Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Bangladesh Unrest

সেনা-সমর্থিত বা রাষ্ট্রপতি দ্বারা শাসিত সরকারকে সমর্থন নয়, স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন আন্দোলনকারীরা

সোমবার রাতে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে কোটা সংস্কার আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা নেওয়া ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। তারা জানিয়ে দেয়, সেনা-সমর্থিত বা রাষ্ট্রপতি শাসিত কোনও সরকারকে সমর্থন করা হবে না।

Representative Image

‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর সদস্যেরা। ছবি: সমাজমাধ্যম।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২৪ ০২:২৪
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। তার পরেই সোমবার বেলায় বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান সাংবাদিক সম্মেলনে দেশে অন্তর্বর্তী সরকার গড়ার কথা ঘোষণা করেন। সেনাপ্রধানের এই ঘোষণার পরে সোমবার রাতে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে কোটা সংস্কার আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা নেওয়া ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। তারা জানিয়ে দেয়, সেনা-সমর্থিত বা রাষ্ট্রপতি শাসিত কোনও সরকারকে সমর্থন করা হবে না। প্রস্তাবিত সরকার ছাড়া অন্য কোনও সরকারকে সমর্থন করা হবে না বলেও জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, সোমবার রাতে তেজগাঁওয়ের একটি বেসরকারি টেলিভিশন কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতন ঘটানো হল। কেবল ব্যক্তিকে সরালেই সমস্যার সমাধান হবে না, বরং যে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্য দিয়ে এ ধরনের ফ্যাসিবাদ তৈরি হয়, সেই কাঠামোরও বিলোপ করে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত আমাদের করতে হবে।”

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্তর্বর্তিকালীন জাতীয় সরকারের রূপরেখা দেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জানান নাহিদ। তিনি বলেন, “এই সরকার হবে অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-নাগরিকের প্রস্তাবিত। সেই জাতীয় সরকারে অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-নাগরিকদের অংশ থাকবে। নাগরিক সমাজ-সহ নানা পেশার মানুষ ও নানা পক্ষের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে তাঁদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আমরা একটা অন্তর্বর্তিকালীন জাতীয় সরকারের রূপরেখা এবং সেই সরকারে কারা থাকবেন, সেই নামগুলি ঘোষণা করব। অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-নাগরিক দ্বারা সমর্থিত বা প্রস্তাবিত সরকার ছাড়া আর কোনও ধরনের সরকারকে আমরা সমর্থন করব না। সেটা হতে পারে সেনা-সমর্থিত সরকার বা জরুরি অবস্থা দিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার হতে পারে— এ ধরনের কোনও সরকারকে বিপ্লবী ছাত্র-জনতা গ্রহণ করবে না।”

হিংসা রুখতেও বার্তা দিয়েছেন নাহিদ। তিনি বলেন, “দল, মত ও ধর্মনির্বিশেষে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। কোনও ধরনের সাম্প্রদায়িক উস্কানি, নাশকতা বা বিভাজনের চেষ্টা হলে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতাকে তা রুখে দিতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে এবং দেশের সম্পদ রক্ষা করতে হবে।”

গত কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশে সরকার বিরোধী আন্দোলন চলছিল। আন্দোলনকারীদের একটাই দাবি ছিল— হাসিনা সরকারের পদত্যাগ। রবিবার বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। পরিস্থিতি ক্রমে জটিল হচ্ছিল। সোমবার দুপুরে পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। এর পরে বাংলাদেশের বিশিষ্টজন এবং তিনটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন সেনাপ্রধান। জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের কথা ঘোষণা করেন। সেনাবাহিনীর উপর সকলকে ভরসা রাখার কথাও বলেন। সব ‘হত্যা’র বিচারের আশ্বাসও দিয়েছেন। সেনাপ্রধান জানান, সোমবারই তাঁরা সরকার গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে যাবেন। তার পরেই সোমবার সন্ধ্যায় এই দাবি জানাল ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bangladesh unrest Bangladesh Bangladesh Army
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE