সে সময় সেসিলের গর্ভে ছিল তাঁর চতুর্থ সন্তান। বিমান দুর্ঘটনার আগের মুহূর্তে একটি মৃত সন্তান প্রসব করেছিলেন সেসিল। দুর্ঘটনার পরে তাঁর পাশে উদ্ধার হয়েছিল সেই সদ্যোজাতর দেহও। এ ছাড়াও মৃত্যু হয়েছিল সেসিলের স্বামী এবং তাঁদের আরও দুই শিশুপুত্রের। তাঁর অন্ত্যেষ্টি এবং শোকযাত্রায় আত্মীয় পরিজন সকলে নাজিদের পোশাক পরেছিলেন। সেসিলের মেয়ে জোহান্না দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পেয়েছিল। কিন্তু দু’বছর পরে সেই শিশুও মারা যায় মেনিনজাইটিসে।
তাঁর পরিবারের নাজি-যোগ নিয়ে যুবরাজ ফিলিপ দীর্ঘ দিন প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। ছ’দশকের নীরবতা তিনি ভাঙেন ২০০৬ সালে। বলেন, এটা ঠিক যে আরও অসংখ্য জার্মানের মতো তাঁর পরিবারও প্রথমে হিটলারের মতবাদকে আকর্ষণীয় বলে মনে করেছিল। হিটলার যে জার্মানদের হৃত গৌরব ও ক্ষমতা উদ্ধারের জন্য বলেছিলেন, সেই লক্ষ্য তাঁদের ভাল লেগেছিল। এ কথা স্বীকার করেন ফিলিপ।
দিদিদের থেকে দূরে তো বটেই, যুবরাজ ফিলিপ আজীবন তাঁর মা অ্যালিসের সান্নিধ্যও পাননি। অ্যালিস ছিলেন জন্মগত ভাবে বধির। তবে তিনি কথা বলতে পারতেন। তাঁর জীবনের বড় অংশ কেটেছিল মানসিক রোগের চিকিৎসাকেন্দ্রে। সিগমন্ড ফ্রয়েড তাঁর চিকিৎসা করতেন। ফ্রয়েডের নির্দেশে রঞ্জনরশ্মির সাহায্যে অ্যালিসের ডিম্বাশয় নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়েছিল। যাতে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই তাঁর ঋতুস্রাব বন্ধ করা যায়। অ্যালিসের চিকিৎসার জন্য এই পদক্ষেপ প্রয়োজনীয় ছিল বলে মনে করেছিলেন ফ্রয়েড।
গ্রিস ও ডেনমার্কের যুবরাজ অ্যান্ড্রুর প্রেমে পাগল ছিলেন অ্যালিস। তাঁদের বিয়ে হয় ১৯০৩ সালে। তবে তাঁদের বিবাহিত জীবন কোনও দিনই সুখকর ছিল না। তাঁদের মধ্যে শেষ অবধি বিবাহবিচ্ছেদ না হলেও অ্যান্ড্রু তাঁর প্রেমিকার সঙ্গে থাকতেন ফ্রেঞ্চ রিভিয়েরায়। এই পারিবারিক পরিস্থিতিতে যুবরাজ ফিলিপের দিন কাটত বোর্ডিং স্কুলে এবং ছুটিতে আত্মীয়স্বজনের মধ্যে।
১৯৯৭ সালে যুবরানি ডায়ানা এবং তাঁর প্রেমিক ডোদি আলফায়েদের রহস্যমৃত্যুর পরে ডোদির বাবা মিশরীয় শিল্পপতি মহম্মদ আলফায়েদ অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন প্রিন্স পিলিপের দিকে। শিল্পপতির অভিযোগ ছিল, তাঁর ছেলে এবং ডায়ানাকে ‘হত্যা’ করা হয়েছে প্রিন্স ফিলিপের নির্দেশেই। তবে ব্রিটিশ রাজপরিবারের আরও অসংখ্য রহস্য মতো এই অভিযোগও রয়ে গিয়েছে পর্দার আড়ালেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy