পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান— ফাইল চিত্র।
ধর্ষকের ‘উপযুক্ত সাজা’র নিদান দিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তাঁর মতে, ধর্ষণের মামলার অপরাধীর প্রকাশ্যে ফাঁসি অথবা নপুংসক করে দেওয়ার মতো ‘দৃষ্টান্তমূলক’ শাস্তিই প্রাপ্য।
যদিও ইমরানের পরামর্শদাতারা তাঁকে বলেছেন, এমন ‘অমানবিক’ সাজার বন্দোবস্ত করলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কোপে পড়তে পারে পাকিস্তান। বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ‘সাধারণ সুবিধাপ্রাপ্ত দেশ’-এর মর্যাদা হারালে তার নেতিবাচক প্রভাপ পড়বে দেশের অর্থনীতিতে। তাই মন চাইলেও এমন শাস্তির বন্দোবস্ত করতে অপারগ পাক প্রধানমন্ত্রী।
গত সপ্তাহে লাহৌরের কাছে হাইওয়ের উপর দুষ্কৃতীরা পিস্তল উঁচিয়ে গাড়ি থামাতে বাধ্য করে মা ও মেয়েকে। এরপর তাঁদের দু’জনকেই ধর্ষণ করা হয়। ওই গণধর্ষণের ঘটনা ইতিমধ্যেই শোরগোল ফেলেছে পাকিস্তান জুড়ে। সোমবার পাকিস্তানের একটি টিভি চ্যানেলকে ইমরান খান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমার মতে ধর্ষকদের প্রকাশ্যে ফাঁসির সাজা দেওয়া উচিত। কিন্তু আমার পরামর্শদাতারা বলেছেন, এমন আইন হলে ইইউ-র সঙ্গে বাণিজ্যে অসুবিধার মুখে পড়তে হতে পারে।’’
২০১৪ সালে ইইউ ‘জেনেরালাইজড সিস্টেমস অফ প্রেফারেন্সেস’ (জিএসপি) নীতি মেনে পাকিস্তানকে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ‘সাধারণ সুবিধাপ্রাপ্ত দেশ’-এর মর্যাদা দেয়। কিন্তু এই মর্যাদার সঙ্গে ইইউ-র তরফে মানবাধিকার পরিস্থিতি সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণের ‘শর্ত’ রয়েছে। প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের মতো সাজা মানবাধিকার লঙ্ঘন বলেই মনে করে ইইউ।
আরও পড়ুন: ‘আপনি গুণে দেখেননি, তাই বলছেন কারও মৃত্যু হয়নি’, পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে মোদীকে খোঁচা রাহুলের
ধর্ষকের বিকল্প শাস্তি হিসেবে রাসায়নিক প্রয়োগ করে চিরতরে নপুংসক করে দেওয়া যেতে পারে বলেও মনে করেন পাক ক্রিকেটার-রাজনীতিক। তাঁর মতে, পাক ফৌজদারি দণ্ডবিধিতে যেমন খুনের ক্ষেত্রে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ‘ডিগ্রি’ চিহ্নিত করে পৃথক সাজার ব্যবস্থা আছে ধর্ষণের ক্ষেত্রেও তেমন হওয়া উচিত। ইমরানের কথায়, ‘‘প্রথম ডিগ্রির ধর্ষণের ক্ষেত্রে অপরাধীকে রাসায়নিক প্রয়োগ করে নপুংসক করা প্রয়োজন। এর ফলে ভবিষ্যতে সে আর কখনও এমন অপরাধ করতে পারবে না।’’
প্রসঙ্গত, গত বছর আমেরিকার আলবামা প্রাদেশিক আইনসভায় পাশ হওয়া বিলে বলা হয়েছে, নাবালিকা (১৩ বছরের কম বয়সি) ধর্ষণের ক্ষেত্রে দোষীকে রাসায়নিক প্রয়োগে নপুংসক করে দেওয়ার সাজা হতে পারে।
আরও পড়ুন: আমপানের পরে আড়াই কোটি ম্যানগ্রোভ লাগানো হয়েছে সুন্দরবনে
গত ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের জাতীয় আইনসভা বিষয়ক মন্ত্রী আলি মহম্মদ খান নাবালিকা ধর্ষণের আপরাধীর প্রকাশ্যে ফাঁসির সাজার জন্য একটি প্রস্তাব এনেছিলেন। পার্লামেন্টের অধিকাংশ সদস্য এ বিষয়ে সরকারি বিল পেশ হলে সমর্থনের কথাও জানান। কিন্তু পাক মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রী শিরিন মঝহারি কিছু প্রশ্ন তোলার পরে ইমরান সরকার বিষয়টি নিয়ে আর এগোয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy