Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Peter Higgs

প্রয়াত ভরের রহস্যের সন্ধানী পিটার হিগস

৯৪ বছর বয়সে স্কটল্যান্ডের এডিনবরায় প্রয়াত হয়েছেন হিগস। প্রায় পাঁচ দশক ধরে পড়িয়েছেন এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

২০১৩ সালে নোবেল জয়ের পরে বিজ্ঞানী হিগস।

২০১৩ সালে নোবেল জয়ের পরে বিজ্ঞানী হিগস। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৪৩
Share: Save:

তিনি এই মহাবিশ্বের এক মহা-রহস্যের উত্তর খুঁজেছিলেন। তিনি বলেছিলেন এমন কোনও বিশেষ এক কণার কথা, যা পদার্থকে ভর জোগায়। সেই তত্ত্ব তাঁকে এনে দিয়েছিল পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল পুরস্কার।

কিন্তু তিনি, ব্রিটিশ পদার্থবিদ পিটার হিগস ঘোর বিরোধী ছিলেন কণাটিকে শুধুমাত্র তাঁর নামেই চিহ্নিত করা নিয়ে। কারণ, বিশ্বের আরও পাঁচ জন বিজ্ঞানী তাঁর মতোই খুঁজেছিলেন পদার্থের ভরের রহস্য। বিশেষ কোনও কণার কথা অবশ্য হিগসই প্রথম বলেছিলেন। আর তাঁর আপত্তি সত্ত্বেও সেই কণার বৈজ্ঞানিক নাম হয়ে গিয়েছিল হিগস-বোসন। এই ‘বোসন’-এ জুড়ে রয়েছে আচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বসুর নাম।

৯৪ বছর বয়সে গত কাল স্কটল্যান্ডের এডিনবরায় প্রয়াত হয়েছেন হিগস। প্রায় পাঁচ দশক ধরে পড়িয়েছেন এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ই এক বিবৃতিতে হিগসের প্রয়াণের খবর জানিয়ে বলেছে, সামান্য অসুস্থতার পরে নিজের বাড়িতেই মারা গিয়েছেন এই অসাধারণ শিক্ষক। কয়েক প্রজন্মের বিজ্ঞানীদের অনুপ্রেরণা তিনি। সংবাদমাধ্যম এবং জনসাধারণের কাছে এই সময়টুকুর জন্য ব্যক্তিপরিসরের আড়াল চেয়েছে হিগসের পরিবার।

এই ব্রহ্মাণ্ডে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হল ভর। কণার ভরই না থাকলে তা ছুটে বেড়াত আলোর বেগে। গ্রহ-নক্ষত্র থেকে শুরু করে গাছপালা, নদীনালা এমনকি মানুষও থাকত না। কিন্তু তা তো হল না। কোথা থেকে এল এই ভর? এরই উত্তর খুঁজতে খুঁজতে ১৯৬৪ সালে হিগস অনুমান করেছিলেন এমন এক কণার অস্তিত্ব, যা আসলে ভরের উৎস। ২০০৮ সালে জেনিভার কাছে ফ্রান্স ও সুইৎজ়ারল্যান্ডের সীমান্ত এলাকায় ইউরোপিয়ান অর্গানাইজ়েশন ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ (সার্ন) তাদের গবেষণাগারে চার বছর ধরে এই ধরনের কণারই খোঁজ চালায়। ২০১২ সালে তাদের লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডারে আলোর বেগে ধাবমান বিপরীতমুখী প্রোটন কণার সংঘর্ষ ঘটিয়ে পাওয়া যায় নতুন একটি কণার চিহ্ন।

হিগসের এই তত্ত্বকেই কুর্নিশ জানায় নোবেল কমিটি। ২০১৩ সালে হিগস এবং বেলজিয়ান পদার্থবিদ ফ্রঁসোয়া এনগ্লেয়ার্টকে তারা নোবেল পুরস্কার দেয়। রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমির কথায়, ব্রহ্মাণ্ডের মূল সূত্রটি হল এক বিশেষ ধরনের কণার অস্তিত্বের। সেই কণার উৎস একটি অদৃশ্য ক্ষেত্র। সেই ক্ষেত্রের সংস্পর্শেই তৈরি হয় কণার ভর। নোবেলজয়ী দুই বিজ্ঞানীর প্রস্তাবিত সূত্র এই প্রক্রিয়াকেই ব্যাখ্যা করে।

লাজুক, প্রচারবিমুখ ছিলেন হিগস। বিদায়ও নিলেন নিভৃতে। নোবেল জয়ের খবরটা পেয়ে চোখ মুছে শুধু বলেছিলেন, ‘‘কখনও কখনও জেনে ভাল লাগে যে আমি ঠিক ছিলাম।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Physicist Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy