ছবি: সংগৃহীত
তৃতীয় ধাপের অন্তর্বর্তী ট্রায়ালে ৯০ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে তাদের তৈরি করোনা টিকা। সোমবার এই খবর জানাল ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা ফাইজ়ার। ফলে কথা মতো ডিসেম্বরের মধ্যেই সেই টিকা বাজারে আনতে আর বিশেষ বাধা রইল না বলেই মত কর্তৃপক্ষের।
জার্মান সংস্থা বায়োএনটেক-এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে এমআরএনএ প্রযুক্তির সাহায্যে এই ভ্যাকসিন তৈরি করেছে আমেরিকার সংস্থা ফাইজ়ার। ট্রায়ালে যেটি ‘আশাতীত ফল’ দেখিয়েছি বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। ভ্যাকসিন রেগুলেটরদের অনেকের মতে, ৫০ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হলেই তাতে অনুমোদন দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছিল। এ ক্ষেত্রে তো তা ৯০%!
উচ্ছ্বাস চেপে রাখেননি সংস্থার চেয়ারম্যান অ্যালবার্টা বুর্লাও। তাঁর কথায়, ‘‘রোজ বাড়ছে সংক্রমণের হার। ভেঙে পড়ছে অর্থনৈতিক স্থিতি। অতিমারির চরম পর্যায় দাঁড়িয়ে আছি আমরা। এমন একটা সময়ে দাঁড়িয়ে আমাদের তৈরি ভ্যাকসিন নতুন একটা মাইল ফলক ছুঁল। এটা অবশ্যই বিজ্ঞান এবং মানবজাতির জন্য বিরাট সুখবর।’’ এই দফার ট্রায়ালে আমেরিকা, জার্মানি, ব্রাজ়িল, আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং তুরস্কে পরীক্ষা চালানো হয়। যাঁদের উপর পরীক্ষা চালানো হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কৃষ্ণাঙ্গ এবং অন্যান্য নানা সম্প্রদায়ের মানুষও।
ট্রায়ালের সম্পূর্ণ ডেটা জোগাড় করতে করতে নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ পেরিয়ে যাবে। অনুমোদন সংগ্রহ করতে তা রেগুলেটরদের কাছে পাঠানো হবে তার পর। যদি তাড়াতাড়ি লাইসেন্স প্রদান করা হয় তা হলে পরিকল্পনা মতোই বছর শেষের আগেই স্বাস্থ্যকর্মীদের উপরে এই টিকা প্রয়োগের কাজ শুরু করা যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ফাইজ়ারের মতে এ বছরের শেষে পাঁচ কোটি প্রতিষেধক উৎপাদন করে ফেলতে পারবে তারা। ২০২১ সালের শেষ পর্যন্ত তা ১৫০ কোটিতে পৌঁছে যাবে হয়তো। তবে করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা দিলেও কতদিন টিকাটির কার্যকারিতা থাকবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। বিভিন্ন বয়সের ক্ষেত্রেও তা কতটা উপযোগী হতে পারে, তা নিয়েও কোনও বিস্তারিত তথ্য মেলেনি সংস্থার তরফে। পাশাপাশি এখনও পর্যন্ত মাত্র ৯৪জন ভলেন্টিয়ারের উপর করা পরীক্ষার ফলাফলই সামনে এসেছে শুধু। পরে সম্পূর্ণ পরীক্ষার ফল পাওয়া গেলে এই চিত্রে বিস্তর বদলও ঘটে যেতে পারে বলছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
টিকার পাশাপাশি করোনা রোধে ওষুধ তৈরি নিয়েও এ দিন সুখবর দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আমেরিকার একদল গবেষকের দাবি, সার্স-কোভ-টু ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে যে দু’টি প্রোটিনকে কাজে লাগায়, তা দমন করতে সক্ষম এমন কার্যকর অ্যান্টি-ভাইরাল ফর্মুলা ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে নতুন দিশা দেখাবে। ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ নামক জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, শরীরের ভিতরে ‘হোস্ট সেলে’ প্রবেশের ক্ষেত্রে লাইসোমাল প্রোটেস ‘ক্যাথেপসিন এল’-কে কাজে লাগায় সার্স-কোভ-টু। আর সংক্রমিতের শরীরে সংখ্যাবৃদ্ধির ক্ষেত্রে সাহায্য নেয় ‘এমপ্রো’ নামে প্রোটেসের। এই ‘ড্রাগ ক্যান্ডিডেট’দের নিয়ে অ্যারিজ়োনা বিশ্ববিদ্যালয়-সহ একাধিক বিশেষজ্ঞ দল গবেষণা চালাচ্ছেন।
শত চেষ্টা করেও সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়া থেকে রক্ষা করা যায়নি ইউরোপকে। এই পরিস্থিতিতে শুধু কার্ফু নয়, ফের লকডাউন ছাড়া করোনার গতি রোধের আর কোনও উপায় দেখছে না বহু ইউরোপীয় দেশ। হাঙ্গারিতে যেমন মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে লকডাউন ঘোষণা করতে চলেছে সে দেশের সরকার। অপেক্ষা পার্লামেন্টের সবুজ সঙ্কেতের। অন্য দিকে সরকারের কাছে ফের লকডাউন ঘোষণার আর্জি জানিয়েছেন ইটালির চিকিৎসকেরাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy