গুলিতে আহত হওয়ার পরে ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: পিটিআই।
পেশাদার, পোড়খাওয়া চিত্র সাংবাদিক। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে মার্কিন প্রেসিডেন্টদের ভাষণ কভার করছেন। রবিবার পেনসেলভেনিয়ায় যখন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সভামঞ্চে গুলি চলে, তখনও সেখানে ছিলেন ডাগ মিলস। নিউ ইউর্ক টাইমসের চিত্র সাংবাদিক। ট্রাম্পের থেকে তাঁর ব্যবধান ছিল মাত্র কয়েক ফুটের। ক্যামেরা তাক করা প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর দিকে। খচাৎ… খচাৎ… ভিউ ফাইন্ডারে চোখ গুঁজে পর পর ছবি তুলে যাচ্ছিলেন। এরই মধ্যে মিলসের লেন্সবন্দি হয়ে যায় ছুটন্ত বুলেট।
১৯৮৩ সাল থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্টদের সভা, ভাষণ কভার করছেন ডাগ মিলস। যে বুলেট দিয়ে প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে হত্যার ছক কষা হয়েছিল, সেই বুলেট ক্যামেরায় বন্দি করেছেন তিনি। কিন্তু এই কীর্তি প্রথমটায় একেবারেই টের পাননি অভিজ্ঞ চিত্র সাংবাদিকও। পরে যখন ল্যাপটপে সেই ছবিগুলি বড় করে দেখেন, তখন মিলস বুঝতে পারেন গোটা বিষয়টি।
ট্রাম্পের মাথার ঠিক পিছন দিকে সরু, লম্বাটে গোছের সাদা একটি রেখা। মিলস জানাচ্ছেন, সেই সময় তাঁর ক্যামেরায় শাটার স্পিড ছিল ১/১৮০০। অর্থাৎ, এক সেকেন্ডের ১৮০০ ভাগের এক ভাগ সময়। তড়িৎগতিতে পর পর ছবি তুলে যাচ্ছিলেন মিলস। কিন্তু আগের ফ্রেম, বা পরের, কোথাও সেই রেখার চিহ্ন মাত্র নেই। ব্যস, ওই একটি ফ্রেমই। ট্রাম্পের ডান কান ছুঁয়ে পিছনের দিক দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিল বুলেট। ঠিক সেই সময়েই ধরা পড়ে ওই ছবি।
ট্রাম্পের উপর হামলার এই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করার অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে মিলস বলেন, “নিমেষের মধ্যে বিষয়টি ঘটে যায়। কিন্তু এখন পুরোটা যেন স্লো-মোশনে আমার চোখের সামনে ভাসছে। আমার আঙুল ছিল শাটারের উপর। হঠাৎ বিকট, কানফাটা শব্দ। আমি তখনও ছবিই তুলে যাচ্ছিলাম পর পর। ক্যামেরায় কী ছবি এসেছিল, আমি নিজেও জানতাম না। পরে যখন ল্যাপটপে ছবিগুলি ফেলি, তখন দেখি প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের মাথার পিছন দিকে একটি বুলেট উড়ে যাচ্ছে।”
এমন একটি ভয়ঙ্কর মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করতে পারা মিলস বলছেন, “আমি কোনওদিন ভাবতেই পারিনি, কোনও (প্রাক্তন) প্রেসি়ডেন্টকে হত্যার চেষ্টা সামনে থেকে দেখব। তা-ও আবার সেটার ছবি তুলব।” ক্যামেরার পিছনে চার দশকেরও বেশি সময় কাটানো ডাগ মিলসের কথায়, তিনি শুধু সঠিক সময়ে, সঠিক জায়গায় উপস্থিত ছিলেন। প্রতিটি মুহূর্তকে একেবারে সামনে থেকে দেখেছেন তিনি। কান ঘেঁষে গুলি চলে যাওয়া, মঞ্চের একেবারে কোণায় ট্রাম্পের চলে আসা… তার পর ট্রাম্পের সেই মুষ্ঠিবদ্ধ হাত উঁচিয়ে দেখানো, প্রতিটি মুহূর্ত মিলসের মনে ভীষণ ভাবে জীবন্ত। ১৯৮৩ সাল থেকে হোয়াইট হাউসের খবর কভার করলেও, এমন অভিজ্ঞতা সাক্ষী আগে কখনও হননি তিনি। তাঁর মতে, এ এক ভয়ঙ্কর ঘটনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy