চিত্র সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকি ফাইল চিত্র।
অত্যাচার করে তাঁকে খুন করেনি তালিবান। আফগান সেনা ও তালিবানের গুলির লড়াইয়ের মধ্যে পড়ে ভারতীয় চিত্র সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকির মৃত্যু হয়েছে বলে আজ ফের দাবি করল জঙ্গি সংগঠনটির এক মুখপাত্র। এ দিন এক সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তালিবান মুখপাত্র মহম্মদ সোহেল শাহিন বলে, ‘‘আপনারা এটা কখনওই বলতে পারেন না যে, দানিশকে আমাদের যোদ্ধারা খুন করেছে। আমরা সাংবাদিকদের এক বার না, বার বার করে বলেছি, আপনারা যখন আমাদের ডেরায় আসবেন, তার আগে দয়া করে আমাদের জানাবেন। আমরা আপনাদের নিরাপত্তা দেব।’’
দানিশকে হত্যার দায় প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছে তালিবান। কিন্তু এক আমেরিকান পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, দানিশ যে ভারতীয় সেই পরিচয় জানার পরে তাঁকে নির্মম ভাবে হত্যা করেছিল জঙ্গিরা। দানিশের দেহটি যে ভাবে ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় উদ্ধার হয়, তাতে মৃত্যুর পরেও অত্যাচারের স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি পত্রিকাটির। তালিবান মুখপাত্র সোহেলের বক্তব্য, আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে এসেছিল দানিশ। ফলে গোটা দলের মধ্যে কে সেনা, কে নিরাপত্তা রক্ষী, কে সাংবাদিক তা বোঝার কোনও উপায় ছিল না। দানিশ সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে মারা যান। তাই কার গুলিতে ওঁর মৃত্যু হয়েছে তা বলা যাবে না।’’ দানিশের মৃতদেহ ছিন্নভিন্ন করে দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমরা এই অভিযোগ আগেও ২-৩ বার খারিজ করেছি। এটা আমাদের নীতি না। হতে পারে সেনা আমাদের মানহানির জন্য এই রকম অভিযোগ তুলছে। কিন্তু মৃতদেহ বিকৃত করা ইসলামের আইন-বিরোধী।’’
আফগান সেনার একটি সূত্র দাবি করেছে, ভারতীয়দের শত্রু বলে মনে করে তালিবান। তাই পরিচয়পত্র থেকে পুলিৎজ়ারজয়ী ওই চিত্রসাংবাদিক যে ভারতীয়, তা জানার পরে অত্যাচার চালানোর নির্দেশ আসে। এই প্রসঙ্গে ওই জঙ্গি নেতার বক্তব্য, ‘‘আপনাদের সরকারকে প্রশ্ন করুন তারা তালিবানকে শত্রু মনে করে, না বন্ধু। যদি ভারত আমাদের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য আফগানিস্তানের মানুষকে বন্দুক-অস্ত্রশস্ত্রের জোগান দেয় তবে তা আমরা শত্রুতা হিসেবেই নেবো। আবার যদি ভারত সে দেশের শান্তি, উন্নয়নের জন্য কাজ করে তখন তা অবশ্যই শত্রুতা বলে ধরা হবে না। এই সিদ্ধান্ত ভারতকেই নিতে হবে।’’
প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি ‘খবর’ দিয়ে এলে এই পরিণতি হত না দানিশের? মহম্মদ সোহেলের জবাব, ‘‘সারা পৃথিবীর সাংবাদিকদের বলছি, তাঁরা যদি আমাদের ঘাঁটিতে এসে খবর নিতে চান, তাঁরা আসতে পারেন। তাঁরা আমাদের এলাকায় শাখা খুলে নিজেদের চোখেও প্রকৃত পরিস্থিতিটা দেখে যেতে পারেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy