ছবি: এএফপি।
পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে সংঘাতে প্রথমে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে না বলে জানিয়ে দিলেন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার আবহে পরমাণু অস্ত্র নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে সুর চড়িয়েছে দু’দেশই। ভারতের প্রথমে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার না করার নীতিতে বদলের ইঙ্গিত দিয়ে শোরগোল ফেলেছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। শনিবার পাক রেলমন্ত্রী শেখ রশিদ বলেন, ‘‘পাকিস্তানের হাতে ১২৫-২৫০ গ্রাম ওজনের পরমাণু অস্ত্র আছে। তা দিয়ে একটি নির্দিষ্ট এলাকা ধ্বংস করা যায়।’’ আজ আবার ইসলামাবাদে গিয়ে পাক বায়ুসেনার সদর দফতরে গিয়ে ভারতের ‘বিনা প্ররোচনায় হামলা’র জবাব দেওয়ার জন্য তাদের প্রশংসা করেন ইমরান।
কিন্তু এর পরে লাহৌরে গভর্নরের বাসভবনে শিখেদের এক জমায়েতে ইমরান বলেন, ‘‘পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করবে না। সংঘাতে পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে প্রথমে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে না।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমি ভারতকে বলতে চাই যুদ্ধ কোনও সমাধান নয়। যুদ্ধে বিজয়ীও শেষ পর্যন্ত হেরে যায়। যুদ্ধ থেকে অনেক সমস্যা জন্ম নেয়।’’ পাকিস্তান প্রথমে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার না করার নীতি গ্রহণ করেনি। ফলে ইমরানের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন কূটনীতিকেরা।
এরই মধ্যে কাশ্মীর নিয়ে কূটনীতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) পাশে পেয়েছে ভারত। সম্প্রতি ব্রাসেলসে ইইউ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তার পরে এক বিবৃতিতে ইইউ বলেছে, ‘‘এই সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান হওয়াটাই বাঞ্ছনীয়। তবে তা ভারত এবং পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই হওয়া সম্ভব।’’
আজ ভারতে নিযুক্ত প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রদূত টিম রোমারও কাশ্মীরের পরিস্থিতির জন্য ইমরানকেই দোষারোপ করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ঢুকে অহেতুক জলঘোলা করছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করছেন উপত্যকায়।
প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে ২০০৯ থেকে ২০১১ পর্যন্ত ভারতে রাষ্ট্রদূত ছিলেন রোমার। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতিতে তাঁর বিশেষ অবদান ছিল বলে মনে করা হয়। বর্তমান মার্কিন প্রশাসনকেও কার্যত ভারতের পাশে দাঁড়ানোর আর্জিই জানিয়েছেন রোমার।
গোড়ায় মধ্যস্থতার ইচ্ছাপ্রকাশ করলেও কাশ্মীর নিয়ে সম্প্রতি পিছু হটেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানিয়ে দিয়েছেন, ঝামেলা মেটাতে হবে ভারত ও পাকিস্তানকেই। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে বিতর্ক তৈরি করেছেন মার্কিন সেনেটর তথা ডেমোক্র্যাট শিবিরের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বার্নি স্যান্ডার্স। সম্প্রতি এক মুসলিম সমাবেশে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কাশ্মীরে যা চলছে, তা নিয়ে আমি চরম উদ্বিগ্ন। ভারতের কার্যকলাপ একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।’’ এ নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের মুখ খোলা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
স্যান্ডার্সকেও আড়াল থেকে পাকিস্তানই উস্কানি দিচ্ছে বলে আজ মন্তব্য করেছেন মার্কিন সেনার অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল লরেন্স সেলিন। তাঁর দাবি, কাশ্মীরের ‘ক’-ও জানেন না স্যান্ডার্স। তিনি নিজের পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত প্রচার ম্যানেজার ফৈয়াজ শাকিরের দ্বারা প্রভাবিত হয়েই এমন মন্তব্য করেছেন, মত সেলিনের।
গত কাল ‘উন্মাদ নেতা’ বলে সেলিন একহাত নেন ইমরানকেও। তবে প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রদূত রোমার আজ যে ভাবে সরাসরি বিঁধেছেন পাক প্রধানমন্ত্রীকে, তা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন অনেকে। মার্কিন সংবাদপত্রে ইমরানের ভারত-বিরোধী নিবন্ধ ট্যাগ করেই রোমার টুইট করেন, ‘‘কাশ্মীরের পরিস্থিতির কথা বলতে গিয়ে অযথা বাড়াবাড়ি করছেন ইমরান। উপত্যকায় অবিশ্বাস আর সন্দেহের বাতাবরণ তৈরি করছেন। নাগাড়ে ব্যক্তিগত আক্রমণ করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। এই অবস্থায় আমেরিকার উচিত ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানকে চাপ দিয়ে সমাধানসূত্র বার করা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy