আরিয়ানা সইদ ও আনারকলি কৌর হোনারয়ার
আফগানিস্তানে নারীর ক্ষমতায়নের মুখ ছিলেন দু’জনেই। এক জন পপ গায়িকা আরিয়ানা সইদ। অন্য জন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনপ্রতিনিধি তথা আফগান পার্লামেন্টের সদস্য আনারকলি কৌর হোনারয়ার। তালিবান-আতঙ্কে দেশছাড়া দু’জনেই। ‘বন্ধু’ দেশ ভারতের কাছে সাহায্য চাইলেন তাঁরা।
গত কালই ইনস্টাগ্রামে ছবি পোস্ট করে আরিয়ানা জানিয়েছিলেন, নিরাপদে কাবুল ছেড়েছেন। কাতারের দোহা হয়ে গন্তব্য ইস্তানবুল। সংবাদমাধ্যমের আজ কাছে জানালেন, তালিবানের মতো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের বাড়বাড়ন্তের অন্যতম কারণ পাকিস্তান। তিনি বলেন, ‘‘হ্যাঁ, পাকিস্তানের নিন্দা করছি। এত বছর ধরে আমরা অনেক ভিডিয়ো দেখেছি, অনেক প্রমাণ পেয়েছি, যা থেকে স্পষ্ট, তালিবানের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী পাকিস্তান। আমাদের সরকার যখনই কোনও তালিব জঙ্গিকে ধরেছে, দেখা গিয়েছে সে পাকিস্তানি।’’ আরিয়ানার অভিযোগ, তালিবানকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে পাকিস্তান। তাঁর কথায়, ‘‘ওদের (তালিবানকে) নির্দেশ দিচ্ছে পাকিস্তান। ওদের ঘাঁটি পাকিস্তানে। সেখানেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আমি আশা করি, এর পরে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি পাকিস্তানকে অর্থ-সাহায্য দেওয়া বন্ধ করবে। যাতে পাকিস্তান সেই অর্থ সাহায্য হিসেবে তালিবানকে দিতে না-পারে।’’ পাকিস্তানের উপরে চাপ বাড়ানোর জন্যেও আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোকে আবেদন জানিয়েছেন আরিয়ানা। তাঁর বিশ্বাস, আফগানিস্তানের এই পরিস্থিতির অন্যতম কারণ পাকিস্তান।
আফগানিস্তানে মেয়েদের গান গাওয়া খারাপ চোখে দেখা হতো। ২০১৫ সালে এমন তিন-তিনটে নিষেধাজ্ঞা ভেঙেছিলেন আরিয়ানা। এক, স্টেডিয়ামে ঢুকেছিলেন, দুই, সেখানে গান গেয়েছিলেন এবং তিন, হিজাব পরেননি। এর কোনও কিছুই ভাল ভাবে নেয়নি কট্টরপন্থীরা। ফলে দেশে ফের তালিবান ক্ষমতায় আসতেই প্রাণভয়ে ছিলেন আরিয়ানা। আজ পাকিস্তানকে দোষারোপের পরে ভারতকে ‘সত্যিকারের বন্ধু’ বলে বর্ণনা করেছেন এই আফগান গায়িকা। তিনি বলেন, ‘‘ভারত সব সময় আমাদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেছে। সত্যিকারের বন্ধু ওরা। আমাদের সাহায্য করেছে, আমাদের দেশের মানুষের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেছে, এমনকি শরণার্থীদের সঙ্গেও। যাঁরাই আফগানিস্তান থেকে ভারতে গিয়েছেন, ফিরে এসে তাঁদের সুন্দর অভিজ্ঞতার কথাই বলেছেন।’’
দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন প্রাক্তন আফগান সাংসদ আনারকলি। আফগান শিখ ও হিন্দুদের উদ্ধারের জন্য ভারত সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তিনি। এক জনপ্রতিনিধি হয়েও কেন আফগানিস্তান ছেড়েছেন তিনি? সাংবাদিক বৈঠকে আজ এই প্রশ্ন ধেয়ে যায় তাঁর দিকে। আনারকলি বলেন, ‘‘সারা বিশ্ব জানে, কী ঘটছে আফগানিস্তানে। সেখানকার পরিস্থিতি খুব দ্রুত বদলে গিয়েছে। যা আশা করা যায়নি। সকলে অসহায়। দেশ আমাদের মা। তাকে ছেড়েই আসতে হয়েছে। কোনও উপায় ছিল না।’’
তিনি পালিয়ে আসতে পারলেও আফগানিস্তানে বহু শিখ পরিবার খুব অসহায় অবস্থায় রয়েছে। গুরুদ্বারে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। এঁদের নিয়ে ভয়ে আনারকলি। বলেন, ‘‘তালিবান যা বলে আর যা করে, তার মধ্যে অনেক ফারাক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy