ঘোষিত উদ্দেশ্য ছিল, বেজিংয়ের শীতকালীন অলিম্পিক্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির হওয়া। আদতে যা হয়ে উঠল, আর্থিক সহায়তা চেয়ে চিনের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক নেতৃত্বের কাছে লাগাতার দরবার। ইসলামাবাদের চলতি চরম অর্থনৈতিক সঙ্কট সামাল দিতে সপার্ষদ ইমরান খান বৈঠক করেছেন চিনের প্রধানমন্ত্রী লি খ্যছিয়াং-সহ রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক নেতৃত্বের সঙ্গে। সূত্রের খবর, আগামী দিনে পাকিস্তানের মাটি চিনের জন্য আরও খুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইমরান।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, ‘চিনের বাণিজ্যিক সংস্থাগুলোর আগ্রহ দেখে পাকিস্তানের সঙ্গে চিনের ব্যবসায়িক যোগাযোগ আরও দৃঢ় করার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন উপস্থিত দুই দেশের নেতৃত্ব। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বিশেষ করে চিনের বাণিজ্যিক সংস্থাগুলিকে পাকিস্তানের বিশেষ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিনিয়োগে আকর্ষণীয় সুযোগ সুবিধা দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন।’ সূত্রের খবর, চিনের কাছ থেকে বড় অঙ্কের ঋণ চুক্তিও সমাধা হয়েছে ইমরানের এ বারের সফরে।
Prime Minister @ImranKhanPTI Concludes Meetings with the Senior Leadership of Chinese State-Owned and Private Companies#PMIKinChina#Beijing2022 pic.twitter.com/JRqHh7Kyhn
— Prime Minister's Office, Pakistan (@PakPMO) February 5, 2022
বেজিংয়ে শীতকালীন অলিম্পিক্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির হতে চার দিনের চিন সফরে গিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সেই সঙ্গে তাঁর চিনের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দলের সঙ্গেও সাক্ষাতের কথা ছিল। সেই অনুযায়ী সপার্ষদ ইমরান বৈঠক করেন চিনের প্রধানমন্ত্রী-সহ বাণিজ্যিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে। সেখানে মুখ্য আলোচ্য বিষয় ছিল ‘চায়না-পাকিস্তান ইকনমিক করিডোর (সিপিইসি)’-এর দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু করা। বিতর্কিত এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায় গিয়েছে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের মধ্যে দিয়ে।
কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পাক কোষাগারের হাড়ির হাল। এই পরিস্থিতিতে বেজিংয়ের কাছে সহায়তা প্রার্থনা করা ছাড়া বিশেষ উপায়ও নেই ইসলামাবাদের। কারণ বহির্বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশ পাকিস্তানে বিনিয়োগে রাজি নয়। এই পরিস্থিতিতে অবস্থা সামাল দিতে বাধ্য হয়ে বেজিংয়ের দ্বারস্থ হলেন ইমরান, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। যদিও পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এ ভাবে এক তরফা ভাবে চিনের কাছে সহায়তা প্রত্যাশাকে ‘ইমরানের আত্মসমর্পণ’ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা চলছে। ফলে ঘরে-বাইরে চাপ ক্রমশ বাড়ছে বিশ্বকাপজয়ী পাক প্রধানমন্ত্রীর।