেগিন স্ট্রিট ও কাপলান স্ট্রিটের কিছুটা অংশ বন্ধ করে দেয়। আয়ালন ফ্রিওয়ের বেরোনোর পথও আটকে দেয়। এতে রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হয়নি। তবে তাতে বিক্ষোভ আটকানো যায়নি। এ দিনের বিক্ষোভে হামাসের হাতে বন্দিদের পরিবারের
পাশাপাশি যুদ্ধে নানা ভাবে ক্ষতিগ্রস্তেরা উপস্থিত ছিলেন। যেমন, বার ও উরি হেফেৎজ়। গাজ়া স্ট্রিপের কাছে নিরিম এলাকায় বাবা-মেয়ের বাড়ি। ৭ অক্টোবরের পরে তাঁরা আর বাড়ি ফিরতে পারেননি। জনাথন শামরিজ়ের ভাই অ্যালোনকে ভুল করে হত্যা করেছিল ইজ়রায়েলি বাহিনী। তিনিও বিক্ষোভে অংশ নেন। হাজির ছিলেন সাপির কলেজের শিক্ষিকা রিভকা নেরিয়া বেন। গাজ়ার যুদ্ধে লড়তে গিয়ে গুরুতর জখম হয়েছেন রিভকার ভাই। সকলেরই দাবি, পণবন্দিদের ফিরিয়ে আনতে হবে। যুদ্ধ থামাতে হবে। নেতানিয়াহু সরকারকে উচ্ছেদ করতে হবে।
হামাস এ দিন জানিয়েছে, তারা কায়রোয় নতুন করে আলোচনায় বসছে। সমঝোতায় রাজি তারা, তবে প্যালেস্টাইনিদের স্বার্থের বিরুদ্ধে গিয়ে তারা কোনও প্রস্তাবে রাজি হবে না। বরং ইজ়রায়েল সরকারের মতিগতিই জটিল। সব বন্দিকে মুক্তি দিলেও তারা যুদ্ধ পাকাপাকি ভাবে বন্ধ করতে নারাজ। গাজ়া-ধ্বংসই মূল লক্ষ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy