প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হোয়াইট হাউসে স্বাগত জানাচ্ছেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন। বৃহস্পতিবার। রয়টার্স
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর লক্ষ্য সীমান্তে শক্তি বাড়িয়ে ঘরোয়া রাজনীতিতে নিজের বিক্রম বাড়ানো। অন্য দিকে আমেরিকা চায় প্রতিরক্ষা ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারতকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলে চিনের মোকাবিলায় ব্যবহার করতে। আজ মোদী ও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ বৈঠকে তা নিয়েই দেওয়া-নেওয়া হল।
মহাকাশ থেকে প্রতিরক্ষা, টেলিযোগাযোগ থেকে সেমিকন্ডাক্টর বা চিপ। নিরাপত্তা ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ক্ষেত্রে আজ সহযোগিতার এক নতুন সেতুই তৈরি করল ভারত ও আমেরিকা। এই বিস্তৃততর কূটনৈতিক সহযোগিতাকে চাঙ্গা রাখতে স্থির হয়েছে, বাড়ানো হবে দু’দেশের দূতাবাসের সংখ্যা। মোদীর রাজ্যের আমদাবাদে ও বেঙ্গালুরুতে আমেরিকা নতুন কনসুলেট খুলবে। ভারত কনসুলেট খুলবে সিয়াটলে, যেখানে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের সূত্রে বসবাস করেন বিপুল সংখ্যক প্রবাসী ভারতীয়।
যৌথ ভাবে যুদ্ধবিমানের অত্যাধুনিক এফ-৪১৪ জেট এঞ্জিন তৈরির জন্য আজ হিন্দুস্তান এরোনটিক্স লিমিডেট (হ্যাল)-এর সঙ্গে চুক্তিপত্র সই করল আমেরিকার সংস্থা জি ই এরোস্পেস। এ ছাড়াও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা হয়েছে দু’দেশের মধ্যে। তার অন্যতম হল যুদ্ধজাহাজ মেরামত সংক্রান্ত চুক্তি, যার জেরে ভারতীয় ডকে আমেরিকার নৌসেনার যুদ্ধজাহাজ মেরামত করবে ভারত। এতে আদানি গোষ্ঠীর মতো জাহাজ ও বন্দর ক্ষেত্রে যুক্ত সংস্থা লাভবান হতে পারে। এ ছাড়া আমেরিকার জেনারেল অ্যাটমিকসের তৈরি বহু আলোচিত ৩১টি হানাদার ড্রোন কেনার বিষয়ে চুক্তি হয়েছে। তাতে ভারতের খরচ পড়ছে ৩০০ কোটি ডলার। ভারতীয় সেমিকন্ডাক্টর মিশনের উদ্যোগে গুজরাতে মাইক্রন টেকনোলজির সেমিকন্ডাক্টরের কারখানা গড়ে তোলার লক্ষ্যে চুক্তি হয়েছে আজ। গাড়ি, কম্পিউটার, স্মার্টফোনের জন্য জরুরি সেমিকন্ডাক্টর বা চিপ তৈরির ক্ষেত্রে চিন ও তাইওয়ানের উপরে নির্ভরতা কমাতে এই কারখানায় ২৭৫ কোটি ডলার লগ্নি হবে। মাইক্রন লগ্নি করবে ৮০ কোটি ডলার। বাকিটা আসবে কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থসাহায্য থেকে। কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, আমেরিকার সঙ্গে হওয়া চুক্তিগুলির মাধ্যমে পাকিস্তান এবং চিন সীমান্তে ভারতের হাত কিছুটা শক্তিশালী হল। আমেরিকাও চায় চিনের বিরুদ্ধে কৌশলগত মোকাবিলায় ভারতের ওজন বাড়ুক। কূটনৈতিক মহল তাই মনে করছে, এতে লাভ উভয় পক্ষেরই।
চাঁদে ’২৫ সালের মধ্যে মানুষ পাঠানোর লক্ষ্যে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন ‘আর্টেমিস’ চুক্তির সঙ্গেও যুক্ত হয়েছে ভারত। এর প্রধান লক্ষ্য, প্রথম মহিলা এবং অশ্বেতাঙ্গ কাউকে চাঁদে পাঠানো। মহাকাশ অভিযানে ভারতের ভূমিকাকে আরও জোরদার করতে নাসা-ইসরো-র চুক্তি হয়েছে। এই দুই মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ২০২৪-এ যৌথ অভিযান করার জন্য একমত হয়েছে।
বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকে মোদী বলেন, “আজ ভারত ও আমেরিকার সম্পর্ক মহাকাশের উচ্চতা থেকে সমুদ্রের গভীরতা পর্যন্ত প্রসারিত। প্রাচীন সংস্কৃতি থেকে কৃত্রিম মেধা পর্যন্ত আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলছি। সবার নজর বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুই গণতন্ত্র ভারত এবং আমেরিকার উপর। তাদের কৌশলগত সম্পর্ক আজকের দ্রুত বদলে যাওয়া সময়ে মানবজাতির কল্যাণের জন্য প্রয়োজনীয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy